বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ব‌রিশাল-ভোলা স্পিডবোট বন্ধ ‘মেয়রের নির্দেশে’

  •    
  • ৫ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৮:৩৮

স্পিডবোট মালিকরা আরও জানান, সোমবার রাতেই ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লী‌গের সাধারণ সম্পাদক শেখর দাস স্পিডবোট চালুর কথা বলার জন্য মা‌লিকদের নিয়ে মেয়রের বাড়িতে যান। তবে তাতে কোনো সুরাহা হয়‌নি। পরদিন শেখর দাসকে দলীয় পদ থেকে সাম‌য়িক অব্যাহ‌তি দেয় মহানগর আওয়ামী লীগ।

ব‌রিশাল ভোলা নৌপথে এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ হয়ে আছে স্পিডবোট চলাচল। জরুরি কাজে চলাচলে ভোগান্তি হচ্ছে বলে জানান ক্ষুব্ধ এই রুটের যাত্রীরা। স্থানীয় লোকজন ও স্পিডবোট মালিকরা জানিয়েছেন, ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সা‌দিক আব্দুল্লাহ স্পিডবোট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

ভোলার ভেদু‌রিয়া ঘাটের যাত্রী ফাহাদ হোসেন বলেন, ‘পি‌রোজপুর যেতে হবে খুব জরুরি কাজে। এত‌দিন ধ‌রে স্পিডবোট বন্ধ তা জানতাম না। এখন কয়েক ঘণ্টা লঞ্চ জা‌র্নি ক‌রে যেতে হ‌বে ব‌রিশাল, তারপর পি‌রোজপুর।’

বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যালে ডাক্তার দেখাতে স্বামীকে নিয়ে ঘাটে এসেছেন সু‌মিত্রা রানী।

তিনি বলেন, ‘স্বামী‌ হঠাৎ অসুস্থ হ‌য়ে প‌ড়ে‌ছে বু‌কে ব‌্যথা নি‌য়ে। দ্রুত শের-ই-বাংলায় নি‌তে ব‌লে‌ছে ভোলা হাসপাতাল থে‌কে। ঘা‌টে এসে দেখি সরাস‌রি না‌কি স্পিডবোট যা‌বে না। এই স্পিডবোট লাহারহাট যা‌বে, সেখান থে‌কে মে‌ডিক‌্যা‌লে। এত ভোগা‌ন্তি কেন পোহা‌ব আমরা‌।’

ব‌রিশাল নগরীর কাশিপুর এলাকার ফজলু রহমান জানান, ব্যবসার কাজে প্রায়ই ভোলা যাওয়ার প্রয়োজন হয় তার। সময় কম লাগে বলে স্পিডবোটই ব্যবহার করেন তিনি।

ফজুল বলেন, ‘সপ্তাহে দুই দিন ব‌্যবসার কাজে ভোলা যেতে হয়। এখন এক সপ্তাহ ধ‌রে স্পিডবোট বন্ধ। গত বুধবার এসে‌ছিলাম, আজ (সোমবার) আবারও আসলাম। আজকেও বন্ধ। মেয়রের প্রতি আহ্বান থাকবে, জনগণের ভোগা‌ন্তি কমাতে না পারলে ভোগা‌ন্তি না বাড়ানোই ভা‌লো।

‘কিছু ভা‌লো করতে পারলে করুন, না হ‌লে কোনো কিছু কইরেন না। আপনার কাছ থে‌কে আমরা কিছু আশা ক‌রি না।’

কী কারণে এই রুটে স্পিডবোট ঘোষণা ছাড়া এতদিন ধরে বন্ধ, তা জানতে স্পিডবোট মালিকদের সঙ্গে কথা বলে নিউজবাংলা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, স্পিডবোট ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এখানকার লাইনম‌্যান তারেক শাহের সঙ্গে ১০ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগ কর্মীদের দ্বন্দ্ব ছি‌ল। ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লী‌গের সাধারণ সম্পাদক শেখর দাসের বেশ নিয়ন্ত্রণ ছি‌ল ঘাটে।

এ নিয়ে দীর্ঘদিন দ্বন্দ্বের পর সি‌টি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লী‌গের সাধারণ সম্পাদক সাদিক আব্দুল্লাহর নির্দেশে শিল্প ও বা‌ণিজ‌্যবিষয়ক সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল গত সোমবার ঘাটে এসে স্পিডবোট বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন, তি‌নি না বলা পর্যন্ত স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রাখ‌তে ব‌লেন।

স্পিডবোট মালিকরা আরও জানান, সোমবার রাতেই ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লী‌গের সাধারণ সম্পাদক শেখর দাস স্পিডবোট চালুর কথা বলার জন‌্য মা‌লিকদের নিয়ে মেয়রের বাড়িতে যান। তবে তাতে কোনো সুরাহা হয়‌নি। পরদিন শেখর দাসকে দলীয় পদ থেকে সাম‌য়িক অব‌্যা‌হ‌তি দেয় মহানগর আওয়ামী লীগ।

স্পিডবোট মালিকরা এসব জানালেও মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এসব তথ্য নাকচ করেছেন।

তিনি জানান, সব স্পিডবোট ভোলায় আটকে আছে। ব‌রিশালে এলেই চ‌লবে। কেন আটকে আছে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দেননি।

ঘাট এলাকার স্থানীয় শাহ আলম ফ‌কির বলেন, ‘স্পিডবোট ঘাটে ভালো টাকা ইনকাম আছে। যে কারণে এই ঘাট নিয়ন্ত্রণে নিতে সবার মাথাব‌্যথা। আর এই নিয়ন্ত্রণ নিয়েই যত দ্বন্দ্ব। এবার এর নিয়ন্ত্রণ নি‌তে চাইছেন মেয়র মহোদয়। তি‌নি য‌দি নিয়ন্ত্রণে নিতে না চাইতেন, তাহলে তো ঘাট বন্ধ করাতেন না লোক পা‌ঠিয়ে। ঘাট বন্ধ রেখে সাধারণ মানুষকে ভোগা‌ন্তিতে রাখার কোনো মানে হয় না।’

এ বিষয়ে জানতে ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখর দাসকে কল করা হলে তিনি কোনো মন্তব‌্য করতে রাজি হননি। ব‌রিশাল স্পিডবো‌ট ঘাটের লাইনম‌্যান তারেক শাহ্ও কিছু বলতে রা‌জি হননি।

আর একাধিকবার কল করেও সাড়া পাওয়া যায়নি মহানগর আওয়ামী লী‌গের শিল্প ও বা‌ণিজ‌্যবিষয়ক সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল‌ এবং সি‌টি মেয়র সা‌দিক আব্দুল্লাহকে।

ব‌রিশাল-ভোলা রুটে ২০০টি স্পিডবোট চলাচল করে। প্রতি‌দিন কয়েক হাজার যাত্রী স্পিডবোটে যাতায়াত করেন। চলাচল বন্ধের নির্দেশনার পর ঘাট থেকেও বে‌শির ভাগ স্পিডবোট স‌রিয়ে অন‌্যত্র রাখা হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর