বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘সরকারকে ধান দিতে গেলে মরে যাব’

  •    
  • ৭ ডিসেম্বর, ২০২২ ১১:৩২

কৃষক আরফান আলী বলেন, ‘সরকার যে ধানের দাম ঠিক করেছে, তাতে সরকারকে ধান দিলে লাভের পরিবর্তে লোকসান বেশি হবে। অথচ বাজারে ধানের দাম বেশি। সরকারকে ধান দিতে গেলে তো আমরা মরে যাব।’

দিনাজপুরের কৃষক আরফান আলী। আমন মৌসুমে বাজারে আগাম ধান বিক্রি করছেন বেশি দামে। এতে বেশ খুশি তিনি। ভালো দাম পেয়ে তার মতো খুশি জেলার অন্যান্য কৃষকরাও। বেশি দাম পাওয়ায় সরকারের নির্ধারিত দামে ধান বিক্রি করতে অনীহা জেলাটির কৃষকদের। কারণ হিসেবে আরফান বলেন, ‘আমন মৌসুমে ঠিকমত বৃষ্টি হয়নি। পাম্প দিয়ে সেচ দিতে হয়েছে। তার উপর সার ও কীটনাশকের দাম বেশি। আবার সরকার যে ধানের দাম ঠিক করেছে, তাতে সরকারকে ধান দিলে লাভের পরিবর্তে লোকসান বেশি হবে। সরকারকে ধান দিতে গেলে তো আমরা মরে যাব।’

এদিকে সরকারের নির্ধারিত দামের চেয়ে বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় জেলাটিতে খাদ্য বিভাগের চলতি আমন সংগ্রহ অভিযানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

দেশের শীর্ষ ধান ও চাল উৎপাদনকারী হিসেবে পরিচিত জেলাটির বাজারগুলোতে আমন ধান উঠতে শুরু করেছে। আগাম হওয়ায় বাজারে ধানের দাম বেশি পাচ্ছেন কৃষকরা। তবে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় জেলাটিতে খাদ্য বিভাগের চলতি আমন সংগ্রহ অভিযানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

মিল মালিকরা বলছেন, বর্তমান বাজার অনুযায়ী সরকারকে চাল সরবরাহ করতে গেলে তাদের গুনতে হবে বিশাল লোকসান। আর খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা আশা করছেন, পুরোদমে ধান কাটা-মাড়াই শুরু হলে ধানের বাজার স্বাভাবিক পর্যায়ে আসবে।

দিনাজপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের সূত্রে জানা যায়, কৃষকদের কাছ থেকে ২৮ টাকা কেজি দরে ১৪ হাজার ৪১৭ টন ধান এবং মিল মালিকদের কাছ থেকে ৪২ টাকা কেজি দরে ৪৭ হাজার ৬৮৮ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে জেলাটিতে আমন সংগ্রহ অভিযান চলছে। গত ১৭ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই অভিযান চলবে আগামি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

দিনাজপুরের বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারগুলোতে ৭৭ কেজির গুটিস্বর্ণ ধান বিক্রি করা হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ টাকা এবং বিনা-৭ জাতের ধান বিক্রি করা হচ্ছে ২ হাজার ৬৫০ টাকা। এই হিসাবে প্রতি কেজি মোটা ধানের দাম পড়ছে ৩১ থেকে ৩৪ টাকা। সরকারের খাদ্য অভিযানে ধান ও চালের দাম যে দর দেয়া হয়েছে তার চেয়ে বাজারে ৩ থেকে ৫ টাকা কেজি দরে বেশি পাচ্ছেন কৃষকরা।

কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি দেড় বিঘা জমিতে ধান আবাদ করেছি। ধান আবাদ করতে গিয়ে অনেক খরচ হয়েছে। সরকারকে ধান দিলে আমার কিছুই থাকবে না। বাজারে দাম বেশি। তাই বাজারে ধান বিক্রি করছি।’

বাংলাদেশ অটো-মেজর-হাসকিং মিল মালিক সমিতির সহ-সভাপতি সহিদুর রহমান পাটোয়ারী মোহন বলেন, ‘দেশের স্বার্থে বাজার থেকে বেশি দামে ধান কিনে সরকারকে চাল সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু বেশি দামে ধান কিনে লোকসান দিয়ে আর কত দিন সরকারকে চাল সরবরাহ করব। বাজারে ধানের দাম অনেক বেশি। সরকার কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনতে পারলেও মিল মালিকরা কিনতে পারবে না। খাদ্য বিভাগকে ধানের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। তাহলেই আমন সংগ্রহ অভিযান সফল হবে। নইলে সফল হবে না।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘চলতি মৌসুমে জেলায় ৮ হাজার টন চাল কেনার জন্য মিলারদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। ইতোমধ্যে ১ হাজার ৫০০ টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। বাজারে এখনও পুরো দমে ধান উঠতে শুরু করেনি। পুরোদমে ধান উঠতে শুরু করলে বাজারে ধানের দাম অনেক কমে আসবে। তাই এবছর ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান সফল হবে বলে আশা করছি।’

এ বিভাগের আরো খবর