রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির প্রধান কার্যালয় তৃতীয় দিনের মতো ঘিরে রেখেছে পুলিশ। দলটির কোনো নেতা-কর্মীকে দেখা যায়নি কার্যালয় এলাকায়।
শুক্রবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়, কাকরাইল মোড় ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় একই ধরনের চিত্র দেখা যায়।
ছুটির দিন হওয়ায় সাধারণ মানুষকেও রাস্তায় সেভাবে দেখা যায়নি। রাস্তায় বাস ও রিকশা চলাচল কম, নেই গণপরিবহনে ভিড়।
নাইটিঙ্গেল মোড় ও ফকিরাপুল মোড়ের রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়েছে পুলিশ। এ দুই মোড়ের মধ্যবর্তী জায়গায় কোনো যান চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে না।
এই অংশে সব দোকানপাটও বন্ধ রয়েছে। ওই এলাকায় কোনো সাধারণ মানুষকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। তাদের অন্য এলাকা দিয়ে যেতে বলা হচ্ছে।
সড়কে ব্যারিকেড দিয়েছে পুলিশ। ছবি: নিউজবাংলাকাকরাইল মোড়ে দায়িত্বরত পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার আবুল হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, কাল (বৃহস্পতিবার) রাত থেকে ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে।
শুক্রবার সারা দিন ব্যারিকেড থাকবে কি না জানতে চাইলে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘এ বিষয়ে এখন কিছু জানাতে পারছি না।’
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে বিএনপির বিভাগীয় ধারাবাহিক সমাবেশের অংশ হিসেবে ১০ ডিসেম্বর যে সমাবেশটি ঢাকায় ডাকা হয়েছে, সেই সমাবেশ ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যে বুধবার নয়াপল্টন হয়ে ওঠে রণক্ষেত্র।
বিএনপি শনিবারের সমাবেশটি করতে চায় নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে, কিন্তু পুলিশ অনুমতি দিয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। সেখানে যেতে রাজি না হয়ে অনুমতি ছাড়াই সমাবেশ করার কথা জানায় বিরোধী দলটি। বুধবার সকাল থেকে সেখানে অস্থায়ী মঞ্চ বানিয়ে চলতে থাকে বক্তব্য। দুপুরের পর সামনের সড়কে অবস্থানকারী নেতা-কর্মীদের পুলিশ সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে শুরু হয় সংঘর্ষ।
বিএনপিকর্মীদের ইটপাটকেলের জবাবে পুলিশ ব্যবহার করে কাঁদানে গ্যাস আর রাবার বুলেট। একজনের প্রাণহানির পর ৩০০ জনকে করা হয় আটক, যাদের মধ্যে আছেন ১০ ডিসেম্বর থেকে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশে দেশ চালানোর ঘোষণা দেয়া আমান উল্লাহ আমান ও শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। গ্রেপ্তার হন কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কবির রিজভী।
সড়কে ব্যারিকেড দিয়েছে পুলিশ। ছবি: নিউজবাংলাসন্ধ্যায় তালা ভেঙে কার্যালয়ে প্রবেশ করে পুলিশ। তল্লাশিতে ককটেল উদ্ধারের কথাও জানানো হয়। রাতে সেগুলোর বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
সংঘর্ষের পর নয়াপল্টনে ছুটে যাওয়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, পুলিশ নিজেরাই বোমা রেখে তাদের নেতা-কর্মীদের নামে মামলা দেবে।
নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে অভিযানের দ্বিতীয় দিনও সেটি ঘিরে রাখে পুলিশ। ফখরুলকে আগের দিনের মতোই কার্যালয়ে যেতে বাধা দেয়া হয়। ওই দিন তিনি নয়াপল্টনেও যেতে পারেননি।