বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সংঘর্ষ শুরু বিএনপির হামলায়, মকবুল নিহত ককটেলে: তথ্যমন্ত্রী

  •    
  • ৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৫:৫৩

‘তারা নয়াপল্টনে দুপুর থেকে জমায়েত হতে থাকে। পুলিশের পক্ষ থেকে যখন নয়াপল্টনের একটি জায়গা বন্ধ হয়ে যায়, তখন বারবার অনুরোধ জানানো হয় তারা যেন একটি লেন ছেড়ে দেয়। কিন্তু সেই অনুরোধ তারা উপেক্ষা করে। এরপর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মতিঝিলের ডিসি জনাব হায়াত নিজে যান এবং তাদের অনুরোধ করেন যেন একটি লেন ছেড়ে দেয়া হয়। তিনি যখন এ অনুরোধ জানাচ্ছিলেন তখন তাকে পেছন থেকে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়। তার বডিগার্ডকেও দা দিয়ে আঘাত করা হয়। এই থেকে শুরু।’

নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের দায় বিএনপিকে দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তার অভিযোগ, পুলিশের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে পেছন থেকে তাকে ও তার দেহরক্ষীকে আঘাত করা হয়।

সংঘর্ষে প্রাণ হারানো মকবুল হোসেন বিএনপির কেউ নয় বলেও দাবি করেছেন মন্ত্রী। বলেন, তার মৃত্যু হয়েছে ককটেল বিস্ফোরণে।

১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে বিএনপির ডাকা সমাবেশের স্থান নিয়ে বিরোধের মধ্যে নয়াপল্টনের এই সংঘর্ষ নিয়ে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মন্ত্রী।

বিএনপি সমাবেশটি করতে চায় নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে। তবে তাদের অনুমতি দেয়া হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। অনুমতি না পেলেও নয়াপল্টনেই জড়ো হওয়ার ঘোষণা দিয়ে নেতা-কর্মীরা যখন সড়কে অবস্থান নিচ্ছিলেন, সে সময় বাধা দিলে বাঁধে সংঘর্ষ। প্রাণ হারান একজন, গ্রেপ্তার হন সাড়ে চার শ নেতা-কর্মী।

বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে ককটেল উদ্ধারের কথা জানানো হয়। চাল, ডাল, তেল, মসলা ছাড়াও রান্না করা কয়েক ডেকচি খিচুড়িও জব্দ করা হয়।

এ প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আগে থেকেই বলছিলাম, বিএনপি সমাবেশ নয় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়। বিএনপি সমাবেশের ডাক দিয়েছে ১০ ডিসেম্বর, গতকাল ছিল ৭ ডিসেম্বর। এই দিনই তারা নয়াপল্টনে দুপুর থেকে জমায়েত হতে থাকে। পুলিশের পক্ষ থেকে যখন নয়াপল্টনের একটি জায়গা বন্ধ হয়ে যায়, তখন বারবার অনুরোধ জানানো হয় তারা যেন একটি লেন ছেড়ে দেয়।

‘কিন্তু সেই অনুরোধ তারা উপেক্ষা করে। এরপর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মতিঝিলের ডিসি জনাব হায়াত নিজে যান এবং তাদের অনুরোধ করেন যেন একটি লেন ছেড়ে দেয়া হয়। তিনি যখন এ অনুরোধ জানাচ্ছিলেন তখন তাকে পেছন থেকে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়। তার বডিগার্ডকেও দা দিয়ে আঘাত করা হয়। এই থেকে শুরু। ডিসি হায়াত, তার বডিগার্ডসহ পুলিশের ৮ সদস্য এখন হাসপাতালে ভর্তি। মোট ৩৫ পুলিশ আহত হয়েছে।’

পুলিশ বাধ্য হয়ে ব্যবস্থা নিয়েছে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশের ওপর ইট নিক্ষেপ ও হামলা চালানো হলে পুলিশ বাধ্য হয়ে টিয়ার গ্যাস ছুড়তে বাধ্য হয়। যখন পুলিশ বিএনপি কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে সেখানে গিয়ে অবিস্ফোরিত ১৫টি ককটেল, ২ লাখ পানির বোতল, ১৬০ বস্তা চাল, রান্না করা খিচুড়ি পায়। ২ লাখ নগদ টাকাও সেখানে পাওয়া যায়।

