বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘ক্যামনে যাব গাজীপুর’

  •    
  • ১০ ডিসেম্বর, ২০২২ ১২:৫৩

ইসমাইল বলেন, ‘আমার নানি মারা গেছেন। তাকে শেষবারের মতো দেখতে আমাকে গাজীপুর যেতে হবে। কিন্তু এখানে এসে কোনো গাড়ি পাচ্ছি না। কোনো বাসই নাকি আজ চলবে না। এখন আমি কীভাবে যাব বুঝতেছি না।’

রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায় দাঁড়িয়ে আছেন যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা মোহাম্মদ ইসমাইল। যাবেন গাজীপুর। কিন্তু বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশের কারণে শনিবার সকাল থেকে সড়কে গণপরিবহন নামেনি। বাস বন্ধ থাকায় গাজীপুরে কীভাবে পৌঁছাবেন তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন ইসমাইল। তিনি বলেন, ‘আমার নানি মারা গেছে। তাকে শেষবারের মতো দেখতে গাজীপুর যেতে হবে। কিন্তু এখানে এসে কোনো গাড়ি পাচ্ছি না। কোনো বাসই নাকি আজ চলবে না। এখন আমি ক্যামনে যাব বুঝতেছি না।’

সমাবেশে যোগ দিতে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায় সকাল থেকে এসে জড়ো হচ্ছেন। এরপর তারা যাচ্ছেন সমাবেশস্থলে।

সমাবেশকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে কোনো বাস ছাড়েনি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। অনেকে কয়েক গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা ও মোটরসাইকেলে করে গন্তব্যে যাচ্ছেন।

সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায় বিএনপি নেতা-কর্মীরা। ছবি: নিউজবাংলা

শনিবার সকালে সায়েদাবাস বাস টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতা-কর্মীরা এসে প্রথমে জড়ো হচ্ছেন সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায়। তারপর মিছিল সহকারে সমাবেস্থলে রওনা হচ্ছেন তারা। ঢাকার মিরপুর, আজিমপুর, উত্তরা, ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকা থেকেও নেতা-কর্মীরা সায়েদাবাদে এসে জড়ো হচ্ছেন। এরপর খালেদা জিয়া, জিয়াউর রহমান ও তারেক জিয়ার ছবি সম্বলিত বিভিন্ন রংয়ের টি শার্ট ও টুপি পরে ব্যানার সহকারে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে যাচ্ছেন তারা। এসময় তাদের সরকার ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার পৌর বিএনপির সভাপতি আবু দাউদ এসেছেন সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায়। তিনি বলেন, ‘আমি আমার নেতা-কর্মীদের নিয়ে তিনদিন আগে ঢাকায় এসেছি। আমরা ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে সকালে এখানে আসলাম, এখন এখান থেকে সবাই মিলে সমাবেশে যাব। আমাদের দাবি খালেদা জিয়ার মুক্তি আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার।’

নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা যুবদল কর্মী কবির হোসেন বলেন, ‘রাস্তায় পুলিশ ঝামেলা করতে পারে ভেবে আমরা বিভিন্ন যানবাহনে করে সায়েদাবাদে এসেছি। আমাদের আরও নেতাকর্মী এখন রাস্তায়। তারা আসলেই আমরা মিছিল নিয়ে সমাবেশে যাব।’

সায়েদাবাদে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সতর্ক অবস্থান। ছবি: নিউজবাংলা

এদিকে বাস না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। ছোট পরিবহনে করে গন্তব্যে যাচ্ছেন অনেকে। ভাড়া কয়েকগুন বেশি চাওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিল্পব হোসেন নামে একজন বলেন, ‘এখান থেকে ধানমন্ডি যাব। কিন্তু সিএনজিচালিত অটোরিকশার ড্রাইভার সাড়ে তিন শ টাকা চাই। অন্যদিন এই ভাড়া হয় দুই শ থেকে আড়াই শ টাকা। এখন অপেক্ষা করছি। দেখি অন্য কিছু পাই কি না।’

বিল্পবের মতো আরও অনেক যাত্রীকে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

কেন বাস চলছে না এমন প্রশ্নের জবাবে লাকসাম-ত্রিশালগামী বাসের চালক আব্দুল মইন বলেন, ‘আজ তেমন একটা যাত্রী নেই। বিএনপির সমাবেশের কারণে যদি বাস ভাঙচুর হয় সেই আশঙ্কায় বাস চালাচ্ছি না। সামান্য কয়েকটা টাকার জন্য যদি বাসের ক্ষতি হয় তাহলে তো আমি শেষ। আমার মতো সবাই আজ এই ভয়ে গাড়ি ছাড়ছে না।’

বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সায়েদাবাদ এলাকায় সতর্ক রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকশ সদস্য। পুলিশ, এপিবিএন, আনসার, র‌্যাব সদস্যদের জলকামান ও সাজোঁয়া যান নিয়ে রাস্তার পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তবে তাদের তল্লাশি করতে দেখা যায়নি।

এ বিভাগের আরো খবর