বিএনপির সমাবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিজস্ব ৩২ হাজার সদস্যের ফোর্সের পাশাপাশি এপিবিএন ও আনসার সদস্যদের রাখবে ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশ (ডিএমপি)। যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সব ধরনের প্রস্তুতির থাকবে বলে জানিয়েছে তারা।
সমাবেশস্থল ও শহর জুড়ে পোশাকে এবং সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি সাইবার পেট্রলিংও জোরদার করা হয়েছে।
সমাবেশস্থলের ভেতরের নিরাপত্তা বিএনপি তার নিজস্ব জনবল দিয়ে নিশ্চিত করবে, আর পুলিশ সমাবেশের বাইরেসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মোতায়েন থাকবে বলে জানায় ডিএমপি।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভেতরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ওরা নিজেরাই করবে। পুলিশ থাকবে বাইরে। সমাবেশের ভেতরে তো পুলিশ দেয়া হয় না।
‘আমাদের ফোর্স আছে ৩২ হাজার। পুরো ঢাকা শহরে পর্যাপ্ত সংখ্যক ডেপ্লয়মেন্ট থাকবে। বাইরে থেকে এপিবিএন ও আনসার এসেছে। তারাও দায়িত্ব পালন করবে।’
ডিএমপির পুলিশের পাশাপাশি সমাবেশ ও নগরীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাব এবং বিজিবি প্রস্তুত রাখার কথা জানিয়েছে ডিএমপি।
ডিএমপির মুখপাত্র উপকমিশনার মো. ফারুক হোসেন নিউজবাংলাকে শুক্রবার রাতে বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলার অবনতি যাতে না ঘটে, সে জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। এর সঙ্গে সাদা পোশাকে পুলিশ ও ডিবি থাকবে।
‘আমাদের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট, ডগ স্কোয়াড, সোয়াট টিম প্রস্তুত থাকবে। যদি কোনো ধরণের ঘটনা ঘটে, সেটা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘এর পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক ব্যাটেলিয়ন আনসার আমাদের সঙ্গে ডিউটি করবে। যদি কোনো কারণে ঝামেলা হয়, তাহলে র্যাব আমাদের সহায়তা করবে, বিজিবি আমাদের সহায়তা করবে।’
তবে সমাবেশ ঘিরে কোনো সহিংসতার আশঙ্কা করছে না পুলিশ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ শুক্রবার বিকেলে বলেন, ‘আমাদের যে সিকিউরিটি প্ল্যান, যে সিকিউরিটি প্ল্যান আমরা তৈরি করেছি, আমরা মনে করি না কোনো হামলার পরিকল্পনা আছে। তারপরেও পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ আমরা রেখেছি, যাতে দুর্বৃত্তরা কোনো ধরনের ঘটনা ঘটাতে না পারে। সেই লক্ষ্যে পোশাকে, সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, তারা কাজ করবে।’
সমাবেশকে ঘিরে বিএনপিকে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনো শর্ত দেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ডিবি প্রধান বলেন, ‘আগের শর্তই থাকবে। আমাদের পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ পোশাকে এবং সাদা পোশাকে কাজ করছে ও করবে।
‘আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সম্ভাব্য সমাবেশ ঘিরে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছিলাম। সেই নিরাপত্তা আমরা গোলাপবাগ মাঠেও দেব। আমাদের টিম অলরেডি কাজ করছে। আশেপাশের এলাকা তদারকি করছে, যাতে এই সমাবেশকে ঘিরে কোথাও কোনো অরাজকতা তৈরি না হয়, কোনো ধরনের কোনো ব্যারিকেড সৃষ্টি না হয়।’
র্যাবের প্রস্তুতি সম্পর্কে বাহিনীটির মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকবে র্যাব।
তিনি বলেন, ‘যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা, নাশকতা রোধ ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে র্যাব ফোর্সের গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। জনগণের নিরাপত্তা ও জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাবের নিয়মিত টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এ ছাড়া যে কোনো ধরনের হামলা ও নাশকতা রোধে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, স্থান ও প্রবেশ পথসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে র্যাবের চেকপোস্টে নিয়মিত তল্লাশি কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’
‘আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির তৎপরতা রোধে দেশব্যাপী র্যাব ফোর্সের সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা নজরদারি ও নিয়মিত টহল কার্যক্রম চলমান আছে। অনলাইনে মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়ানোর মাধ্যমে সাধারাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা প্রতিহত করতে র্যাবের সার্বক্ষণিক সাইবার নজরদারী অব্যাহত আছে। এ ছাড়া যে কোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে র্যাব স্পেশাল ফোর্স টিম, ডগ স্কোয়াড, বম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট ও র্যাবের হেলিকপ্টার সার্বক্ষণিক প্রস্তুত আছে।’