কেউ জীবন্ত প্রজাপতি দেখছে, কেউ বা আবার শরীরে আঁকছে প্রজাপতির আল্পনা। কেউ কেউ রং-তুলিতে আঁকছে প্রজাপতির রঙিন ছবি। এভাবেই শিশুদের পদচারণায় প্রাণবন্ত ছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রজাপতি মেলা।
শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের আয়োজনে জহির রায়হান অডিটোরিয়ামের সামনে শুরু হওয়া এ মেলা চলে বিকেল পর্যন্ত।
মেলার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য শেখ মনজুরুল হক। তিনি বলেন, ‘প্রজাপতি সংরক্ষণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে এই ক্যাম্পাসে প্রজাপতির সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে বলেও শোনা যাচ্ছে। আমরা চিন্তা করছি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা নির্দিষ্ট জায়গাকে শুধুমাত্র প্রজাপতির জন্য নির্দিষ্ট করে দেয়া যায় কি-না।’
এবারের মেলায় ছিল জীবন্ত প্রজাপতি প্রদর্শনী, প্রজাপতির হাট দর্শন, শিশু-কিশোরদের জন্য প্রজাপতি নিয়ে ছবি আঁকা ও কুইজ প্রতিযোগিতা, প্রজাপতি বিষয়ক আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা ও প্রদর্শনী, প্রজাপতি চেনা প্রতিযোগিতা, প্রজাপতির আদলে তৈরি ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা, বারোয়ারি বিতর্ক প্রতিযোগিতা, প্রজাপতি বিষয়ক তথ্যচিত্র প্রদর্শন ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান।
প্রকৃতি সংরক্ষণে সার্বিক অবদানের জন্য এবারের প্রজাপতি মেলায় ‘তরুপল্লব’ সংগঠনকে ‘বাটারফ্লাই অ্যাওয়ার্ড-২০২২’ দেয়া হয়। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী দীপ্ত বিশ্বাসকে দেয়া হয় ‘বাটারফ্লাই ইয়াং ইনথুজিয়াস্ট’ অ্যাওয়ার্ড।
বাবার সঙ্গে রাজধানীর শ্যামলী থেকে মেলা দেখতে আসা নার্সারিতে পড়া আদিন আহমেদ। সে নিউজবাংলাকে বলে, ‘বাবার সঙ্গে মেলায় ঘুরতে এসেছি। অনেক রঙের প্রজাপতি দেখেছি, চিত্র এঁকেছি। মেলায় এসে আমার ভাল্লাগছে।’
মেলার আহ্বায়ক প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘একটা সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রজাপতি ছিল ১১০ প্রকার। এখন সে সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৫২টিতে। প্রাণ-প্রকৃতির প্রতি গণসচেতনতা বাড়ানো এবারের প্রজাপতি মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য। মানুষের প্রকৃতির প্রতি, প্রজাপতির প্রতি সচেতন হওয়া উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রজাপতি মেলাকে ঘিরে প্রকৃতিপ্রেমীদের তীর্থক্ষেত্র হয়ে উঠেছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা উঁচুতে তুলে ধরবে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রজাপতি মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রজাপতি সংরক্ষণ ও জনসচেতনতা বাড়াতে এই মেলার আয়োজন করা হয়।