বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গোমতীর ঝুঁকিপূর্ণ সেতুতে নিত্য যানজট

  •    
  • ৯ ডিসেম্বর, ২০২২ ১২:৫৮

সংস্কারের পর নোটিশ টানিয়ে বলে দেয়া হয় ভারী যানবাহন যেন সেতুটি দিয়ে চলাচল না করে। সেতুর প্রবেশমুখে পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল বন্ধ করতে ব্যারিকেড তৈরি করা হয়। তারপর আর কোনো সংস্কার না হওয়ায় ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে চানপুর বেইলি ব্রিজ।

কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার চানপুর এলাকায় গোমতী নদীর ওপর নির্মিত বেইলি ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এমন ঝুঁকিপূর্ণ সেতুতে প্রতিনিয়ত যানজট সৃষ্টি হয়। ব্রিজ দিয়ে যাতায়াতকারী বাহনের চালক ও যাত্রীদের ধারণা, দ্রুত নতুন সেতু করা না হলে যেকোনো মুহূর্তে এটি ভেঙে বড় দুর্ঘটনা ঘটবে।

সেতু দিয়ে এখন শুধু যাত্রী পারাপারা হয়। বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম টুটুল উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে জরুরি ভিত্তিতে সেতু সংস্কারের উদ্যোগ নেন। সে সময় এক সপ্তাহ বন্ধ রাখা হয় যান চলাচল।

সংস্কারের পর নোটিশ টানিয়ে বলে দেয়া হয় ভারী যানবাহন যেন সেতুটি দিয়ে চলাচল না করে। এ ছাড়া সেতুর প্রবেশমুখে পণ্যবাহী ট্রাক যেন প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য প্রতিবন্ধক তৈরি করে দেয়া হয়। তারপর আর কোনো সংস্কার না হওয়ায় ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে চানপুর বেইলি ব্রিজ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অন্তত ১০টি জায়গায় মরিচা পড়ে সেতুর রেলিং ভেঙে গেছে। মাইক্রোবাস, পিকআপ চলাচল করলে ব্রিজটি কেঁপে ওঠে। সতর্ক হয়ে ব্রিজ পার হয় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও প্যাডেলচালিত রিকশা। সেতুর স্তম্ভেও জং ধরেছে। পাটাতনগুলো ক্ষয়ে গেছে। এমন ঝুঁকিপূর্ণ সেতুতে নিত্যদিনের যানজট যেন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘায়ে পরিণত হয়েছে।

কুমিল্লা বাগড়া সড়ক দিয়ে যারা যাতায়াত করেন, তাদের এ সেতু পার হতে হয়। এটি দিয়ে কুমিল্লা আদর্শ সদর, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া ও পাশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্তত ২০ হাজার মানুষ যাতায়াত করে। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির চানপুর পৌঁছালেই যেন সবার ভয় শুরু হয়, কখন জানি ভেঙে পড়বে ব্রিজটি।

অটোরিকশাচালক ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘আইজ ছয় বছর এই সড়ক দিয়ে সিএনজি চালাই। ঈদগাহ থেকে বাগড়া পর্যন্ত যাইতে এক থেকে সোয়া ঘণ্টা লাগে। তবে যখন চানপুর ব্রিজে জাম লাগে, হেই সময় বাগড়া যাইতে দুই-আড়াই ঘণ্টা লাগে। এর ওপর এই ব্রিজডা টিনের। কুন সময় যে ভাইঙা লইয়া পড়ে, আল্লায় জানে।’

পিকআপচালক ফজলুর রহমান বলেন, ‘এহন এমন ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ আর কোথাও নাই। আমি দোকানের মালামাল পৌঁছায় দেই। চানপুর ব্রিজটার কাছে আইলে দোয়া-দুরুদ পড়ি। আল্লারে ডাকতে ডাকতে পার হই।’

বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত আফজল হোসেন বলেন, ‘ব্রিজটা ঝুঁকিপূর্ণ। তার ওপর প্রায় প্রতিদিনই যানজট লেগে। এই ব্রিজের কারণে প্রতিদিন কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে।’

এদিকে কুমিল্লার চানপুর থেকে সালদা নদী পর্যন্ত সড়কটি কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের উদ্যোগে পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের জন্য এলজিইডি থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে।

কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম টুটুল বলেন, ‘ব্রিজটি দু’বার সংস্কার করা হয়েছে। একবার ২০১৭ সালে, আরেকবার ২০২০ সালে। ওই সময় ব্রিজটি এলজিইডির ছিল। এখন সড়ক ও জনপথের। তাই ব্রিজটির উন্নয়ন কিংবা সংস্কার নিয়ে আদর্শ সদর উপজেলার কিছু করার ক্ষেত্রে আইনগত কিছু জটিলতা আছে। ব্রিজটি নিয়ে কী পরিকল্পনা, তা ভালো বলতে পারবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।’

কুমিল্লা সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা বলেন, ‘নতুন ব্রিজের জন্য কারিগরি সমীক্ষা চলছে। সয়েল টেস্ট হয়েছে। ওয়েস্টার্ন ব্রিজ ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্টে নেয়া হয়েছে। আশা করি, আগামী বছর থেকে নতুন সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলবে।’

এ বিভাগের আরো খবর