বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মেহেরপুর মুক্ত একাত্তরের এ দিনে

  •    
  • ৬ ডিসেম্বর, ২০২২ ১০:৪৯

স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়ার আয়োজন করে।

আজ মেহেরপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিভূমি মেহেরপুরের মুজিবনগর জয় বাংলা স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে। বিজয় উল্লাসে ফিরে আসতে শুরু করে পাশের দেশ ভারতে আশ্রয় নেয়া মেহেরপুরের মানুষ।

১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের প্রথম রাজধানী মুজিবনগর তথা মেহেরপুর পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয়। স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রতি বছর দিবসটি মর্যাদার সঙ্গে পালিত হয়ে আসছে মুক্ত দিবস হিসেবে।

দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের আয়োজনে জেলা প্রশাসন ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড মঙ্গলবার সকাল ১০টায় স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়ার আয়োজন করে। বেলা ১১টার দিকে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর এই দিনে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত জনপদ ও বাংলাদেশ স্বাধীনতা সূতিকাগার ক্ষেত্র মেহেরপুর মুক্ত হয়েছিল।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে স্বাধীনতার সূতিকাগার মেহেরপুরের মুজিবনগরের আম্র্রকাননে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে। এরপরই তৎকালীন মেহেরপুরের এসডিও তৌফিক-ই-এলাহীর সক্রিয় ভূমিকায় ছাত্র-জনতা, আনসার-মুজাহিদদের নিয়ে মুক্তিবাহিনী গড়ে তোলা হয়।

মেহেরপুরের মুক্ত দিবসের সেদিনের আনন্দের মুহূর্তের কথা বলতে গিয়ে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ পাতানের দুই চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে।

তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে প্রথম সরকারে শপথ গ্রহণের পর মেহেরপুর কার্যত হানাদার বাহিনীর লক্ষ্য বস্তুতে পরিণত হয়। সে অনুযায়ী ১৮ এপ্রিল দুপুরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে চুয়াডাঙ্গা থেকে সড়কপথে মেহেরপুর প্রবেশ করার সময় সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামে নির্মম হামলা চালায়। সেদিনই এ অঞ্চলের প্রতিরোধব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। এক সপ্তাহের মধ্যে মেহেরপুর সরকারি কলেজ, ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ভিটিআই ও কবি নজরুল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাদের শক্তিশালী দুর্গ গড়ে তোলে।

মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধে দিশাহারা পাকিস্তানি সেনারা মেহেরপুর থেকে পালাবার সময় দিনদত্ত ব্রিজ, খলিশাকুণ্ডি ও তেরাইল ব্রিজ ধ্বংস করে দেয়। ধ্বংস করে বৈদ্যুতিকসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এ সময় কত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান কারও জানা নেই। ৯ মাস মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে ৫ ডিসেম্বর রাত থেকেই পাকিস্তানি বাহিনী গোপনে মেহেরপুর ছেড়ে পালাতে থাকে। ৬ ডিসেম্বর সকালে মিত্র বাহিনী মেহেরপুর শহরে প্রবেশ করলে অবরুদ্ধ জনতা মিত্র বাহিনীর সঙ্গে জয়ের উল্লাসে যোগ দেয়।

দীর্ঘ ৯ মাস পর চারদিক থেকে ‘জয়বাংলা’ স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে মেহেরপুর। ওপার বাংলায় আশ্রিত মানুষ জয় বাংলা স্লোগানে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে আসতে শুরু করে। ভারতীয় বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষও স্বাধীন বাংলাদেশ দেখতে মেহেরপুরে ছুটে আসেন। এদিন লাল-সবুজের পতাকা দৃষ্টিকাড়া স্থানগুলোতে টানিয়ে দেয় স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ।

গাংনী থানার মুজিব বাহিনীর কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জেল হোসেন জানান, দেশমাতৃকার জন্য শহীদ হন মুক্তিকামী নারী-পুরুষ। ৬ ডিসেম্বর সকাল থেকে লাল-সবুজের পতাকা হাতে জয়বাংলা স্লোগানে স্লোগানে চারদিক মুখরিত হয়ে ওঠে মেহেরপুর।

এ বিভাগের আরো খবর