বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নয়াপল্টন ছাড়তে পারে বিএনপি, তবে…

  •    
  • ৪ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৭:৩৪

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সরকার ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশের স্থানের অনুমতি নিয়ে টালবাহানা করছে। তারা যেসব স্থানের কথা প্রস্তাব করেছে সেসব স্থানে আমরা কমফোর্ট ফিল করছি না। আমরা নয়াপল্টনেই সমাবেশ করতে চাই। অন্যথায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও তুরাগ নদীর তীর ছাড়া অন্য কোথাও হলে বিবেচনা করে দেখব।’

১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিকল্প হিসেবে অন্য জায়গা চেয়েছে বিএনপি। তবে সেটি টঙ্গীর তুরাগ তীর হলে হবে না, সেটিও জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তার অভিযোগ, সরকার এই সমাবেশ বানচাল করতে চায়। সে জন্যই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবনে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে। এমনকি ঢাকার আদালতপাড়া থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গির পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাটিকেও নাটক আখ্যা দিয়েছেন বিএনপি নেতা। বলেন, পলাতক দুইজনকে গ্রেপ্তারের নামে গত কয়েকদিনে বিএনপির এক হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রোববার দুপুরে হঠাৎ করে ডাকা ‘জরুরি’ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। দীর্ঘ লিখিত বক্তব্যের পর এক প্রশ্নের জবাবে জনসভার বিকল্প স্থান নিয়ে কথা বলেন তিনি।

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে গত ৮ অক্টোবর থেকে প্রতি শনিবার বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করে আসা বিএনপি ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঢাকায় জমায়েত করতে চায়। সেদিন দলটি জড়ো হতে চায় নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে। ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদনও করেছে তারা।

তবে সরকার বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু বিএনপি সেখানে যেতে চায় না নানা শঙ্কায়। যদিও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এর আগে পূর্বাচলে সমাবেশ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

ফখরুল বলেন, ‘সরকার ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশের স্থানের অনুমতি নিয়ে টালবাহানা করছে। তারা যেসব স্থানের কথা প্রস্তাব করেছে সেসব স্থানে আমরা কমফোর্ট ফিল করছি না। তাই ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও তুরাগ নদীর তীর ছাড়া বিএনপির গণসমাবেশের জন্য পুলিশ বিকল্প প্রস্তাব দিলে আমরা বিবেচনা করব।’

সংবাদ সম্মেলন শেষে উঠে যাওয়ার সময় একজন গণমাধ্যমকর্মী প্রশ্ন ছুড়ে দেন, যদি নয়াপল্টনে অনুমতি না পান, তাহলেও সেখানেই বিএনপি সমাবেশ করবে কি না। জবাবে ফখরুল বলেন, ‘এটা আপনারা জানতে পারবেন কখন কী ঘোষণা আসে।’

বিকল্প প্রস্তাব দিলে তাহলে আপনারা গ্রহণ করবেন- এমন প্রশ্নে ফখরুল কথা বলার মধ্যে পাশে দাঁড়ানো স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আলোচনা যদি গ্রহণযোগ্য হয়, তবে অবশ্যই সোহরাওয়ার্দী ও তুরাগ নদী ছাড়া।‘

‘নয়াপল্টনে নাশকতার ছক’

নয়াপল্টনে যেন বিএনপি সমাবেশ করতে না পারে, সে জন্য এই এলাকায় সরকারি এজেন্সিগুলো নাশকতার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘নয়াপল্টন এলাকাকে অস্থিতিশীল করার জন্য সরকারের এজেন্সিগুলো নানা ধরনের নাশকতা ঘটাতে অবতীর্ণ হয়েছে। গতকাল এই কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়। এই বিস্ফোরণের পর পুলিশ আকস্মিকভাবে নেতা-কর্মীদের পাইকারিহারে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।’

ফখরুল বলেন, ‘গত পরশু দিন মতিঝিলে পরিত্যক্ত বিআরটিসির দোতলা বাসে আগুন দিয়ে বিএনপির ওপর দায় চাপাতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা খেয়ে চুপসে গেছেন ওবায়দুল কাদের সাহেব। অথচ তিনি বিএনপিকে দায়ী করে তারস্বরে নাশকতার কথা বলে যাচ্ছেন।’

‘খালেদার বাড়িতে ব্যারিকেড নিপীড়নের নতুন মাত্রা’

বেগম খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবনের সামনে পুলিশের ব্যারিকেড বসানোরও সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, ‘গতকাল বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাসার সামনে সেই বালির ট্রাকের কায়দায় চেকপোস্ট ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশ অবরোধ করে রেখেছে। এটি দেশনেত্রীর ওপর নিপীড়নের আরেকটি নতুন মাত্রা।

‘আমি সরকারের এহেন ঘৃণ্য আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একজন জনপ্রিয় নেত্রীকে মিথ্যা মামলায় ফরমায়েসি রায়ে কারারুদ্ধ রেখে চিকিৎসার সকল পথ রুদ্ধ করে প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী সরকার। তার বাসভবন অবরোধ করে এবং জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে।’

জঙ্গি পলায়ন নাটক করে গ্রেপ্তার অভিযান

ঢাকার আদালত চত্বর থেকে দুই জঙ্গির পলায়নের বিষয়টিকে নাটক উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘বেশ কিছুদিন চুপ থেকে এখন সেই জঙ্গি ধরার নামে মেস, আবাসিক হোটেল ও বাসাবাড়িতে পুলিশ ব্লক রেইড দিচ্ছে। পুলিশের এই হানা মূলত বিএনপির নেতা-কর্মীদের পাইকারিহারে গ্রেপ্তার, হয়রানি ও আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য।

১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশকে ঘিরে নাশকতার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই বলে পুলিশপ্রধানের বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘তাহলে কেন এই নাটক অভিযান? সরকার এক সুদূরপ্রসারী অশুভ মাস্টারপ্ল্যানের পথে হাঁটছে।’

বাধা দিয়েও বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঠেকানো যাবে না উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘সকল বাধাবিপত্তি প্রতিহত করে মানুষ নদী সাঁতরে ভেলায় ভেসে এসেছে। খালি পেটে নগ্ন পায়ে মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে মানুষ এসেছে। নৌকা ও ট্রলারে দীর্ঘ নদীপথ অতিক্রম করে সমাবেশস্থলে এসেছে। মাইলের পর মাইল সাইকেল চালিয়ে এসেছে।

‘সমাবেশ শুরু হওয়ার দুই-তিন দিন আগে থেকে মানুষ সমাবেশস্থলের আশপাশে তাঁবু খাটিয়ে রাত্রি যাপন করেছে। মানুষের সম্মিলিত ইচ্ছার কাছে স্বৈরাচারী ইচ্ছা সব সময় পরাজিত হয়েছে। ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশও অভূতপূর্ব, শান্তিপূর্ণ ও বিপুল সমাগমে পরিপূর্ণ হবে ইনশা আল্লাহ।'

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিও উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর