বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সংসদ থেকে বিএনপির পদত্যাগের ঘোষণা

  •    
  • ১০ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৩:৪১

রুমিন ফারহানা বলেন, ‘এই সংসদে থাকা-না থাকার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। আমরা ইতোমধ্যে আমাদের পদত্যাগপত্র ই-মেইলে পাঠিয়ে দিয়েছি। আজকে শনিবার ছুটির দিন। আগামীকাল সংসদ সদস্যরা স্পিকারের কাছে এই পদত্যাগপত্র পৌঁছে দেবেন।’

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপি আর সংসদে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন দলের সাত সংসদ সদস্য। পদত্যাগপত্রে সই করেছেন তারা। যেকোনো সময় তা স্পিকারের কাছে জমা দেয়া হবে।

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তে এই পথে যাচ্ছেন দলটির সংসদ সদস্যরা। শনিবার রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে এই ঘোষণা এসেছে। বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) সিরাজ দলের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা সাতজন আছি। সাতজন এমপি। গতকাল আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে যে আমরা এই সংসদের যারা এমপি ছিলাম, এই জনসমুদ্রকে সাক্ষী রেখে আমরা আজ সংসদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে চাই।’

বিএনপির এই সিদ্ধান্ত ২৮ বছর আগের স্মৃতি ফিরিয়ে আনবে। সে সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনে থাকা আওয়ামী লীগ এবং যুগপৎ আন্দোলনে থাকা অন্য দলগুলোর সংসদ সদস্যরাও পদত্যাগ করেছিলেন। ১৯৯৪ সালের ডিসেম্বরে একযোগে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি সদস্য পদ ছাড়েন জাতীয় পার্টি এমনকি আন্দোলনে থাকা জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্যরাও।

বিএনপির সদস্যরা সংসদ থেকে পদত্যাগ করতে পারেন, এমন গুঞ্জন গত কয়েক মাস ধরেই ছিল। এমনকি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এই গুঞ্জন নিয়ে কথাও বলেছেন। তিনি বলেছেন, বিএনপি সংসদ থেকে পদত্যাগ করলে উপনির্বাচন হবে।

বিএনপির এই বিভাগীয় সমাবেশের দুই দিন আগে গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে একজন সাংবাদিক মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে প্রশ্ন রাখেন, ‘আপনারা সরকারের পদত্যাগের দাবি করছেন। কিন্তু আপনাদের দলের সাতজন সংসদে যাচ্ছে।’

এই প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের দলের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা সংসদে যাচ্ছেন।’

গোলাপবাগের জনসভা মঞ্চে বিএনপি নেতাদের একাংশ। সেখান থেকেই দলের সংসদ সদস্যদের পদত্যাগের ঘোষণা আসে

ঠিক দুই দিন পর বিভাগীয় সমাবেশে এলো ঘোষণাটি। জি এম সিরাজ ঘোষণা দেয়ার পর বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানাও। তিনি বলেন, ‘এই সংসদে থাকা-না থাকার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। আমরা ইতোমধ্যে আমাদের পদত্যাগপত্র ই-মেইলে পাঠিয়ে দিয়েছে। আজকে শনিবার ছুটির দিন। আগামীকাল সংসদ সদস্যরা স্পিকারের কাছে এই পদত্যাগপত্র পৌঁছে দেবেন।’

তিনি জানান, দলটির সাতজন সংসদ সদস্যের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আসনের সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ দেশের বাইরে আছেন। তবে তিনিও পদত্যাগপত্রে সই করে গেছেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপির চার সংসদ সদস্যের শপথ

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, এমনকি আগের দিন ভোট হয়ে গেছে এমন অভিযোগ তুলে বিএনপি নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনে ফিরে গেছে।

চার বছর আগের এই নির্বাচনের পরেই অবশ্য বিএনপি সংসদে যোগ না দিয়ে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছিল। তবে বগুড়ার গাবতলী থেকে নির্বাচিত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শপথ না নিলেও শপথ নেয়ার সময়সীমার শেষ দিন ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল শপথ নেন চার সংসদ সদস্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের আমিনুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের হারুন অর রশীদ, বগুড়া-৪ আসনের মোশাররফ হোসেন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উকিল আব্দুল সাত্তার ভুঁইয়া।

সেই নির্বাচনে বিএনপি জয় পায় কেবল ছয়টি আসনে। এর মধ্যে বগুড়া-৬ আসন থেকে জয় পাওয়া মির্জা ফখরুল শপথ নেবেন না জানিয়ে দিলেও ঠাকুরগাঁও-৩ থেকে নির্বাচিত জাহিদুর রহমান সবার আগে শপথ নেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে সে সময় বিএনপির জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংসদে না যাওয়া এবং নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে মামলার ঘোষণা দেয় ২০১৯ সালের ৮ জানুয়ারি

ফখরুল শপথ না নেয়ায় আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হলে ২০১৯ সালের ১২ জুনের উপনির্বাচনে বগুড়া-৬ আসনে জেতেন জি এম সিরাজ, যিনি ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বগুড়া-৫ আসন থেকে পরাজিত হন।

৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে গোলযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে তিনটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত ছিল। ২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি তিন কেন্দ্রে ভোট শেষে জয় পান বিএনপি নেতা আবদুস সাত্তার ভুঁইয়া। সংসদে বিএনপির আসন দাঁড়ায় ছয়টিতে।

এরপর জাতীয় সংসদের ৩০০টি আসনে আনুপাতিক হারে বিএনপি সংরক্ষিত নারী আসনের একটি পায়। দলটি মনোনয়ন দেয় রুমিন ফারহানাকে, যিনি ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েও পাননি।

ভোট বর্জন করেও সংসদে যোগ দেয়ায় বিএনপির মধ্যে বিরোধিতা ছিল। এমনকি এখনও এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় দলটিকে।

এ বিভাগের আরো খবর