বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আগাম বাঙ্গি চাষে সাত্তার মিয়ার তৃপ্তির হাসি

  •    
  • ৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ১২:০২

কৃষক সাত্তার জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের সময় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। পানিতে তলিয়ে যায় বাঙ্গির চারাও। জমির পানি সরানো, পোকার আক্রমণ থেকে চারা রক্ষায় কত কী যে করতে হয়েছে। তখন অনেকটা আশা ছেড়ে দেয়া জমিতে এখন এমন ফলনে স্বস্তি এসেছে।

দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ। নিবিড় মনে কাজ করছেন কৃষকরা। জমির আইলে পানির জগ-মগ রাখা। কৃষকরা কাজের ফাঁকে একটু জিরিয়ে নিয়ে আবারও মনোনিবেশ করছেন ফসলের সেবায়।

কুমিল্লা তিতাস উপজেলায় দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠে ব্যস্ত কৃষকদের একজন সাত্তার মিয়া। আগাম জাতের বাঙ্গি চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি।

সাত্তারের ফসলের মাঠে বড় বড় সবুজ বাঙ্গি দেখতে এলাকার লোকজন আসেন। বাঙ্গি সংগ্রহ করতে গিয়ে সাত্তারের মুখের কোণে হাসি ফোটে। এ হাসি তৃপ্তির হাসি।

তবে তার জমিতে সবুজ বাঙ্গির এমন ফলনের নেপথ্যের কাহিনীটা অনেকটা যুদ্ধ জয়ের।

তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের সময় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। পানিতে তলিয়ে যায় বাঙ্গির চারাও। জমির পানি সরানো, পোকার আক্রমণ থেকে চারা রক্ষায় কত কী যে করতে হয়েছে। তখন অনেকটা আশা ছেড়ে দেয়া জমিতে এখন এমন ফলনে স্বস্তি এসেছে।

তিতাস উপজেলা ও আশপাশের উপজেলায় প্রতিদিনই বাজারে বিক্রি হচ্ছে আগাম জাতের এ বাঙ্গি। ধরনভেদে প্রতিটি বাঙ্গি ২০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

কৃষক সাত্তার মিয়া বলেন, ‘প্রতি বছরই আমি বাঙ্গি চাষ করে থাকি। গত বছর মৌসুমে বাঙ্গি চাষ করি। তবে গত বছরই সিদ্ধান্ত নেই এবার আগাম জাতের বাঙ্গি চাষ করব। সে অনুযায়ী মাসদুয়েক আগে জমি প্রস্তুত করি। বীজ রোপণের পর চারা উঁকি দেয়। আমিও জমিতে যত্ন বাড়িয়ে দেই। তবে আমার স্বপ্নে এসে হামলা করে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। পানিতে তলিয়ে যায় জমি

‘পরে পানি সরে গেলে আমি দেখলাম গাছগুলোর খুব একটা ক্ষতি হয়নি। আবার এক বুক আশা নিয়ে মাঠে নেমে পড়লাম। কৃষি অফিসের পরামর্শে আমি শুধু তিতা পোকার ওষুধ দিয়েছি। চারা তৈরি থেকে জমি প্রস্তুতসহ প্রায় ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার টাকার বাঙ্গি বিক্রি করেছি।’

তিনি আশা করছেন, আগামী দুই মাসে আরও প্রায় লাখখানেক টাকা বিক্রি হবে। বর্তমানে একটি বাঙ্গির সাইজ অনুসারে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

কালাইগোবিন্দপুর উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. কাউছার আহমেদ জানান, গত ২৪ অক্টোবর সিত্রাংয়ের ক্ষয়ক্ষতি পর্যবেক্ষণ করতে মাঠ জরিপে মাঠে যাই। সাধারণত কুমড়া জাতীয় গাছ এক দিনের বেশি পানি সহ্য করে না। গাছ নেতিয়ে মারা যায়। জমির অবস্থা দেখে আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছিলাম। অবশেষে দ্রুত পানি নেমে যাওয়ায় তার জমিতে আশানুরূপ ফলন হয়েছে।

তিতাস উপজেলা কৃষি অফিসার মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘সাত্তার মিয়া একজন কৃষি উদ্যোক্তা। তিনি শুধু আগাম বাঙ্গিই নয়, প্রতি বছর আগাম জাতের সরিষা, মিষ্টিকুমড়া, বিভিন্ন জাতের আলু চাষ করেন। কৃষিকে ভালোবাসা এই মানুষটি পুরস্কারও পেয়েছেন।

সাত্তার মিয়ার মতো যারাই কৃষিতে আগ্রহী হচ্ছেন আমরা তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করি।’

এ বিভাগের আরো খবর