কুমিল্লার তিতাসে দুই পক্ষের সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে যাওয়া পুলিশ সদস্যদের সামনে থেকে যুবলীগ নেতাকে ধরে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
তিতাসের ভিটিকান্দি ইউনিয়নের মানিককান্দি গ্রামে মঙ্গলবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
তিতাস থানার ওসি সুধীন চন্দ্র দাস এসব নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ৩৫ বছরের জহিরুল ইসলাম ভিটিকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হোসেন মোল্লার ছেলে। ঢাকায় তার কাপড়ের ব্যবসা ছিল। ভিটিকান্দি ইউনিয়ন যুবলীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করতেন।
থানা পুলিশ নিউজবাংলাকে জানিয়েছে, গ্রামের একটি মাছের ঘের নিয়ে সাবেক ইউপি মেম্বার সাইফুল ইসলাম ও সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হোসেন মোল্লা গ্রুপের দ্বন্দ্ব অনেকদিনের। ওই ঘেরে মঙ্গলবার সাইফুলের ছেলে সোহরাব ইসলাম ও তার লোকজন মাছ ধরতে যায়। এ নিয়ে তর্কাতর্কির পর আবুল হোসেন গ্রুপের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়।
ওসি জানান, পুলিশ গিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ঢিলের আঘাতে পুলিশের এসআই মাহমুদুল হাসান আহত হন। এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে আবুল হোসেনের ছেলে জহির এগিয়ে গেলে পুলিশের সামনে থেকেই তাকে ধরে নিয়ে যায় কয়েকজন। তাকে সোহরাবের বাড়িতে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে কোপানো হয়। পুলিশ গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় জহিরকে বের করে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়। সেখান থেকে ঢাকা পাঠানোর পথে তার মৃত্যু হয়।
পুলিশের সামনে থেকে কীভাবে তুলে নিয়ে গেল- এর জবাবে ওসি বলেন, ‘জহিরকে হুট করে ধরে নিয়ে যায় কয়েকজন। এর মধ্যে পুলিশের দিকে ঢিল ছুড়তে থাকে। পুলিশ তখন কয়েক রাউন্ড গুলি করে। আমরা দ্রুত গিয়ে জহিরকে উদ্ধারের চেষ্টা করি। তবে ততক্ষণে তাকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যাওয়া হয়।’
জহিরের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সোহরাবের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় নিহতের স্বজনরা। তবে পরিস্থিতি সন্ধ্যার পর থেকে নিয়ন্ত্রণে বলে জানিয়েছেন ওসি।
নিহত জহিরের ভাই মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমাদের কেনা জায়গায় জোর করে মাছ ধরে নিয়ে গেলে জহির বাধা দেয়। এতে সাইফুল মেম্বারের সন্ত্রাসী বাহিনী রাম দাসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আমার ভাইকে হত্যা করে। পুলিশের উপস্থিতিতে আমাদের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট করে। আমাদের আরও ৬-৭ জন আহত হয়েছে। আমরা সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও হত্যার বিচার চাই।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাইফুলকে একাধিকবার কল করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।