সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাহসের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘আমি সরকারি কর্মচারী। এটা আমার রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। আমাকে ভয় পেলে চলবে না। ভয়ের ঊর্ধ্বে থেকে কাজ করতে হবে।’
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আমার মেসেজ একটাই। আপনারা সাহস নিয়ে কাজ করেন। ভয় পাওয়ার তো কারণ দেখি না৷ ভয় পাবেন কেন?’
এর আগে ১ ডিসেম্বর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে অনিয়ম ও দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ মেলায় রিটার্নিং কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশের পাঁচ উপ-পরিদর্শকসহ ১৩৪ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তাদের মধ্যে ১২৬ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা রয়েছেন।
১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে চরম অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় ভোট শেষের দেড় ঘণ্টা আগে তা বন্ধ ঘোষণা করে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন।
সে ক্ষেত্রে নতুন করে যারা এই ভোটের দায়িত্ব নেবেন তাদের ভয়ের ঊর্ধ্বে থাকার পরামর্শ দেন কমিশনার রাশেদা সুলতানা।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘গাইবান্ধার নির্বাচন খুব দ্রুতই হবে। এ সপ্তাহের শেষ দিকে তফসিল ঘোষণা হবে। ১৫ জানুয়ারির আগেই নির্বাচন হবে।’
‘আগের নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী ১২৬ প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে ভোটে দায়িত্ব দেয়ার প্রশ্নই আসে না। যারা দোষী হয়েছে তাদের আনার আর সুযোগ নেই। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নিয়োগে আইনে যা বলা আছে, সে অনুযায়ী কর্মকর্তা নিয়োগ হবে। এক্ষেত্রে ওই উপজেলায় না হলে পাশের উপজেলা থেকে কর্মকর্তা আনতে হবে।’
রিটার্নিং কর্মকর্তা কে হবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কমিশন বৈঠক করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। আর রিটার্নিংয়ের দায়িত্ব দেয়ার মতো আমাদের বহু কর্মকর্তা আছেন।’
গাইবান্ধায় সুষ্ঠু ভোট হবে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘গাইবান্ধার পরে যে কয়টা ভোট করেছি, কোথাও কোনো ঝামেলা হয়নি। আশা করি এবারও হবে না। একটা ভালো নির্বাচন করতে পারব৷’
গাইবান্ধা-৫ আসনের ১৪৫ ভোটকেন্দ্রেই ভোট হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তবে নতুন প্রার্থী হওয়ার কোনো সুযোগ নেই৷ আইনে সেভাবে বলা আছে।’
গাইবান্ধার তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে কোনো আলোচনার দরকার নেই বলে মনে করেন এই কমিশনার। বলেন, ‘যথারীতি সিসি ক্যামেরা থাকবে, আমরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করব। আমাদের অধীন যত নির্বাচন হবে, সেখানে ভোটাররা আসবেন, সুষ্ঠুভাবে ইচ্ছামতো ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এটাই আমাদের চাওয়া।’
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে আরপিও বিধান সংশোধনের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে এই কমিশনার বলেন, ‘যাচাই-বাছাই চলছে। খুব দ্রুত অগ্রগতি জানা যাবে।’