‘তাদের বারবারই বলা হয়েছে মাঠ ব্যবহার করার জন্য। জনসভা হয় মাঠে। তারা মাঠ ব্যবহার করেই সারা দেশে ৯টি সমাবেশ করেছে। সরকার তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে, পুলিশ নিরাপত্তা দিয়েছে। এ জন্যই তারা অত্যন্ত নির্বিঘ্নে সমাবেশগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে করেছে।’

মকবুলের মৃত্যু ককটেলের আঘাতেসংঘর্ষে প্রাণহানি নিয়েও কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘তারা সেখানে অনেকগুলো ককটেল বিস্ফোরণ করেছে। একজন সাধারণ নাগরিক মৃত্যুবরণ করেছে। সেটির পোস্টমর্টেম রিপোর্ট আজ পাওয়া যাবে।

‘পুলিশ ধারণা করছে সে ককটেল বিস্ফোরণে মারা গেছে। এভাবেই দেশে একটি বিশৃঙ্খলা তারা করতে শুরু করেছে।’

সচিবালয়ে কথা বলছেন তথ্যমন্ত্রী

বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীকে গ্রেপ্তারের বিষয়েও কথা বলেন হাছান। বলেন, ‘বিএনপি নেতা যারা বড় গলায় কথা বলছে, তারা সবাই অগ্নিসন্ত্রাস ঘটানোর জন্য অর্থদাতা ও হুকুমদাতা হিসেবে বিভিন্ন মামলার আসামি। রিজভী সাহেব গতকাল মামলার ওয়ারেন্ট নিয়ে সেখানে গিয়েছিলেন। আরও বেশ কয়েকজন ওয়ারেন্ট নিয়ে সেখানে গিয়েছিলেন।

‘পুলিশের নাকের ডগায় যখন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ঘুরে বেড়ায়, তখন তো পুলিশের কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়। যখন কোনো নেতা তাজা ককটেল নিয়ে কার্যালয়ের ভেতরে বসে থাকে, তখন সেই নেতার বিরুদ্ধে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হয়। সরকার সেই ব্যবস্থাই গ্রহণ করেছে।’

‘বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দীর বিকল্প দেয়া হয়েছিল’সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে না চাইলে বিএনপি কোথায় জমায়েত হতে পারে, সে বিষয়ে একাধিক বিকল্প স্থান দেয়া হয়েছিল বলেও জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘তারা সব সময় বলে এসেছে, ১০ লাখ মানুষের সমবেশ তারা করবে। নয়াপল্টনে ১০-২০ হাজার মানুষ ধরে। তারা যাতে এই সমাবেশ করতে পারে এ জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বরাদ্দ দেয়া হয়।

‘যখন তারা এখানে যেতে অনীহা প্রকাশ করে তখন মিরপুরের পল্লবী মাঠ, কালশী মাঠ, ইজতেমা মাঠ, বাণিজ্য মেলার মাঠ, এগুলো তাদের ব্যবহার করতে বলা হয়। কিন্তু তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অসৎ উদ্দেশ্যে নয়াপল্টনে সমাবেশ করবে বলে ঘোষণা দেয়।

‘আমরা সব সময় বলে এসেছি বিশৃঙ্খলা তৈরির উদ্দেশ্যেই তারা নয়াপল্টনে সমাবেশের জন্য গোঁ ধরে। অথচ তাদের বড় মাঠ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এবং বিকল্প অনেকগুলো প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। কোনোটাই তারা নিতে চায়নি।’

হাছান বলেন, ‘তারা কোনো মাঠে সমাবেশ করতে চাইলে সরকার তাদের পরিপূর্ণ সহযোগিতা করত, নিরাপত্তা দেয়া হতো। তারা সেটি না করে পরিকল্পিতভাবে গতকালের ঘটনা ঘটিয়েছে। এটার জন্য বিএনপির নেতারাই দায়ী।

‘তারা গত কিছুদিন ধরে উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে। তারা শান্তি চায় না বলেই গতকাল তাণ্ডব ঘটিয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর