রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি মোড়ে দেশীয় অস্ত্রসহ অবস্থান নিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। বিএনপির অঙ্গসংগঠনের কর্মী সন্দেহে শনিবার সকালে ৯ জনকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাসীন দলটির ছাত্র সংগঠনটির বিরুদ্ধে। পরে তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দিকে ঢুকতে চাইলে তাদের আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এর কিছুক্ষণ পর সবাই মিলে তাদের কিলঘুষি দিতে থাকেন। পরে পাশে থাকা পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়।
মারধরের শিকার ফারুক হোসেন জমাদ্দার নামে একজন বৃদ্ধ জানান, তিনি ঢাকা উদ্যান এলাকা থেকে যাচ্ছিলেন সমাবেশে যোগ দিতে। নীলক্ষেতের মোড়ে এলে তার সঙ্গে থাকা লোকদের ওপর চড়াও হয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তাদের ফোন কেড়ে নেয়া হয়। এরপর তাদের কয়েকজনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন তারা।
থানায় সোপর্দ করার কথা স্বীকার করলেও মারধর করা হয়নি বলে দাবি করেছেন শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসাইন।
তিনি বলেন, ‘কাউকে আমরা আঘাত করিনি। ক্যাম্পাসে নাশকতা করার উদ্দেশে তারা সংঘবদ্ধভাবে এসেছিল। এরপর তাদের আটকিয়ে আমরা শাহবাগ থানায় সোপর্দ করেছি। এদের কেউ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না। সম্ভবত তারা কেন্দ্রের নির্দেশনা পেয়ে ক্যাম্পাসে নাশকতা করার উদ্দেশে এসেছে।’
এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘থানায় ৯ জনকে আনা হয়েছে। কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ না পেলে তাদের ছেড়ে দেয়া হবে।’
এদিকে ক্যাম্পাসের প্রতিটি প্রবেশ মোড় বিশেষ করে, মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ, দোয়েল চত্বর, চানখাঁরপুল মোড়, বকশীবাজার মোড়, শাহবাগ, টিএসসি, কার্জন হল, পলাশী মোড়, মধুর ক্যানটিন এবং ভিসি চত্বরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা এবং বিভিন্ন হল ইউনিটের নেতা-কর্মীদের সরব উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। এ সময় তাদের কয়েকটি গ্রুপের হাতে রডসহ লাঠিসোঁটা দেখা গেছে।
এ ছাড়া তাদের কয়েকটি অংশ বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে বাইকে চড়ে পুরো ক্যাম্পাসে মহড়া দেয়।
এ ছাড়া দুপুর ১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে শুরু হয়েছে ‘বিজয় মঞ্চ: সন্ত্রাস রুখতে সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ’ শীর্ষক সাংস্কৃতিক আয়োজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিভিত্তিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো এই আয়োজন করেন। বিকেল ৫টা থেকে এই আয়োজন চলবে বলে জানা যায়।
এই বিষয়ে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসবাদ এবং জঙ্গিবাদ রুখে দিতে ছাত্র জনতা আজ ঐক্যবদ্ধ। যারা এ দেশে গ্রেনেড এবং পেট্রল সন্ত্রাসের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে আজ ছাত্রসমাজ প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।’