বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিএনপির সমাবেশের ঠিকানা অবশেষে গোলাপবাগ

  •    
  • ৯ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৫:২২

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি পেলেও নয়াপল্টনেই সমাবেশ করার ঘোষণা নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে নাটকীয়ভাবে বিএনপির পক্ষ থেকে কমলাপুর স্টেডিয়াম বা মিরপুরের বাঙলা কলেজ মাঠ- যেকোনো একটিতে সমাবেশের কথা জানানো হয়। কোথায় জমায়েত হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মাঠ দুটি পরিদর্শনের কথাও জানানো হয়। তবে সমাবেশের আগের দিন ফের দেখা দেয় নাটকীয়তা।

নয়াপল্টন নাকি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, এ নিয়ে বিরোধের মধ্যে আলোচনায় কমলাপুর স্টেডিয়াম ও মিরপুর বাঙলা কলেজ মাঠ। তবে শেষ পর্যন্ত ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের স্থল ঠিক হয়েছে গোলাপবাগ মাঠ।

জমায়েতের আগের দিন রাজধানীর এক প্রান্তে সায়েদাবাদ ঘেঁষা বড় এই মাঠটি নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয় থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে।

শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হারুন অর রশীদের সঙ্গে দেখা করে সেখানে জমায়েতের বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে নিশ্চিত করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ইনশাল্লাহ গণসমাবেশ আগামীকালকে গোলাপবাগ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।’

এ সময় সঙ্গে ছিলেন দলের আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি পেলেও নয়াপল্টনেই সমাবেশ করার ঘোষণা নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে নাটকীয়ভাবে বিএনপির পক্ষ থেকে কমলাপুর স্টেডিয়াম বা মিরপুরের বাঙলা কলেজ মাঠ- যেকোনো একটিতে সমাবেশের কথা জানানো হয়। কোথায় জমায়েত হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মাঠ দুটি পরিদর্শনের কথাও জানানো হয়।

তবে গভীর রাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তারের পর তৈরি হয় নতুন পরিস্থিতি। এর মধ্যে আবার কমলাপুর স্টেডিয়ামে ক্রিকেট খেলা চলার বিষয়টি সামনে আসে। আবার বিএনপির পক্ষ থেকে বাঙলা কলেজ মাঠ নিয়ে আপত্তিও আসতে থাকে।

ডিএপির গোয়েন্দা প্রধানের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল

এর মধ্যে দুপুরের পর বিএনপির দুই নেতা যান ডিএমপির গোয়েন্দাপ্রধানের কাছে। বের হয়ে জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছিল আমরা কমলাপুর স্টেডিয়ামে গণসমাবেশ করব। সেখানে যেহেতু খেলা চলছে এবং কর্তৃপক্ষ আমাদের বলল অন্য একটা জায়গায় আপনারা বিবেচনা করতে পারেন।

‘সেটার প্রেক্ষিতে আমরা গোলাপবাগ মাঠে আমরা আমাদের চয়েজ দিয়েছি এবং আমাদের চয়েজের প্রেক্ষিতে উনারা বলেছেন একটা লিখিতভাবে উনাদের কাছে দেয়ার জন্য। সেটা আমরা দিয়েছি। ওই জায়গায় গণসমাবেশ করার জন্য উনারা আমাদেরকে বলেছেন।’

তিনি বলেন, ‘পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদের সঙ্গে আমাদের বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আমরা মাঠটি পরিদর্শন করে এখন সমাবেশের জন্য প্রস্তুতি নেব।… আগামীকাল গোলাপবাগে আমাদের সমাবেশ হবে। পুলিশ সকল ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে বলে আশ্বস্ত করেছে।’

নয়াপল্টন থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরের গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে বিএনপি

কায়সার কামাল বলেন, ‘পুলিশ আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে। সকল নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছে। আমাদের সমাবেশ গোলাপবাগ মাঠেই হবে।’

নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে পারলেন না। এতে রাজনৈতিক পরাজয় কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘না, না। আমাদের যেটা প্রত্যাশা ছিল যে আমরা কমলাপুর স্টেডিয়ামে করব। সেখানে যেহেতু খেলা চলছে এবং কর্তৃপক্ষ আমাদের বলল অন্য একটা জায়গা আপনারা বিবেচনা করতে পারেন।’

সমাবেশ করতে বিএনপির প্রথম পছন্দ ছিল নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে। কিন্তু সেখানে অনুমতি পায়নি দলটি। তারপরও সেখানে জমায়েতের ঘোষণা আসার পর বুধবার হয় সংঘর্ষ। এরপর সেই এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

তার পরিপ্রেক্ষিতে গোলাপবাগ মাঠকে নিজেদের পছন্দ বলে জানান কায়সার কামাল। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের চয়েজ দিয়েছি। আমাদের চয়েজের প্রেক্ষিতে উনারা (পুলিশ) বলেছেন একটা লিখিতভাবে উনাদের কাছে দেয়ার জন্য। সেটা দিয়েছি। আমাদের ড. জাহিদ সাহেব যে কথাটা বললেন, যে ওই জায়গায় করার জন্য উনারা (পুলিশ) আমাদেরকে বলেছেন। সার্বিক নিরাপত্তা, গোলাপবাগ মাঠ তথা, আশ-পাশের এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তার বিধান উনারা (পুলিশ) করবেন।’

এ সময় জাহিদ হোসেন বলেন, ‘১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ হচ্ছে তো।’

মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে এক প্রশ্নে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বেসিক্যালি সেটা তো পুলিশের দৈনন্দিন কার্যক্রমের অংশ। সেটা আমরা আদালতে মোকাবিলা করব। আইনগতভাবে পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামের পর থেকে প্রতি শনিবার বিভাগীয় শহরগুলোতে ৯টি সমাবেশ শেষে ১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে জমায়েতের ঘোষণা দেয়া হয়। তবে এই সমাবেশ কোথায় হবে, এ নিয়ে তৈরি হয় বিরোধ।

সমাবেশের স্থান নিয়ে বিরোধের মধ্যে গত ভোরের আগে আগে গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসকে। এর আগে বিএনপির পক্ষ থেকে কমলাপুর স্টেডিয়াম ও মিরপুর বাঙলা কলেজ মাঠের কথা জানানো হয়।

বিএনপি সমাবেশটি করতে চেয়েছিল নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে। তবে পুলিশ অনুমতি নিয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। সেখানে না গিয়ে নয়াপল্টনেই জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে বুধবার ব্যাপক সংঘর্ষ হয় সেখানে। প্রাণ হারান একজন।

বৃহস্পতিবার বিকেলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলনে এসে পুলিশের নিষেধ সত্ত্বেও নয়াপল্টনেই সমাবেশ করার ঘোষণা দেন। বলেন, তারা যাবেন, জনগণও যাবে। বাধা এলে জনতাই সিদ্ধান্ত নেবে, তারা কী করবে।

তবে রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদলের বৈঠকে বরফ গলার উপক্রম হয়। সিদ্ধান্ত হয় বিএনপি কমলাপুর স্টেডিয়াম অথবা মিরপুর বাংলা কলেজ মাঠে সমাবেশ করবে।

তবে গভীর রাতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশের তুলে নেয়ার ঘটনায় তৈরি হয় নতুন পরিস্থিতি।

বিএনপি কী করতে যাচ্ছে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে জরুরি বৈঠকে বসে দলের স্থায়ী কমিটি। যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালি বৈঠকে যোগ দেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তবে বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত, সে বিষয়ে কিছু জানাননি নেতারা। ব্রিফ করে পরে সব তুলে ধরা হবে, সেটি বলে অপেক্ষায় থাকতে বলেন তারা।

এ বিভাগের আরো খবর