সব সংস্থাকে নিজেদের খাল, জলাশয় ও ডোবা নিজেদেরই পরিষ্কার রাখতে হবে এবং নিজেদের অধীন এলাকা পরিষ্কার রাখার দায়িত্বও নিতে হবে।
বুধবার সকালে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে কুর্মিটোলায় সিভিল অ্যাভিয়েশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ সংলগ্ন কাওলা খাল এলাকায় মশার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।
ডিএনসিসির স্বাস্থ্য বিভাগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও প্রকৌশল বিভাগের সমন্বয়ে ১৫ দিনব্যাপী সমন্বিত মশক নিধন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তিনি।
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘এয়ারপোর্টের পার্শ্ববর্তী খাল, জলাশয় ও ডোবাগুলোতেই মশার চাষ হচ্ছে। এগুলো সিভিল অ্যাভিয়েশন, রাজউক, গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষসহ অন্য সংস্থার অধীন। সরেজমিনে এসে দেখলাম এগুলোতে প্রচুর পরিমানে কচুরিপানা।
‘এই কচুরিপানা পরিষ্কার না করলে আমরা সিটি কর্পোরেশন থেকে যতই মশার ওষুধ দেই না কেন মশা নিধন করা সম্ভব না। সব সংস্থাকে নিজেদের খাল, জলাশয় ও ডোবা পরিষ্কার করতে হবে। সংস্থাগুলোকে নিজেদের অধীন এলাকা পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব নিতে হবে।’
এ সময় মেয়র আরও বলেন, ‘সংস্থাগুলো সমন্বিতভাবে কাজ না করলে খাল ও জলাশয় থেকে মশা নিধন খুব দুরুহ কাজ। সিটি করপোরেশনের একার পক্ষে এটি সম্ভব না। আমরা বারবার বলেও ব্যর্থ হচ্ছি। বারবার বলা শর্তেও কেউ কর্ণপাত করছে না। এটি একজন আরেকজনকে দোষারোপ করার বিষয় নয়। সব সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে তাহলেই সমাধান সম্ভব।’
আন্তমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘আন্তমন্ত্রণালয় মিটিং হয়েছে। তাতে সিভিল অ্যাভিয়েশন, রাজউক, রেলওয়ে, পানি উন্নয়ন বোর্ড অংশ নিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যার যার জায়গার কচুরিপানা নিজেরা পরিষ্কার করবে।
‘সবাইকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সিভিল অ্যাভিয়েশনের জায়গা আপনারা নিজেরা পরিষ্কার করে দেন। সিভিল অ্যাভিয়েশন পরিষ্কার করতে না পারলে ওই জায়গা আমাদের দিয়ে দিক। আমরা পরিষ্কার করে নেব।’
আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘খাল তো আমরা পরিষ্কার করেছি। আগে কী অবস্থা ছিল আপনারা দেখেছেন। জায়গার দায়িত্ব না নিতে পারলে কাগজে রেজিস্ট্রি করে দেন। আমরা পরিচ্ছন্ন রাখব। যে জায়গায় বা জলাশয়ে কচুরিপানা নেই, সেখানে আমরা মশার ওষুধ স্প্রে করে দেব। কিন্তু যেখানে কচুরিপানা দিয়ে ভর্তি, সেখানে স্প্রে করব কীভাবে!’
এ সময় মেয়র সিভিল অ্যাভিয়েশন ও রাজউকের প্রতিনিধিদের সাত দিনের মধ্যে জলাশয়ের সকল কচুরিপানা পরিষ্কার করার আহবান করেন। সাত দিনের মধ্যে কচুরিপানা পরিষ্কার না হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার হুশিয়ারি দেন তিনি।
বুধবার থেকে শুরু হওয়া সমন্বিত মশক নিধন কার্যক্রম একযোগে প্রতিটি ওয়ার্ডে ১৫দিন চলবে। এ কার্যক্রম উদ্বোধন শেষে ডিএনসিসি মেয়র সিভিল অ্যাভিয়েশনের অধীন জলাশয় ও এয়ারর্পোট বাউন্ডারি সংলগ্ন খাল, রাজউকের অধীন উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের ২ নম্বর ব্রিজ পাড়ের খাল পরিদর্শন করেন।
অভিযানে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, ডিএনসিসি মেয়রের উপদেষ্টা অধ্যাপক কবিরুল বাসার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলামসহ স্থানীয় কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।