ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের আগে বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে সংঘর্ষের জেরে অবরুদ্ধ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করেছেন দলটির নেতারা।
চার দিন পর রোববার দুপুর সোয়া একটার দিকে বিএনপি কার্যালয়ের গেট খুলে দেয় পুলিশ।
কার্যালয় খোলার পর একে একে ভেতরে প্রবেশ করেন বিএনপির সাংগঠনিক ও ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ ইমরান সালেহ প্রিন্স, সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, নির্বাহী সদস্য সাত্তার পাটোয়ারীসহ নেতা-কর্মীরা।
তারা পুরো কার্যালয় ঘুরে দেখেন। কেউ কেউ গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র খোঁজেন।
বিএনপি নেতা-কর্মীরা কার্যালয়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা জিনিসপত্র ও আসবাবপত্র ঠিক করার চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা আবদুস সাত্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দপ্তরের চারটি মনিটর এবং জরুরি কাগজপত্র পুলিশ নিয়ে গেছে। অনেক খুঁজলাম; পেলাম না। সারা দেশে দলীয় কর্মীদের যে বায়োডাটা ছিল, সেটিও পুলিশ নিয়ে গেছে।
‘অফিসে কিছু টাকা-পয়সা ছিল। তা পুলিশ নিয়ে গেছে।’
দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ নথিসহ দুটি ল্যাপটপও পুলিশ নিয়ে গেছে বলে দাবি করেন তিনি।
আবদুস সাত্তার আরও বলেন, ‘বিএনপি কার্যালয়ে যে সিসি ক্যামেরা ছিল, পুলিশ সব খুলে নিয়ে গেছে। আর পুরো অফিস লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে গেছেন। এটা তো দেখতেই পাচ্ছেন।’
এর আগে বেলা ১১টার পর নয়াপল্টনের দুই পাশের রাস্তার ব্যারিকেড তুলে নেয় পুলিশ, যাতে শুরু হয় যান চলাচল।
দলীয় কার্যালয় খুলে দেয়ার সংবাদে সকাল থেকেই নয়াপল্টনে ভিড় জমান নেতা-কর্মীরা।
সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিএনপির কর্মীরা নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় অফিসে আসতে পারবেন। পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো বাধা নেই। তাদের সহযোগিতা করা হবে।
শনিবার বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশকে সামনে রেখে বুধবার সকাল থেকে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ও সংলগ্ন এলাকায় জড়ো হচ্ছিলেন দলটির নেতা-কর্মীরা, যাদের কাছাকাছি ছিলেন পুলিশের বিপুলসংখ্যক সদস্য।
পুলিশ সড়কে সমবেত বিএনপি নেতা-কর্মীদের সরিয়ে দিতে গেলে বিকেলে দু্ই পক্ষে সংঘর্ষ বাধে, এতে মকবুল হোসেন নামের একজন প্রাণ হারান। তাকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করেছে বিএনপি।
নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয় ঘিরে বুধবার পুলিশের অ্যাকশন। ছবি: নিউজবাংলা
সংঘর্ষের পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তল্লাশি চালিয়ে দলটির অনেক নেতা-কর্মীকে আটক করে পুলিশ। সেখান থেকে চাল, খিচুড়ি, ১৫টি ককটেলের পাশাপাশি বোতলজাত পানি ও টাকা উদ্ধারের কথা জানায় বাহিনীটি।
পুলিশ শুরুতে নয়াপল্টন এলাকা থেকে বিএনপির ৩০০ নেতা-কর্মীকে আটকের কথা বললেও দলটির দাবি, সংখ্যাটি ছয় শতাধিক।
সংঘর্ষের খবরে বিকেলে দলীয় কার্যালয়ে এসে ঢুকতে না পেরে ফুটপাতে বসে কয়েক ঘণ্টা পর চলে যান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
পরের দিন সকালে বিচারিক আদালতে নাশকতার মামলায় হাজিরা দিয়ে বিজয়নগর হয়ে নয়াপল্টন যাওয়ার পথে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তিনি।
সংঘর্ষের পর ক্রাইম সিন ঘোষণা করা কার্যালয়টিকে ঘিরে রেখেছিল পুলিশ।