কোভিড-১৯ মহামারির পর নারী ও মেয়ে শিশুদের ওপর সহিংসতার মাত্রা বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। শনিবার বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে দেয়া বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতিসংঘ সদর দফতর মহাসচিবের বাণী প্রকাশ করে।
এতে বলা হয়, ‘বিশ্ব মানবাধিকার অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। ক্ষুধা ও দারিদ্র্য বাড়ছে- যা কোটি মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার খর্ব করছে। এতে নাগরিক মত প্রকাশের স্বাধীনতা কমেছে।’
বাণীতে বিশ্বের প্রায় প্রতিটা অঞ্চলেই সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকের নিরাপত্তা বিপজ্জনকভাবে হুমকির মুখে পড়েছে। এ কারণে বিশেষত তরুণ জনগোষ্ঠীর আস্থা উঠে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন গুতেরেস।
কোভিড-১৯ মহামারির পর নারী ও মেয়ে শিশুদের ওপর সহিংসতার মাত্রা বেড়েছে। বর্ণবাদ, অসহনশীলতা ও বৈষম্য লাগামছাড়া হয়ে উঠেছে বলেও মন্তব্য করেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘ত্রিমাত্রিক সংকট- জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্য হ্রাস ও দূষণের কারণে মানবাধিকারের জন্য নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আবির্ভূত হচ্ছে।’
মানবাধিকার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে মহাসচিব বলেন, ‘নতুন কিছু প্রযুক্তির কারণে মানবাধিকারের জন্য যেসব হুমকি সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলো মাত্রই অনুধাবন করতে শুরু করেছি আমরা।’
এই কঠিন সময়ে সব ধরনের মানবাধিকার- নাগরিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকারের বিষয়ে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে উদ্যোমী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বাণীতে মহাসচিব গুতেরেস বলেন, ‘২০২০ সালে আমি যে কল টু অ্যাকশনের সূচনা করেছিলাম, সেখানে মানবাধিকারকে আমরা চ্যালেঞ্জগুলোর কেন্দ্রে রেখেছি। এই দৃষ্টিভঙ্গি ‘আওয়ার কমন অ্যাজেন্ডা’ প্রতিবেদনে প্রতিফলিত হয়েছে। এটি মানবাধিকারকে সমুন্নত রেখে নতুনভাবে সামাজিক মিথষ্ক্রিয়ার ওপর গুরুত্বরোপ করছে।’
আগামী বছর সর্বজননীন মানবাধিকার ঘোষণার ৭৫তম বার্ষিকীকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগ হিসেবে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মহাসচিব জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র, নাগরিক সমাজ, বেসরকারি খাত ও অন্যান্যদের প্রতি ক্ষতিকর প্রবণতা কাটাতে প্রচেষ্টার প্রাণকেন্দ্রে মানবাধিকারকে রাখার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার হলো মানব মর্যাদার শিকড় এবং শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভূক্তিমূলক, ন্যায্য, সম্মান ও সমৃদ্ধ সমাজের মূল ভিত্তি।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বিষয়গুলো আমাদের মৌলিক বিষয়- মানবতাকে প্রতিফলিত করে।’