বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পুলিশ ভ্যানে সুরাইয়ার সঙ্গের শিশুটি ছাড়া পেয়েছে, পরীক্ষাও দিয়েছে

  •    
  • ৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৮:৩০

নিউজবাংলার অনুসন্ধানে জানা গেছে, গ্রেপ্তারের সময় সুরাইয়ার সঙ্গে ছিলেন তার বোনের ছেলে। থানায় নেয়ার পর বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয় বলে জানিয়েছেন শিশুটির স্বজনেরা। তবে সুরাইয়াকে সংঘর্ষের মামলায় আসামি করা হয়েছে।  

রাজধানীর নয়াপল্টনে বুধবার বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের সময় গ্রেপ্তার হন বগুড়া জেলা মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ‍সুরাইয়া জেরিন রনি। তাকে পুলিশ ভ্যানে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময়কার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

সুরাইয়া পুলিশ ভ্যান থেকে সাংবাদিকদের উদ্দেশে চিৎকার করে বলছিলেন, ‘আমি বগুড়া থেকে এসেছি, আমার বাচ্চাটাকে ছেড়ে দিতে বলেন আপনারা।’

আপনার ছেলের নাম কী?- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সুরাইয়া বলেন, ‘আমার বাচ্চাটার পরীক্ষা চলতেছে…।’

নিউজবাংলার অনুসন্ধানে জানা গেছে, গ্রেপ্তারের সময় সুরাইয়ার সঙ্গে ছিলেন তার বোনের ছেলে। থানায় নেয়ার পর বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয় বলে জানিয়েছেন শিশুটির স্বজনেরা। তবে সুরাইয়াকে সংঘর্ষের মামলায় আসামি করা হয়েছে।

সুরাইয়া জেরিন রনি বগুড়ার গাবতলী দুর্গাহাটা ইউনিয়নের বাইগুনি গ্রামের মফিজুর রহমান ফুটুর মেয়ে। তারা তিন বোন ও এক ভাই। সুরাইয়া জেলা মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি গাবতলী উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন।

জানা গেছে, সুরাইয়ার কোনো ছেলে সন্তান নেই। তার রয়েছে একটি মেয়ে সন্তান। সুরাইয়ার বিয়ে হয় গাবতলী উপজেলার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বপাড়া এলাকার লিটন হোসেনের সঙ্গে। তবে বর্তমানে তারা শহরের নারুলী এলাকায় বসবাস করছেন।

লিটন এক সময়ে গাবতলী পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ছিলেন। তবে এখন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত লিটন গাবতলী বাজার এলাকায় স্যানিটারি, টাইলস সামগ্রীর ব্যবসা করেন।

সুরাইয়ার চাচাতো ভাই আতিকুর রহমান রিমন বগুড়া জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঢাকায় আটক হওয়া ওই ছেলে সুরাইয়া আপুর নয়। তারই ইমিডিয়েট ছোট তানিয়া আক্তার টনি আপুর ছেলে। তাকে নিজের সন্তানের মতোই দেখে সুরাইয়া আপু।

‘ছেলেটি ঢাকার মিরপুরের মনিপুর স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। ওরা থাকে মিরপুর এলাকায়। আর সুরাইয়া আপুর একমাত্র মেয়ে তাসফিয়া শেহরিন বগুড়ার আমর্ড ব্যাটালিয়ন স্কুল ও কলেজে পড়ছে।’

শিশুটিকে নিয়ে নয়াপল্টনে সুরাইয়ার যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে রিমন বলেন, ‘আপু হয়তো বুঝতে পারেনি। ঘুরতে ঘুরতে বাচ্চা ছেলেকে নিয়ে ওদিকে চলে গিয়েছিল। তবে জানতে পেরেছি পুলিশ রাতেই শিশুটিকে ছেড়ে দিয়েছে।’

সুরাইয়ার বাবা মফিজুর রহমান ফুটু নিউজবাংলাকে জানান, শিশুটি তার মা তানিয়া আক্তার টনি ও বাবা আবু রায়হান বিপুলের সঙ্গে ঢাকার মিরপুর ১ নম্বরে থাকে।

তিনি বলেন, ‘আমার নাতি আজ (বৃহস্পতিবার) পরীক্ষা দিয়েছে। আজকেই শেষ পরীক্ষা ছিল। কোন বিষয়ের পরীক্ষা তা তো মনে নেই, টেনশনে এগুলা কি মনে থাকে?’

সুরাইয়াকে বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতে নেয়ার কথা শুনেছেন বলেও জানান তার বাবা

সুরাইয়া কোর্টে আছে। এখনও চালান করেনি। মাগরিবের নামাজের আগেই শুনেছে বলে জানান তার বাবা মফিজুর রহমান ফুটু।

সুরাইয়ার স্বামী লিটন হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ চেষ্টা করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

সুরাইয়া জেরিন রনি বগুড়ায় মহিলা দলের সঙ্গে প্রায় ৬ বছর ধরে সম্পৃক্ত বলে নিশ্চিত করেন জেলা মহিলা দলের সভাপতি লাভলী রহমান। তিনিও জানান, আটক ছেলেটি সুরাইয়ার বোনের সন্তান।

লাভলী রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সুরাইয়া বুধবার ঢাকার নয়াপল্টনে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা একটি ছেলেকেও পুলিশ আটক করে। শিশুটি সুরাইয়ার বোনের ছেলে। সে ঢাকার মনিপুর স্কুলে পড়ালেখা করে।’

বগুড়া মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুরাইয়া জেরিন রনি এর আগে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটুক্তি করে আলোচনায় আসেন। চলতি বছরের ২৭ মে বগুড়ার গাবতলী উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে এই কটূক্তি করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।

রনির বক্তব্যের প্রতিবাদে গত ২৯ মে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয় গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ। সেই কর্মসূচি কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষও হয়।

এরপর ৩১ মে প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি ও গাবতলীতে আওয়ামী লীগের ওপর হামলার অভিযোগে সুরাইয়া জেরিন রনিসহ ১৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন গাবতলী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজার পাইকার।

সেই মামলায় জামিন নিতে গেলে রনিকে কারাগারে পাঠায় আদালত। এরপর আগস্টে তিনি তিনি জামিনে মুক্তি পান।

এ বিভাগের আরো খবর