২০১৬ সালের ৩০ এপ্রিল ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছিল। ওই দিন সম্মেলনস্থলে কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। ওই বছর ১০ অক্টোবর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলের নাম ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া মহানগর কমিটিতে সভাপতি পদে এহতেশামুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক পদে মোহিত উর রহমানের নাম ঘোষণা করা হয়।
দীর্ঘ ৬ বছর পর আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে ময়মনসিংহ সার্কিট হাউস মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীরা উচ্ছ্বসিত। পদপ্রত্যাশী নেতাদের তোরণ, ফেস্টুন আর পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো নগরী। ইতোমধ্যে সম্মেলনস্থলে শেষ হয়েছে মঞ্চ নির্মাণের কাজ।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এ সম্মেলন খুব গুরুত্বপূর্ণ। নতুন কমিটিতে যারা আসবেন, তাদের দায়িত্ব থাকবে নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগকে সর্বোচ্চ ঐক্যবদ্ধ অবস্থায় রাখা। তাই নতুন কমিটিতে কারা পদ পাচ্ছেন, তা নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে চলছে আলোচনা।
এবারের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা আবারও প্রার্থী হয়েছেন। এ ছাড়াও সভাপতি প্রার্থী হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক মো. জালাল উদ্দিন খান, হালুয়াঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ খানের প্রচারণা দেখা গেছে। এই তিনজনের বাইরেও গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, বর্তমান জেলা কমিটির সহসভাপতি সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আহমেদ ও ফারুক আহমেদ খান আলোচনায় রয়েছেন।
আর সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী মহানগর কমিটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত, বর্তমান জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ কুদ্দুস, শওকত জাহান মুকুল ও সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ আলী আকন্দ।
অন্যদিকে মহানগরের সভাপতি পদে আলোচনায় আছেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগরের সহসভাপতি ইকরামুল হক টিটু। এ ছাড়া বর্তমান সভাপতি এহতেশামুল আলম ও সাদেক খান মিল্কী সভাপতি পদপ্রত্যাশী।
আর সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান কমিটির সহসভাপতি অধ্যাপক গোলাম ফেরদৌস জিল্লু, যুগ্ম সম্পাদক হোসাইন জাহাঙ্গীর বাবু ও সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারুল হক।
মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি এহতেশামুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত পাঁচ বছর ধরে আমি দলকে সুষ্ঠুভাবে চালিয়েছি। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে ৩৩টি ওয়ার্ডে সমানতালে কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। বেশির ভাগ ওয়ার্ডে কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি দিতে সক্ষম হয়েছি। আমি আশা করি, আমাকে আবারও সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হবে।’
মহানগরের সহসভাপতি ও সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে দলকে আগলে রাখার চেষ্টা করছি। দলীয় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে বিএনপি-জামায়াতবিরোধী আন্দোলন অব্যাহত রেখেছি।
‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি মহানগরের সভাপতি হিসেবে আমাকে সুযোগ দেন, তাহলে আমি নিজের সর্বশক্তি দিয়ে দলের জন্য কাজ করব। এতদিনের কাজ বিবেচনায় দল সঠিক মূল্যায়ন করবে বলে আশা করি।’
একই কথা জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক। তিনি বলেন, ‘স্বচ্ছতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে চেষ্টা করেছি। তাই সভাপতি পদ পরিবর্তন হবে বলে আমার মনে হয় না।’
জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নৌকার আদলে মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। মঞ্চে ২০০ জনের বসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সমাবেশে কয়েক লাখ লোকের সমাগম ঘটবে বলে আশা করছি।’
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় বেশ কয়েকজন নেতা সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন বলেও জানান অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল।