নওগাঁর মান্দায় জোতবাজারের উত্তর পাশ দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যানেল বন্ধ করে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় তিন প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। এর আশপাশে বসবাসরত দুই শতাধিক পরিবার সামান্য বৃষ্টিতেই পানিবন্দি হয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা বলছেন, এ নিয়ে পানি উন্নয় বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো সুরাহা মিলছে না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাজারের প্রবেশমুখের পাশ দিয়ে ফকিন্নি নদী পর্যন্ত এক কিলোমিটার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যানেল বয়ে গেছে। এই ক্যানেল দিয়ে বর্ষা মৌসুম ও বৃষ্টির পানি নেমে চলে যায় ফকিন্নি নদীতে। দুই মাস আগে বাজারের উত্তর পাশে ক্যানেল ভরাট করে ১৪ কাঠা জমিতে স্থানীয় আব্দুর রহমান, জনাব আলী ও তোফাজ্জল হোসেন নামে তিন ব্যক্তি অবৈধভাবে কনক্রিটের ভবন নির্মাণ করেছেন। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি নিষ্কাষণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে করে ভবনের পেছনে বসবাসরত দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগে পড়ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সেলিনা বেগম বলেন, ‘এমনিতে জায়গাটি নিচু। তার মধ্যে অবৈধ ঘর নির্মাণের কারণে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। ঘরের মধ্যে পানি চলে আসে।’
সুকুমার রায়, রুনু সাহা, পারুল বেগমসহ কয়েকজন জানান, ঘরগুলো যখন অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়, তখন তারা বাধা দিলে তাদেরকে নানাভাবে হুমকি দেয়া হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো সুরাহা পাওয়া যায়নি।
জোতবাজার বণিক সমিতির সভাপতি ফজলুর বারী সাফী বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে তিন প্রভাবশালী বিল্ডিং নির্মাণ করেছেন। আমরা স্থানীয়ভাবে বাধা দিলেও তা উপেক্ষা করে নির্মাণকাজ চালান তারা। এর ফলে পানি বের হতে পারে না। এমনকি বৃষ্টির পানিও বের হতে পারে না। এতে করে বাড়িঘরসহ বেশকিছু দোকানপাট পানিতে ডুবে যায়।’
তারা জানান, এ বিষয়ে গত ৩১ অক্টোবর পানি উন্নয়ন বোর্ড নওগাঁ, রাজশাহীসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসব স্থাপনা উচ্ছেদের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
অভিযুক্ত নির্মাণাধীন ঘরের মালিক আব্দুর রহমান, জনাব আলী ও তোফাজ্জল হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, এখানে প্রায় ১৪ কাঠা নিজের জায়গার ওপর তারা ঘর নির্মাণ করেছেন। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু অংশ থাকতে পারে। যদি পানি উন্নয়ন বোর্ড তদন্ত করে তাদের অধিগ্রহণকৃত অংশ দখলে নেয়, তারা ছেড়ে দেবেন। আপাতত তাদের কিছু করার নেই।
বিষয়টি নিয়ে কথা হলে নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (বিভাগ-৩) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা জায়গাটি সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করার জন্য মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে একটি চিঠি দিয়েছি। সেই প্রতিবেদন পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’