বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বড় পর্দায় খেলা দেখতে বহিরাগতদের ঢাবির ‘না’

  •    
  • ৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ২০:০৮

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহযোগিতায় মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান নগদ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি স্থানে এই বড় পর্দা বসিয়ে খেলা দেখানোর আয়োজন করেছে। যতদিন খেলা চলেছে, বিশেষ করে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিলের খেলার দিন ব্যাপক ভিড় বাড়ে। ভুভুজেলার উচ্চ আওয়াজে শব্দ দূষণ এবং অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে শিক্ষার্থীরা অসন্তুষ্ট।

ফুটবল বিশ্বকাপের শুরু থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বড় পর্দায় খেলা দেখানোর আয়োজন করা হয়েছে। এই আয়োজন বেশ সাড়াও ফেলেছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকেই খেলা দেখতে আসেন।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে বড় পর্দায় বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখার আয়োজন শুধু বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের জন্য। খেলা দেখতে বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে না আসার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই অনুরোধ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে বড় পর্দায় বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখার আয়োজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের জন্য। কিন্তু সেখানে বহিরাগতদের সমাগম ঘটলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নানা বিড়ম্বনা ও ভোগান্তিতে পড়েন, আর পরিবেশ বিঘ্নিত হয়।

‘এমতাবস্থায়, শৃঙ্খলা ও পরিবেশ রক্ষায় ক্যাম্পাসের বাইরের দর্শকদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আগমন না করে তাদের নিজ নিজ বাসা/এলাকায় খেলা উপভোগ করার আহ্বান জানানো হলো।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহযোগিতায় মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান নগদ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি স্থানে এই বড় পর্দা বসিয়ে খেলা দেখানোর আয়োজন করেছে। যতদিন খেলা চলেছে, বিশেষ করে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিলের খেলার দিন ব্যাপক ভিড় বাড়ে। ভুভুজেলার উচ্চ আওয়াজে শব্দ দূষণ এবং অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে শিক্ষার্থীরা অসন্তুষ্ট।

শিক্ষার্থীদের দাবি, বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা কিছু বহিরাগতরাই এসব করছে। বিশ্বকাপ শুরুর কয়েকদিন পর থেকেই শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

তানজীনা শুচি নামের এক শিক্ষার্থী লিখেন, ‘খুবই কষ্টের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, আমরা কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকি নাকি কমলাপুরের বস্তিতে থাকি? আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল যার যা মন চায়, সমর্থন করুন, আপনাদের বিনোদনের দরকার বিনোদন নিন। কিন্তু সংযমী আচরণ কি করা যায় না? সন্ধ্যা থেকে পে পু বাঁশি বিরামহীন ভাবে বাজতে থাকলে কেউ সুস্থ থাকতে পারে? রোকেয়া হলে আমরা যারা থাকি তাদের উপর এটা রীতিমতো অত্যাচার হচ্ছে।’

আরেক নারী শিক্ষার্থী লিখেন, ‘কারও পরীক্ষা, কেউ ডিপার্টমেন্টের রিপোর্ট, থিসিস এবং পড়াশোনা করছেন। এসবের কথা চিন্তা না করে শুধু আর্জেন্টিনা -ব্রাজিল এর খেলা বলে অনবরত সন্ধ্যা থেকে সারারাত বাঁশি বাজানো, আর কেউ কিছুই বলছে না, প্রশাসনও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে দেখে আমি হতবাক। সকালে অনেকের ক্লাস থাকে, রাতে ঘুমাতে না পারলে ক্লাসেও সমস্যা হয়। নাকি বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পড়াশোনার পরিবেশের চাইতে সমর্থকদের উচ্ছৃঙ্খল পরিবেশ রক্ষা করবে!’

ফাহমিদা নুভা নামের অন্য এক শিক্ষার্থী লিখেন, ‘প্রতিদিন ভুভুজেলা এবং বাইকের অতিরিক্ত হর্নে আমাদের রীতিমতো কান্না পাচ্ছে, আমরা পড়তে পারছি না, ঘুমাতে পারছি না, মাথার যন্ত্রণায় আমরা বিরক্ত। দয়া করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ঠিক রাখার জন্য, বিশেষ করে এই পে পু অসহ্যকর আওয়াজ বন্ধের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বিনীত অনুরোধ করছি।’

জান্নাতুল বুশরা নামের এক শিক্ষার্থী লিখেন, ‘মানুষ রীতিমতো অসুস্থ হয়ে যাবে। রোকেয়া হল মানেই তো এই শব্দ দূষণের মেন্ডাটরি ভিকটিম। একাধারে কীভাবে এরা বাঁশি বাজাতেই থাকে, ননস্টপ! রুমের দরজা জানালা বন্ধ করে বসেও মাথা ধরা থেকে বাঁচতে পারলামনা একদিনও। এদের কি মাথাও ধরে না? এত উল্লাসই বা আসে কীভাবে, কোত্থেকে?’

আসমা আক্তার লিখেন, ‘শামসুন্নাহার হল আর রোকেয়া হলের মেয়েদের মানুষ মনে করে না। আর পারি না। কোনো একদিন এই শব্দে ব্রেইন স্ট্রোক করব। দিনে সম্মেলন, সন্ধ্যায় টিএসসির গান আর রাতে এই বাঁশি মিছিল। আল্লাহ যদি বাঁচায়। এছাড়া কোনো উপায় দেখি না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, আমরা প্রথমে আহবান জানিয়ে সহযোগিতা চেয়েছি। এরপর যদি এটির মাত্রা না কমে তাহলে পরবর্তী খেলার আগে থেকে হয়ত ক্যাম্পাসে প্রবেশাধিকার সীমিতকরণের চিন্তাভাবনা করতে হবে।

শব্দ দূষনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমার ধারণা সমাগম কমে গেলে শব্দ দূষণটাও কমে যাবে। ভুভুজেলা বাজানো আইনগতভাবে নিষেধ। অলরেডি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে কথা হয়েছে। তাদের ভিজিবল উপস্থিতি থাকবে, মোবাইল টিমও থাকবে। কালকের খেলায় আমিও যাবো।

তিনি বলেন, কেউ ভুভুজেলা বিক্রি বা বাজিয়ে ক্যাম্পাসে শব্দদূষনের সাথে যেন শিক্ষার্থীরা জড়িত না থাকে সেজন্য আমরা সবার সহযোগিতা চাচ্ছি। যদি সহযোগিতা না পায় তাহলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণের দিকে অগ্রসর হবো।

এ বিভাগের আরো খবর