মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে তিন কলেজছাত্রকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পুলিশের দুই কনস্টেবলসহ চারজনের বিরুদ্ধে ছাত্রদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে।
হরিরামপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের আন্ধারমানিক এলাকার পদ্মা নদীর পাড়ে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যাহার হওয়া পুলিশের দুই সদস্য হলেন হরিরামপুর থানার কনস্টেবল আব্দুল জব্বার ও আব্দুল লতিফ। এ ঘটনায় স্থানীয় অটোচালক মামুন মিয়া ও থানার ওসির বাসার কাজের লোক মাসুদ মিয়া জড়িত বলেও অভিযোগ রয়েছে।
মারধরে আহত শিক্ষার্থীরা হলেন সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের নিজাম উদ্দিন, ঢাকা কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ফয়সাল আহমেদ এবং টাঙ্গাইল পলিকেটনিক্যাল ইনস্টিটিউটের রায়হান আলম। এদের সবার বাড়ি হরিরামপুর উপজেলায়।
হরিরামপুর থানার ওসি সৈয়দ মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবুল বাশার সবুজ বলেন, ‘বিকেলে তিন কলেজছাত্র নিজাম উদ্দিন, ফয়সাল আহমেদ ও রায়হান আলম পদ্মা নদীর পাড়ে বসে গল্প করছিলেন। এ সময় স্থানীয় অটোচালক মামুন মিয়া ও থানার ওসির বাসার কাজের লোক মাসুম এসে তাদের গাঁজা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাদানুবাদ হয়।
পরে অটোচালক মামুন ও মাসুম ফোন করে হরিরামপুর থানার পুলিশ কনস্টেবল আব্দুল জব্বার ও আব্দুল লতিফকে ডেকে আনেন। এরপর অভিযুক্তরা সংঘবদ্ধভাবে ওই তিন কলেজছাত্রকে মারধর করেন। এ সময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে পুলিশের দুই কনস্টেবলসহ চারজন পালিয়ে যান।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয়রা ছাত্রদের উদ্ধার করে হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে ফয়সাল আহমেদ ও রায়হান আলমকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তবে নিজাম উদ্দিনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।’
রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল হক বলেন, ‘অটোচালক মামুন ও ওসির বাসার কাজের লোক মাসুম গাঁজা দিয়ে ছাত্রদের ফাঁসাতে চেষ্টা করেন। এটা খুব দুঃখজনক ঘটনা। আমাদের জানামতে ওই তিন কলেজছাত্র কোনোদিন মাদক সেবন করেনি। তাদের বিরুদ্ধে এমন কোনো অভিযোগও নাই।’
হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোহাম্মদ মুসা বলেন, ‘আহতদের মধ্যে নিজাম উদ্দিনের অবস্থা খারাপ। মারধরের কারণে নিজামের শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, ‘এ ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল আব্দুল জব্বার ও আব্দুল লতিফকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় আইনগত ব্যবস্থার নেয়ার জন্য অনুরোধ করা হবে।’ এ ছাড়া জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।