বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হাটের জায়গা দখলে, বিক্রেতারা সড়কের পাশে

  •    
  • ৬ ডিসেম্বর, ২০২২ ০৯:০২

দত্তপাড়া বাজারে গিয়ে দেখা যায়, নাটোর-ঢাকা মহাসড়কের ধার ঘেঁষে দোকান সাজিয়েছেন বিক্রেতা কৃষকরা। কারণ হাটে তারা জায়গা পাননি। হাটের জায়গা কয়েকজন প্রভাবশালীর দখলে।

নাটোর শহরতলীর দত্তপাড়া বাজারের পুরো জায়গা দখলে রেখেছে ১১ প্রভাবশালী। হাটে জায়গা না পেয়ে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে প্রতিদিনই বসছে নাটোর ঢাকা-মহাসড়ক ঘেঁষে। ফলে যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

প্রভাবশালীরা শুধু বাজার দখল করেই ক্ষান্ত হয়নি, সরকারি জায়গা লাখ লাখ টাকায় বেচাকেনাও করছে তারা। বাজারের জায়গা দখলদারদের কবল থেকে দ্রুতই মুক্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

সরেজমিনে দত্তপাড়া বাজারে গিয়ে দেখা যায়, নাটোর-ঢাকা মহাসড়কে দ্রুতগতির যানবাহন চলাচল করছে। এরই মাঝে সড়কের পাশে নিত্যপণ্য কেনাবেচায় মগ্ন সবাই। হাটে বসার জায়গা না পেয়ে ব্যস্ত মহাসড়কের পাশে নিজেদের উৎপাদিত কাঁচামাল নিয়ে বসেছেন কৃষকরা।

স্থানীয় কৃষক রেজাউল করিম গাজী বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার কর্মযজ্ঞ চলে দত্তপাড়া বাজারে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দখলকৃত স্থানে যে যার মতো গড়ে তুলেছে স্থায়ী স্থাপনা। কেউ কেউ হাটের জায়গায় স্থায়ী অবকাঠামো করে অযথাই ফেলে রেখেছে। দেড় থেকে দুই লাখ টাকায় চলে দখলদারিত্ব কেনাবেচা। কয়েক দিন আগেও আব্দুর রাজ্জাক নামে একজন দোকানদার ২ লাখ টাকায় আরেকজনের দখল কিনেছেন।

কাঁচামাল ব্যবসায়ী সেন্টু হোসেন জানান, বাজারের জায়গা হুসেন মিয়া, মোতালেব, শরৎ ও নুর আলম পাকা দোকান করে দখল করে রেখেছেন। এক-একজনের একাধিক পাকা দোকানঘর রয়েছে। এ ছাড়া আরও কয়েকজন জায়গা দখল করে অযথা পরিত্যক্ত করে ফেলে রেখেছেন। তারা নিজেও ব্যবসা করেন না, অন্যদেরও বসতে দেন না।

বেলাল হোসেন নামে আরেক এলাকাবাসী বলেন, ‘এই দত্তপাড়ায় সরকারি ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত হাটের নির্ধারিত ১২ শতক জায়গা অবৈধ কিছু দখলদার দখল করে রেখেছেন। বিক্রেতাদের ব্যস্ত মহাসড়কের পাশে কেনাবেচা করতে হয়। সড়ক সম্প্রসারণ এবং নতুনভাবে দত্তপাড়া ব্রিজ হওয়ার কারণে আরও দ্রুতগতিতে বাস-ট্রাক চলে। ফলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কয়েক দিন আগেও সড়ক দুর্ঘটনায় একজন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন কয়েকজন। তাই মানুষের জীবনের নিরাপত্তায় দ্রুত বাজারের জায়গাটি দখলমুক্ত করা দরকার।’

অবৈধ দখলের অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে, তাদের একজন হুসেন মিয়া। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে হুসেন মিয়া বলেন, ‘বহু বছর ধরে আমরা হাটের জায়গায় ব্যবসা করে আসছি। এখন সরকার ভেঙে দিলে আমাদের কিছুই করার নাই। হাটে আমার মাত্র তিনটি পাকা দোকানঘর আছে।’

মোতালেব মিয়া নামে আরেক দোকানদার জানান, নিয়মিত এখানকার পজেশন কেনাবেচা হয়। তিনিও খেকার বাপ নামের একজনের কাছ থেকে জায়গা কিনে দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন।

আরেক দখলদার নূর আলম জানান, ‘আজ থেকে ৫০ বছর আগে আমার বাবা গণি শিকদার ছাদ ঢালাই করে তিন রুমের দোকানঘর করেছিলেন। বাবা মারা যাওয়ার পর আমি সারের ব্যবসা করছি। এ দোকানের মালিকানা বৈধ কি না আমি জানি না।’

দত্তপাড়া বাজার কমিটির সভাপতি আনিসুর রহমান বলেন, ‘অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করতে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছি। এরপর প্রশাসন থেকে দখলকৃত স্থাপনা চিহ্নিত করে লাল দাগ দিয়েছে। এর কিছুদিন পর সব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ নোটিশও দিয়েছে প্রশাসন। এখন আমাদের দাবি দ্রুত দখলদারদের উচ্ছেদ করা হোক।’

জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, ‘কেউ কেউ দত্তপাড়া হাটের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। যারা স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ করে হাটের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে তাদের উচ্ছেদ করা হবে। সেই সঙ্গে যারা সাধারণ ব্যবসায়ী তারা যাতে নির্বিঘ্নে ব্যবসা করতে পারেন, সে ব্যাপারে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। হাট কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে অবৈধ দখলকারদের বাণিজ্যিক অবকাঠামো শনাক্ত করেছে জেলা প্রশাসন। উচ্ছেদ নোটিশও দেয়া হয়েছে। নিজ থেকে তারা সরে না গেলে নিয়ম অনুযায়ী তাদের উচ্ছেদ করা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর