পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার বলেছেন, ‘পাবর্ত্য অঞ্চলের আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে বিতারণের চেষ্টায় দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। এই বাহিনী, সেই বাহিনী, পঞ্চম বাহিনী গড়ে তোলে সমাধান নয়। যাদের সাথে চুক্তি করেছেন, তাদের সঙ্গে আরও বসেন।’
পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার সকালে কুমার সুমিত রায় জিমনেসিয়াম মাঠ প্রাঙ্গণে এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন উষাতন তালুকদার।
তিনি আরও বলেন,‘সন্তু লারমাকে বলা হচ্ছে দেশদ্রোহী। তিনি দেশপ্রেমিক। দেশপ্রেমিক বলে ২৫ বছর ধরে চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য অপক্ষো করে আছেন। সরকারকে বুঝতে হবে। সন্তু লারমা হয়তো মান অভিমান, ক্ষোভ, দুঃখ-বেদনার দুই-একটি কথা বলেছেন বলে কি উনি আপনাদের শত্রু হয়ে গেলেন নাকি?
‘পাহাড়ের মানুষ বাংলাদেশকে ক্ষতি করবে না। বরং আদিবাসীরা বাংলাদেশের সুনাম বয়ে আনছে। নারী ফুটবল খেলোয়ার রিতুপর্ণা চাকমা, গোলরক্ষক রূপনা চাকমা, মনিকা চাকমা, আনুচিং, আনাই, ময়মনসিংহের মারিয়া মান্ডা ও বক্সার সুরকৃষ্ণ চাকমা– এরা দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে।’
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির রাঙামাটি জেলা কমিটির আয়োজনে রাঙামাটিতে পালিত হয় দিনটি।
গণসমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সভাপতি ডাক্তার গঙ্গা মানিক চাকমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের পার্বত্য অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, এম এন লারমা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিজয় কেতন চাকমা, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মামুন, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি সুমন মারমা ও যুব হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী শান্তি দেবী তনচংগ্যা।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, পার্বত্য তিন জেলা সামরিক শাসনের মতো পরিচালিত হচ্ছে। সাধারণ জনগণ নিজের ইচ্ছেমতো চলতে পারে না। রাতে টর্চলাইটের আলোতেও চলাফেরা করা যায় না।
তারা বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে আওয়ামী লীগের লোকজনকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি পায়তারা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি এত বড় শক্তিশালী নয় যে তাদের নিশ্চিহ্ন করে দেবে। বরং আওয়ামী লীগের নেতারা নিজেরে স্বার্থ আদায় করে যাচ্ছেন। জেলা পরিষদের নির্বাচন না করে নিজেদের দলীয় আওয়ামী লীগ কর্মীদের চেয়ারে বসানো হচ্ছে। সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা আওয়ামী লীগের লোকেরা ভোগ করছেন। সরকার চাইলে এসব কিছু সমাধান দিতে পারত। ভূমি কমিশন আইন হলেও সরকারের সদিচ্ছা না থাকায় এ কমিশনের বিধিমালা প্রণয়ন হচ্ছে না। ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান ভূমি সমস্যা নিরসন হচ্ছে না।