বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সুলতান’স ডাইনের কাচ্চিতে তেলাপোকা

  •    
  • ৩ ডিসেম্বর, ২০২২ ২০:৩১

খাবার অর্ডারকারী ডালিয়া আফরোজ বলেন, ‘তারা আমাকে বলছে, ফুডপান্ডার ব্যাগের ভেতর থেকে তেলাপোকা গেছে। এর আগেও তাদের নাকি অনেকবার অভিযোগ এসেছে। ফুডপান্ডার ব্যাগে যদি তেলাপোকা থাকে, সেই তেলাপোকা কীভাবে রাবার দিয়ে টাইট করে আটকানো গরম খাবারের ভেতরে ঢুকে যাবে?’

শুক্রবার পড়তি দুপুরের কথা। পরিবারের সবার জন্য দুপুরের খাবার হিসেবে সুলতান’স ডাইন থেকে কাচ্চি বিরিয়ানির অর্ডার করেন কর্মজীবী নারী ডালিয়া আফরোজ।

খাবার বাসায় আসার পর কিছুটা বিরিয়ানি খেয়েও ফেলেছিলেন তার ক্ষুধার্ত সন্তান। হুট করেই চোখে পড়ল কাচ্চির মধ্যে মৃত তেলাপোকা। খাবারের মধ্যে তেলাপোকা দেখে বমির উদ্রেক হয় তার।

সুলতান’স ডাইনের বসুন্ধরা শাখা অবশ্য এমন অভিযোগ মানতে নারাজ। তারা দায় চাপাতে চায় খাবার বহনকারী প্রতিষ্ঠান ফুডপান্ডার ঘাড়ে।

তবে সুলতান’স ডাইনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নতুন কিছু নয়। গত ৮ অক্টোবর মিরপুরের সুলতান’স ডাইনকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অভিযোগ ছিল, তারা সেখানে পচা-বাসি খাবার রেখেছে।

আর এবার একই প্রতিষ্ঠানটির বসুন্ধরা ব্রাঞ্চ থেকে অর্ডার করা খাবারে পাওয়া গেল তেলাপোকা।

শুক্রবার বেলা ৩টা ১০ মিনিটে ফুডপান্ডার মাধ্যমে সুলতান ডাইনে তিনজনের একটি বাসমতী কাচ্চি অর্ডার দেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী ডালিয়া আফরোজ।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘খাবার বাসায় আসার পর আমার ছেলে কিছুটা কাচ্চি খেয়ে ফেলে। খাওয়ার একপর্যায়ে হঠাৎ করে দেখে খাবারের ভেতরে একটা তেলাপোকা। তখন আমার ছেলের বমি করার অবস্থা। আমার স্বামীও অন্য খাবার খাচ্ছিল। সে তখন তেলাপোকা দেখে তার খাওয়া বন্ধ করে বমি করার অবস্থা হয়।’

স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চাকরিজীবী হওয়ার কারণে সুলতান’স ডাইন থেকে মাঝেমধ্যে খাবার আনিয়ে খেতেন তারা। ডালিয়া আফরোজ বলেন, ‘তারা এত ভালো ব্র্যান্ড, তাদের খাবারের যদি তেলাপোকা পাওয়া যায়, তাহলে কোথায় খাব?’

সুলতান’স ডাইনকে বিষয়টি অভিযোগ আকারে শনিবার সকালে জানিয়েছেন ডালিয়া। উত্তরে অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য তাকে ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে বলেছে প্রতিষ্ঠানটি।

ডালিয়া অবশ্য তাদের এমন আচরণে নাখোশ। তিনি বলেন, ‘আজকে সকালে (শনিবার) আমি অভিযোগ করেছি তাদের বসুন্ধরা ব্রাঞ্চে। তখন ওখানকার ম্যানেজার আমাকে বলেছেন, ম্যাডাম, আপনি তেলাপোকা পেয়েছেন ঠিক আছে, এর পরে যখন খাবার অর্ডার করবেন আমাকে একটু খোঁজ করবেন। আমি তখন বললাম, মনে হয় না যে আর খাবার অর্ডার করব।’

