আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রথম ‘গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর ফর ডায়াবেটিস” হিসেবে ঘোষণা করেছে।
পর্তুগালের লিসবনে বাংলাদেশ দূতাবাসের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার রাতে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ডায়াবেটিস সম্মেলন-২০২২ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আইডিএফের সম্মাননাপত্র প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে পর্তুগালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান আইডিএফের সদ্য নির্বাচিত সভাপতি অধ্যাপক আকতার হোসেনের কাছ থেকে সম্মাননাপত্র গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে আইডিএফের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক অ্যান্ড্রু বোল্টন ও আইডিএফ প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ডায়াবেটিস নিয়ে জীবনযাপনকারীদের জীবনমান উন্নয়নে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ কোনো ব্যক্তিকে ‘গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর ফর ডায়াবেটিস’-এর সম্মানসূচক উপাধি দেয়া হয়ে থাকে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী দুই বছর ‘গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর ফর ডায়াবেটিস’ হিসেবে বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিস নিয়ে জীবনযাপনকারী মানুষের মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সম্মাননা গ্রহণকালে রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জনকেন্দ্রিক উন্নয়নের প্রবক্তা হিসেবে উল্লেখ করেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশেষত স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। বাংলাদেশ এর মাধ্যমে অভূতপূর্ব উন্নয়ন অর্জন করে উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য একটি রোল মডেলে পরিণত হয়েছে বলেও রাষ্ট্রদূত মত প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনকে এ সম্মাননার জন্য ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে শিশুসহ প্রায় ৮৫ লাখ আর গোটা পৃথিবীতে প্রায় ৪২ কোটি মানুষ ডায়াবেটিস এবং এ সম্পর্কিত অন্যান্য জটিলতা নিয়ে বসবাস করছেন। জনবান্ধব স্বাস্থ্যনীতির বাস্তবায়ন এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
‘বাংলাদেশ ডায়াবেটিস রোগীদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে এবং বিনামূল্যে ইনসুলিন সরবরাহ কার্যক্রমও শুরু করেছে। দেশব্যাপী ১৮০০-এর বেশি সুসজ্জিত কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেন্টারে প্রশিক্ষিত চিকিৎসাকর্মীরা ডায়াবেটিস রোগীদের সেবা দিয়ে চলেছে।’
ডায়াবেটিসের মতো নানা অসংক্রামক রোগকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০ অর্জনের পথে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করে প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এবং এ সংক্রান্ত গবেষণায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। এ সময় তিনি আইডিএফের গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর হিসেবে বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার অঙ্গীকার করেন।
বিশ্ব শান্তির প্রতি অব্যাহত সমর্থন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডায়াবেটিস নিয়ে জীবনযাপনকারী বিশ্বের সব মানুষ এবং তাদের শুভানুধ্যায়ীদের পক্ষ থেকে আমি বিশ্বনেতাদের কাছে এখনই ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের সবাইকে অবশ্যই অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে হবে এবং যুদ্ধের বদলে আমাদের নাগরিকদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সে সম্পদ ব্যবহার করতে হবে।’