ডাকাত আসার খবর জানিয়ে মঙ্গলবার মধ্যরাতে বরিশাল নগরীর বিভিন্ন মসজিদে মাইকিং করা হয়েছে, তবে পুলিশ বলছে, ডাকাতির কোনো খবর বাহিনীর কাছে নেই। এ ধরনের গুজব রটানো ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে কাজ চলছে।
বিভিন্ন এলাকার মসজিদ থেকে মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ডাকাত আসার বিষয়ে সতর্ক করা হয়।
নগরীর পশ্চিম কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা শামসুল আলম জানান, মসজিদের মাইক থেকে রাত ২টার দিকে এলাকায় ডাকাত প্রবেশের খবর প্রচার করা হয়। এতে কিছুক্ষণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের মসজিদের মাইক থেকেও একই ঘোষণা দেয়া হয়।
ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘সোয়া দুইটা থেকে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয়া হয় ডাকাত এলাকায় প্রবেশ করেছে; সবাই যেন সতর্ক থাকে। এতে কিছুক্ষণের মধ্যে এলাকায় হইচই পড়ে যায়। শহরে এমন খবর তো প্রথম শুনলাম।’
স্থানীয়দের ভাষ্য, নগরীর ভাটিখানা, নতুন বাজার, কাউনিয়া, মহাবাজ, কালুশাহ সড়ক, নথুল্লাবাদ, আলেকান্দা, লুৎফর রহমান সড়ক, কাশিপুর, বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা, দেহেরগতি, সদর উপজেলার রায়পাশা কড়াপুর, ষোলনা, লাকুটিয়াসহ নগরীর সব এলাকার মসজিদ থেকে এ ঘোষণা দেয়া হয়, তবে এ ঘোষণা শুরু হয় বাবুগঞ্জের দেহেরগতি থেকে।
নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দারা জানান, হঠাৎ মসজিদের মাইকে ডাকাতের কথায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তারা। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাহায্য চাওয়াসহ স্বজন, প্রতিবেশীদের খোঁজখবর নেন।
জানতে চাইলে বরিশাল মহানগরীর কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রহমান মুকুল জানান, ডাকাতির খবর তাদের কাছে নেই। বিষয়টি সম্পূর্ণ গুজব।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আজিমুল করিম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বরিশাল নগরীতে ডাকাতির বিষয়ে তেমন কোনো সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। অনেকে আতঙ্কিত হয়ে ফেসবুকে পোস্ট করছেন।
‘আমরা শুনেছি কেউ কেউ মসজিদে মাইকিং করছেন। সর্বত্র পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার ফজলুল করিম বলেন, ‘সম্ভবত গুজব ছড়ানো হয়েছে। প্রতিটি এলাকায় টহল দিচ্ছে পুলিশ। গুজব থেকে সকলে সতর্ক থাকুন।’
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সোহেল মারুফ বলেন, ‘জেলা পুলিশের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা মোড়ে মোড়ে টহল দিচ্ছে।
‘মাইকিং সম্পর্কে পুলিশের কাছে পরিষ্কার মেসেজ নেই, তবে মাইকিং হচ্ছে বলে তারা জানিয়েছেন। মাইকিংয়ের বিষয়টি পরিকল্পিত হতে পারে।’
বিএমপি কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মধ্যরাতে মসজিদের মাইকে ডাকাত পড়ার যে ঘোষণা দেয়া হয়েছে, তার কোনো ভিত্তি নেই। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াতে একটি চক্র স্রেফ গুজব রটিয়েছে। এতে কান দিয়ে নগরবাসী যেন আতঙ্কিত না হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। যারা এই গুজব ছড়িয়েছে তাদের চিহ্নিত করার জন্য পুলিশ কাজ করছে। পাশাপাশি নগরীতে রাতে পুলিশ টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।’