বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চালের কল নষ্ট করছে ধানের ক্ষেত

  •    
  • ৪ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৯:১৮

টাঙ্গাইল পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জমীর উদ্দিন জানান, সরেজমিনে তদন্ত করে পরিবেশদূষণের প্রমাণ পেলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

‘এখন আমরা কী খামু, সব তো গায়েব হয়ে গেছে! কোম্পানির পচা পানি, ছাই আমাগো ধানক্ষেত ও গমক্ষেত শেষ কইরা দিল! কিছু কইতে গেলে ম্যানেজার কয় জমি বেইচা এলাকা ছাড়তে। আমরা গরিব মানুষ তাই আমাগো কথা কেউ শুনেই না!’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে এভাবেই আক্ষেপ করছিলেন কৃষক ইউনুস আলী। টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদীঘি ইউনিয়নের ইছারচালা গ্রামে তার দুই বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। চালের মিল থেকে উড়ে আসা ছাইয়ে পুড়ে গেছে ধানের শিষ।

এ ছাড়াও আবেদ আলী, মফেজ উদ্দিন, শামসুল হক, মনসুর ও বুদ্ধি বর্মণসহ আরও বেশ কয়েকজন কৃষক এমন বিপদে পড়েছেন।

এ অবস্থায় বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে ইউএনও ও পরিবেশ অধিদপ্তর বরাবর স্থানীয় ১১৩ জনের স্বাক্ষরসহ লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঘাটাইলের সাগরদীঘি ইউনিয়নের ইছারচালা গ্রামে ডেইলি রাইস ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড নামে একটি চালকল স্থাপন করা হয়েছে আবাসিক এলাকার ফসলি জমি ঘেঁষে। ওই কলের বিষাক্ত বর্জ্য, দুর্গন্ধ, ছাই, কুঁড়া ও বায়ুদূষণের প্রভাব পড়েছে স্থানীয়দের ওপর। চোখের রোগ, শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা। চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে গ্রামটির শত শত পরিবার।

ফসলি জমির পাশে এভাবেই গড়ে ওঠেছে চালের কল

লিখিত অভিযোগে দিশেহারা কৃষকরা জানিয়েছেন, দূষিত বর্জ্যের কারণে ফসলি জমির আবাদি ধানক্ষেত পঁচে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে প্রায় পাঁচ একর জমির ফসল।

তা ছাড়া কারখানায় উচ্চ শব্দের জেনারেটর ব্যবহার করায় শব্দদূষণে স্থানীয় বিদ্যালয় ও আশপাশের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে। কাছাকাছি একটি হিন্দু ধর্মীয় উপাসনালয়ের পূজা-অর্চনায়ও এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে।

অভিযোগকারী বাংলাদেশ কোচ আদিবাসী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ইছারচালা গ্রামের বাসিন্দা বিবেক চন্দ্র বর্মণ জানান, অতীতে তারা একত্র হয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি। প্রতিবাদ করার কারণে বরং স্থানীয়রা নানাভাবে ওই মিল কর্তৃপক্ষের হয়রানির শিকার হয়েছেন।

এসব বিষয়ে ডেইলি রাইস ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের পরিচালক জাহিদ আহমেদ বলেন, ‘কোম্পানির পুকুরটি নিচু হওয়ায় পানি চুইয়ে যেতে পারে, তবে পাড় উপচে কখনোই পানি বাইরে যাচ্ছে না। আর ছাই ওড়ারও কোনো সম্ভাবনা নাই। বেশি বাতাস হলে কিছুটা উড়তে পারে। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করছি।’

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জমীর উদ্দিন জানান, সরেজমিনে তদন্ত করে পরিবেশদূষণের প্রমাণ পেলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিভাগের আরো খবর