বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির নেতাদের ওপর পদবঞ্চিত বিদ্রোহীদের হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সাত ছাত্রলীগ নেতা আহত হন। ছাত্রলীগের বিদ্রোহী নেতাদের দাবি, কলেজ ক্যাম্পাসে নাশকতার উদ্দেশ্যে আসা ছাত্রদল ও শিবির নেতা-কর্মীদের প্রতিহত করেছেন তারা।
বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষের বাসভবনের সামনে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহতদের মধ্যে আছেন, সরকারি শাহ সুলতান কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান সাব্বির, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক নূর আলম ও আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগ নেতা রিমন রহমান।
আহতদের বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগের নেতারা জানান, হামলায় নেতা-কর্মীদের অন্তত ১৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
নতুন কমিটির নেতারা জানান, শনিবার রাতে বগুড়া জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সজীব সাহা ও সাধারণ সম্পাদক আল-মাহিদুল জয়ের নেতৃত্বে ২০ থেকে ৩০টি মোটরসাইকেলে প্রায় ৫০ জন নেতা-কর্মী আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। সভাপতি ও সম্পাদকের অধ্যক্ষের বাসভবনে প্রবেশের কিছুক্ষণ পর ছাত্রলীগের বিদ্রোহী গ্রুপের নেতা তৌহিদুর রহমান ও মাহাফুজারের নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহত শাহ সুলতান কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক বলেন, ‘রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়। আমার মাথায় আঘাত লেগেছে। মাথায় সেলাই লেগেছে।’
বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহা বলেন, ‘অধ্যক্ষের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আমি ও সম্পাদকসহ প্রায় ৫০ নেতা-কর্মী এসেছিলাম। এ সময় তৌহিদ ও মাহাফুজারের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে৷’ সজীব আরও বলেন, ‘হামলায় আমাদের কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এ সময় প্রায় ১৫ থেকে ২০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। আমরা এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেব।’
সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ শাহজাহান আলী বলেন, ‘জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে দুর্বৃত্তরা বাইরে হামলা চালায়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিদ্রোহী গ্রুপের নেতা মাহাফুজার রহমান বলেন, ‘২৬ নভেম্বর আমরা আজিজুল হক কলেজে ছাত্রদলকে প্রতিহত করি। আমাদের কাছে খবর ছিল ছাত্রদল ও শিবিরের নেতা-কর্মীরা কলেজ ক্যাম্পাসে নাশকতার জন্য এসেছে। এ জন্য আমরা কলেজে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে প্রবেশ করতেই একটি দল আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমরা হামলা শুধু প্রতিহত করেছি। তবে তারা কারা ছিল আমাদের জানা নেই।’ হামলার বিষয়ে বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম বলেন, ‘সরকারি আজিজুল হক কলেজে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। আমাদের টিম সেখানে আছে। অভিযোগ সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
৭ নভেম্বর সজীব সাহাকে সভাপতি ও আল-মাহিদুল ইসলাম জয়কে সাধারণ সম্পাদক করে বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের ৩০ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সই করা চিঠিতে এক বছর মেয়াদি এই আংশিক কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়।
কমিটি ঘোষণার পরপরই জেলা ছাত্রলীগের একাংশ বিক্ষোভ শুরু করে। কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে তখন জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়েছিলেন সংগঠনটির একাংশের নেতা-কর্মী।