বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

খিচুড়ি খেয়ে সরকার হটানো যাবে না: প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৪:৪৩

‘চাল-ডাল দিয়ে খিচুড়ি খেয়ে সরকার হটানো যাবে না। যে হাত দিয়ে মারতে আসবে, সেই হাত ভেঙে দিতে হবে।…তারা সরকারকে উৎখাত করতে চায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। এ সরকার জনগণের সেবক। খিচুড়ি খাইয়ে সরকারের পতন ঘটানো সহজ নয়।’

বিএনপি কার্যালয় থেকে চাল, ডালসহ রান্নার উপকরণ ও রান্না করা খিচুড়ি উদ্ধারের বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, চাল-ডাল দিয়ে খিচুড়ি খেয়ে সরকার হটানো যাবে না।

নয়াপল্টনে বুধবারের ঘটনা ‘বিএনপির টেস্ট কেস’ উল্লেখ করে নেতা-কর্মীদের সতর্ক করেন আওয়ামী লীগপ্রধান। সেই সঙ্গে বিএনপির বিষয়ে আরও কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দেন তিনি এই বলে যে ২০২২ পর্যন্ত অনেক সহ্য করেছেন। আর নয়।

১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের তিন দিন আগে বুধবার নয়াপল্টনে দলটির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের পরদিন দলীয় নেতাদের সঙ্গে এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনায় অংশ নেন শেখ হাসিনা।

আরও পড়ুন: বিএনপির কার্যালয় থেকে খিচুড়ি জব্দ

বৃহস্পতিবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়ররা যৌথ সভা করেন। তাতে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: বিটিভি

আগের দিন নয়াপল্টনে সংঘর্ষের পর বিএনপি কার্যালয় থেকে ১৭০ বস্তা চাল, ডাল, তেল মসলা এবং রান্না করা কয়েক ডেকচি খিচুড়ি উদ্ধার নিয়েও কথা বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘চাল-ডাল দিয়ে খিচুড়ি খেয়ে সরকার হটানো যাবে না। যে হাত দিয়ে মারতে আসবে, সেই হাত ভেঙে দিতে হবে।’

‘তারা সরকারকে উৎখাত করতে চায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। এ সরকার জনগণের সেবক। খিচুড়ি খাইয়ে সরকারের পতন ঘটানো সহজ নয়’- একই প্রসঙ্গে বলেন তিনি।

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ। ছবি: নিউজবাংলা

বিএনপির বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত

বিএনপির বিরুদ্ধে সরকার আরও কঠোর হবে ইঙ্গিত দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বারবার আঘাত করলে আমরা সহ্য করব না। আমরা ২০২২ পর্যন্ত সহ্য করেছি। এখন আর করব না। যে হাত দিয়ে আগুন দিতে আসবে, সে হাত দিয়ে তাদের পোড়াতে হবে। ওদের কিসের ক্ষমা। বসে বসে আর মার খাওয়া যাবে না। গণতন্ত্র তাদের মুখে মানায় না।

‘নেতা-কর্মীদের বলছি, সবাই প্রস্তুত থাকুন। মেহনতি মানুষের ওপর আঘাত করলে তাদের ক্ষমা নেই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ভেসে আসেনি। আওয়ামী লীগ কারও পকেটের সংগঠন না। বিএনপির জন্ম জিয়াউর রহমানের পকেট থেকে। আওয়ামী লীগের জন্ম রাজপথে, জনগণের হাতে।’

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে গত ১২ অক্টোবর থেকে বিএনপি ধারাবাহিকভাবে বিভাগীয় শহরগুলোতে যে সমাবেশ করছে তার অংশ হিসেবে আগামী শনিবার ঢাকায় জমায়েতের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তবে এই জনসভার স্থল নিয়ে তৈরি হয়েছে বিরোধ। বিএনপি সমাবেশটি করতে চায় নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে। তবে পুলিশ অনুমতি দিয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে, যেখানে যেতে আপত্তি আছে দলটির।

বিএনপির পক্ষ থেকে এরপর মৌখিকভাবে আরামবাগে সমাবেশ করতে চেয়েছিল, তবে তাদের মৌখিকভাবেই সেই আবেদন নাকচ করেছে।

এরপর পুলিশের অনুমতি ছাড়াই সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়ার পর বিএনপির নেতা-কর্মীরা মঙ্গলবার রাত থেকেই নয়াপল্টনে জড়ো হতে থাকে। বুধবার সকাল থেকে দুটি ট্রাকে অস্থায়ী মঞ্চ বানিয়ে চলছিল বক্তৃতাপর্ব। দুপুরের পর সামনের সড়কে ক্রমেই বাড়তে থাকে নেতা-কর্মীর ভিড়। পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতেই শুরু হয় সংঘর্ষ।

পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল, কাঁদানে গ্যাস আর রাবার বুলেটে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় এলাকাটি। মৃত্যু হয় একজনের। পরে বিএনপি কার্যালয়ে হানা দিয়ে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আটক করা হয় ১০ ডিসেম্বর থেকে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশ চালানোর ঘোষণা দেয়া আমান উল্লাহ আমান ও শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিকেও। দিন শেষে আটকের সংখ্যাটি ছড়ায় ৩০০।

বিএনপি কার্যালয় থেকে জব্দ করা হয় ১৭০ বস্তা চালসহ রান্নার উপকরণ এবং কয়েক ডেকচি রান্না করা খিচুড়ি। ২৫ থেকে ৩০টি ককটেল উদ্ধার করে সেগুলো নিরাপদে বিস্ফোরণ করিয়ে নিষ্ক্রিয় করার কথাও জানানো হয়।

বুধবারের এই সংঘর্ষের দায় পুরোটাই বিএনপিকে দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘তারা (নয়াপল্টনে বিএনপি) বিআরটিসির বাস পুড়িয়েছে। এটা তাদের টেস্ট ছিল। নেতা-কর্মীদের বলছি, সবাই প্রস্তুত থাকুন। মেহনতি মানুষের ওপর আঘাত করলে তাদের ক্ষমা নেই।’

‘ভোট চুরি নয়, আ.লীগে ভোট সংরক্ষণ করে’

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ভোটে কারচুপির যে অভিযোগ বিএনপি গত কয়েক বছর ধরে করে আসছে, সেটিরও জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের ভোট চুরি করে না। জনগণের ভোট জনগণের হাতে তুলে দেয়। বিএনপির স্বভাব তো যায় না। তারা ২০০১ সালে গ্যাস দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে ভোট চুরি করে ক্ষমতায় আসে।‘

বিএনপি ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করেছিল অভিযোগ করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা সেসবের প্রতিশোধ নেননি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সে সময় আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর অত্যাচার করা হয়েছে। এখানে নাসিম আছে, সাবের হোসেন চৌধুরীর ওপর যে অত্যাচার করা হয়, বিএনপি তো মনে করেছিল তারা মারা গেছে। বিএনপি আমাদের প্রতিটি নেতা-কর্মীর ওপর নির্যাতন করেছে।

‘২০০১ সালের নির্বাচনের পরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাড়ি দখল করে পুকুর কেটে কলাগাছ লাগানো হয়েছিল। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর আমরা প্রতিশোধ নিতে পারতাম, কিন্তু আমরা তা করিনি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি ২০০১ সালে লবিস্ট নিয়োগ করেছিল। আমি, আমার বোন কোথায় টাকা রেখেছি খোঁজ করেছে। কিন্তু কিছুই পায়নি। আসলে তারা লুটে খেতে ক্ষমতায় এসেছিল কিন্তু আওয়ামী লীগ দিতে এসেছে।’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যেদের মধ্যে সভায় অংশ নেন বেগম মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান ও কামরুল ইসলাম।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে ছিলেন মাহবুব উল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যে ছিলেন আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সাখাওয়াত হোসেন শফিক।

আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আব্দুস সবুর, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাশও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর