ঢাকায় ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে উত্তেজনার জেরে নয়াপল্টনের পাশে রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকার হোটেলগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। হোটেলগুলোর কর্মকর্তা বলছেন, মন্দা চলছে তাদের।
বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো নির্দেশনা তাদেরকে দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন হোটেল পরিচালনা কর্তৃপক্ষ। তবে পুলিশ জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে অতিথিদের কক্ষ ভাড়া দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে বলে জানালেন কেউ কেউ।
১০ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির দলীয় অফিসের সামনে সড়কে মহাসমাবেশ করতে চায় বিএনপি। সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে অনুমতি দেয়া হয়নি। তিন দিন আগেই নয়াপল্টনে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের সংষর্ষ হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তল্লাশি চলে বৃহস্পতিবার দিনভর।
রাজধানীর ফরিরাপুলের হোটেল আল আকসা আবাসিকের ম্যানেজার আকবর হোসেন পাপেল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের ব্যবসা খুব খারাপ যাচ্ছে। হোটেলে ৪১টি রুমের মধ্যে এখন মাত্র চারটিতে অতিথি আছেন।’
তিনি জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো নির্দেশনা নেই তাদের ওপর। গত দুই-এক দিনে পুলিশ আসেনি বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আসলে আমাদের এখানে তো কোনো লোকই (অতিথি) নেই। তাহলে পুলিশ এসে আর কী করবে!’
বিএনপির সমাবেশের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, তত বাড়ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা। ঢাকায় প্রবেশের সব পথে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। পুলিশ রাজধানীর কয়েকটি হোটেলে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখাতে বলেছে।
রাজধানীর ফকিরাপুলের হোটেল গোল্ডেন সিটির ম্যানেজার তজিবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে পুলিশ হোটেলে এসেছিল। আমাদেরকে অতিথির আইডি কার্ড (জাতীয় পরিচয়পত্র) দেখে হোটেল রুম ভাড়া দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। এ ছাড়া আর কোনো নির্দেশনা আমাদের ওপরে নেই।’
তিনি জানান, তার হোটেলে ১৭টি কক্ষের মধ্যে মাত্র তিনটিতে অতিথি আছেন।
একই তথ্য জানান ওই হোটেলে অভ্যর্ত্থনা ডেস্কের কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘লোকজন তেমন নাই। দুই-তিনটি রুমে আছে। হোটেল বলতে গেলে পুরো খালি।’
ফকিরাপুলের ‘হোটেল আসমা’র অভ্যর্ত্থনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফারুক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত দুই-তিন দিনের মধ্যে এই হোটেলে পুলিশ আসেনি। তবে চলতি মাসের শুরুতে পুলিশ এসে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে রুম ভাড়া দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশের কোনো নিদের্শনা নেই, তবে এর আগে এই মাসের শুরুতে এসেছিল। তখন মৌখিকভাবে নির্দেশনা দিয়ে গেছেন।’
তিনি জানান, তাদের হোটেলের ৫০টি কক্ষের মধ্যে অতিথি আছেন ১০টিতে।
হোটেল সিটি ভিউয়ের অভ্যর্ত্থনা কর্মকর্তা কামরুল হাসান জানান, তাদের ওপর পুলিশের কোনো নির্দেশনা নেই। বর্তমানে যেন ঈদের ছুটি চলছে। একেবারে ফাঁকা।
হোটেলে কেমন অতিথি আছে জানতে চাইলে আরামবাগের প্রিন্স গার্ডেন আবাসিক হোটেলের কর্মচারী হেফজো রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রুম সব খালি। মনে হয় না ১১ ডিসেম্বরের আগে কেউ হোটেলে থাকার জন্য আসতে পারবে।’
তিনি জানান, গত ৩০ নভেম্বর এসেছিল পুলিশ হোটেলে। আর আসেনি।