স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির অভিযোগে চাকরি প্রার্থীদের বিক্ষোভের মুখে মেট্রোরেলের টিকিট মেশিন অপরাটের পদে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
শুক্রবার মেট্রোরেলের স্বত্বাধিকারী সরকারি মালিকানাধীন ‘ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড’ পরীক্ষা স্থগিতের এ সিদ্ধান্ত নেয়।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল ১০টায় ঢাকার মিরপুর ক্যান্টনম্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে মেট্রোরেলের টিকেট মেশিন অপারেটর পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
প্রবেশপত্রে উল্লেখ করা ছিল, পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষার হলে উপস্থিত থাকতে হবে। নিয়ম মেনে পরীক্ষার্থীরাও উপস্থিত হয়েছিলেন।
ডিএমটিসিএল-এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কথা ছিল পরীক্ষা শুরু হবে সকাল ১০টায়। পরীক্ষার জন্য সময় নির্ধারিত ছিল ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট। কিন্তু পরীক্ষা শুরু হয় ৩০ মিনিট দেরিতে।
বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, ৩০ মিনিট দেরিতে পরীক্ষা শুরু হলেও ৫ মিনিট পরই ওএমআর শিট নিয়ে যাওয়া হয়। কোনো কোনো কক্সে মাত্র এক মিনিট পরও তা নিয়ে যাওয়া হয়।
তারা আরও অভিযোগ করেন, কিছু কিছু কক্ষে দরজা আটকে অনেকের পরীক্ষা নেয়া হয়।
এ অবস্থায় ১১টার পর পরীক্ষার্থীরা বাইরে এসে স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের পরীক্ষার্থীদের অনেকেই রংপুর, কুমিল্লা, ময়মনসিংহসহ দূর-দুরান্ত থেকে এসেছেন। তারা অভিযোগ করেন, মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ তাদের পরীক্ষা নেয়ার নামে হয়রানি করেছে।
এক পর্যায়ে স্থগিত না করা পর্যন্ত পরীক্ষার হল ত্যাগ না করার সিদ্ধান্ত নেন চাকরিপ্রার্থীরা। তারা বলেন, ‘এর আগেও এমন অনেক পরীক্ষা হয়েছে। পরে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’
পরীক্ষার্থীদের অনেকে জানান, ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে তারা মেট্রোরেলের পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন।
বিক্ষোভের এক পর্যায়ে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) এক কর্মকর্তা এসে পরীক্ষার্থীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে পরীক্ষা স্থগিতে সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘টিকিট মেশিন অপারেটর পদে ১৬২৫ আবেদনকারী ছিল। সবার পরীক্ষা এক জায়গায় হওয়ার কথা ছিল। টোটাল পরীক্ষাটা আমরা এই পরিস্থিতির কারণে স্থগিত করেছি।’
নিয়োগ পরীক্ষাটি বাতিল সিদ্ধান্তের কথা জানান ডিএমটিসিএল কর্মকর্তাএ সময় বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা পরবর্তী সময়ে আবারও নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন কি-না জানতে চান ওই কর্মকর্তার কাছে। তিনি আশ্বস্ত করেছেন, সবাই আবারও পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন।
তিনি বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বরের পরে মেট্রোরেলের উদ্বোধন হবে। তখন থেকেই যেসব কাজ করবেন তাদের জন্যই এই পরীক্ষা। যেহেতু একটা ঘটনা ঘটেছে, আপনাদের মনে প্রশ্ন এসেছে, এটাকে নিশ্চিত করার জন্য কর্তৃপক্ষ পরীক্ষাটা স্থগিত করেছে।’
দ্রুত পরীক্ষার নেয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা খুব দ্রুতই আপনাদের জানাব। আপনাদের সব আবেদন আমাদের কাছে রেডি করা আছে।’
কর্তৃপক্ষের এমন আশ্বাসে পরীক্ষার হল ছাড়েন আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা।