বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রথম ধাপে ২৪ জন যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে।
এমিরেটস এয়ারলাইনসের ইকে ৫৮৫ ফ্লাইটে করে তারা বৃহস্পতিবার রাত ১টায় ঢাকা ছাড়বেন বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর সূত্র।
ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওম-এর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটি যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে ৬২ রোহিঙ্গাকে পাইলটিং ভিত্তিতে তৃতীয় দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়ের বিষয়ে কাজ করছে ঢাকা ও ওয়াশিংটন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র বছরে ৩০০ থেকে ৮০০ রোহিঙ্গা নেবে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
ওই দিন ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলিয়েটা নয়েস বলেন, ‘দীর্ঘায়িত হওয়া রোহিঙ্গা সংকটের গুরুত্বপূর্ণ সমাধান হচ্ছে তাদের নিরাপদে, স্বেচ্ছা ও সম্মানজনকভাবে নিজ দেশে ফেরানো এবং তা হতে হবে টেকসই। যখন সেই সমাধান হচ্ছে না, তখন অন্য সমাধান প্রয়োজন। বিশেষ করে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের জন্য বাড়তি সমাধান দরকার।’
নয়েসের সঙ্গে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, আগামী এক বছরে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির থেকে ৩০০ থেকে ৮০০ রোহিঙ্গাকে নিজ দেশে আশ্রয় দেবে যুক্তরাষ্ট্র। পরীক্ষামূলক ও পাইলট প্রকল্প হিসেবে এসব রোহিঙ্গাকে যুক্তরাষ্ট্রে নেয়া হবে।
বাংলাদেশ চায় ২০১৭ সালের আগে আসা রোহিঙ্গাদের থেকে এই তালিকা করা হোক। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব, ২০১৭ সালের আগস্টে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে অধিক ঝুঁকিতে থাকাদের তালিকা করার।
এদিকে বৃহস্পতিবার কক্সবাজারে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনকে বলেছিলাম, আপনারা এক লাখ রোহিঙ্গা নেন।’
ব্লিনকেনের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী সফরে আসেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘১২ লাখ রোহিঙ্গার দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্রের নেয়া উচিত। বাংলাদেশের এতটা ভার বহন সম্ভব নয়। বন্ধু দেশগুলোকেও আমরা একই অনুরোধ করি।
‘মিয়ানমার বলেছে, ২০১৬ সালের পরে যারা এসেছে, যাচাই-বাছাইয়ের পর তাদের তারা নেবে। তাই আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছি, আগে থেকে যে রোহিঙ্গারা এখানে আছে তাদের আগে নিতে হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘৬২ জনের একটি লিস্ট হয়েছিল, প্রথম ধাপে ২৪ জনকে নেবে যুক্তরাষ্ট্র। ১ লাখ ২৫ হাজার রোহিঙ্গাকে সারা বিশ্ব থেকে নেবে। সেটিরই অংশ হিসেবে তাদের নেয়া হচ্ছে।’
তবে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত নেয়াই আসল সমাধান বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে বলে কথা দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তা দেখা যাচ্ছে না।’