খাবারে তেলাপোকা পাওয়া গেলেও এটির দায় সুলতান’স ডাইন নিজের কাঁধে না নিয়ে ফুডপান্ডার ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছে বলেও মনে করেন ডালিয়া আফরোজ।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘তারা আমাকে বলছে, ফুডপান্ডার ব্যাগের ভেতর থেকে তেলাপোকা গেছে। এর আগেও তাদের নাকি অনেকবার অভিযোগ এসেছে। কয়েকবার অভিযোগ আসছে তাদের খাবারে তেলাপোকা পাওয়া যাচ্ছে।

‘ফুডপান্ডার ব্যাগে যদি তেলাপোকা থাকে, সেই তেলাপোকা কীভাবে রাবার দিয়ে টাইট করে আটকানো গরম খাবারের ভেতরে ঢুকে যাবে?’

সুলতান’স ডাইন এখন তার বাসার ঠিকানা জানতে উৎসুক বলে জানিয়েছেন ডালিয়া। তিনি বলেন, ‘তারা আবার সেই প্যাকেজ বাসায় পাঠাতে চায়। আমি বলেছি না, পাঠাবেন না। আপনাদের খাবার দেখলেই বাসার মানুষ এখন বমি করবে। অনেক অনুরোধ করেছে। কিন্তু রাখি নাই।’

ডালিয়া মনে করেন, প্রতিষ্ঠানটির একটু সচেতন হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

অ্যাপের মাধ্যমে কাচ্চি অর্ডার করেছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী ডালিয়া আফরোজ

এ ব্যাপারে সুলতান’স ডাইনের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা। প্রতিষ্ঠানটির বসুন্ধরা ব্রাঞ্চের ব্যবস্থাপক মোশাররফ হাসিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি আমার কাস্টমারের সঙ্গে কথা বলেছি। ফুডপান্ডার মাধ্যমে খাবারটা গিয়েছে। এটা আমাদের একটু চেক করতে হবে।’

হাসিম আরও বলেন, ‘ফুডপান্ডার ব্যাগ সব সময় আনহাইজেনিক থাকে। ব্যাগের মধ্যে অনেক সময় সমস্যা থাকে। পুরা বিষয়টা যাচাই করতে আমাদের কিছুটা সময় লাগবে।’

হাসিমের কাছে জানতে চাওয়া হয়, প্যাক করা গরম খাবারে কীভাবে তেলাপোকা ঢুকতে পারে? জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা শুধু রাবার দিয়ে প্যাকেট করা হয়। ফুডপান্ডায় আমাদের অভিযোগ বেশি। খাবার ঠান্ডা থেকে শুরু করে সবকিছু…। এ বিষয়ে আমরা ফুডপান্ডার সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের উত্তরের জন্য ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।’

এর আগেও গ্রাহকদের কাছ থেকে খাবারে জীবিত তেলাপোকা পাওয়ার অভিযোগ এসেছে বলে নিজেই জানালেন হাসিম।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এর আগেও ফুডপান্ডার মাধ্যমে খাবার পাঠালে আমাদের কাস্টমার জীবিত তেলাপোকা পেয়েছেন। তখন আমরা ফুডপান্ডাকে জানালে তারা তাদের ব্যাগ চেক করে আমাদের বলেছিল এই সমস্যা আর হবে না।’

তবে বিষয়টি নিয়ে খাবার বহনকারী প্রতিষ্ঠান ফুডপান্ডার তাৎক্ষণিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে সরাসরি যোগাযোগের কোনো মাধ্যম রাখা হয়নি।

প্রতিষ্ঠানটির গণসংযোগ শাখার তৌহিদ নামের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, লিখিত প্রশ্ন পাঠানো হলে ফুডপান্ডা উত্তর দেবে। তবে তাতে কত সময় লাগতে পারে তার কোনো সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।

এ বিভাগের আরো খবর