মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধসহ ১১ দফা দাবীতে রাজশাহী বিভাগে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও নাটোরে যাত্রীদের ভোগান্তির চিত্র দেখা গেছে।
শুক্রবার ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে সকাল থেকেই শহরের বড়হরিশপুর, বাইপাস চত্বর, মাদ্রাসা মোড়, বনপাড়া বাইপাস থেকে কোন ধরনের যাত্রীবাহী বাস চলাচল করতে দেখা যায়নি।
যাত্রীবাহী গাড়ী চলাচল না করায় ভোগান্তিতে পড়েছে কর্মজীবী মানুষ ও বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতকারী যাত্রীরা। জরুরী প্রয়োজনেও অনেকেই গন্তব্যে যেতে পারছেন না। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বাস চালক ও সহকারীরাও পড়েছেন বিপদে।
গাড়ি বন্ধ থাকলে তাদের আয় থকে না। ফলে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। তারা এই ধর্মঘট নয় শান্তিপূর্ণভাবে গাড়ি চালাতে চান।
জামান আলী নামে এক যাত্রী বলেন, ‘গত রাত (বৃহস্পতিবার) ১১টায় জানতে পারি আমার বড় বোন গুরুতর অসুস্থ। দ্রুত আমাকে ঢাকায় যেতে হবে। সকালে বের হয়ে বড়হরিশপুর কাউন্টারে এসে দেখি বাস বন্ধ। কিভাবে গন্তব্যে যাব তা নিয়ে খুবই দুঃচিন্তায় আছি।’
হাসান আলী নামে আরেক যাত্রী বলেন, ‘আমি চট্টগ্রাম থেকে এসেছি, রাজশাহীতে যাব। এখন নাটোরে এসে আটকে গেছি। লম্বা একটা সময় জার্নি করে এসে এই ভোগান্তি ভাল লাগছে না। ধর্মঘট দিয়েই দায় সারে পরিবহন মালিকরা। আমাদের মতো সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথা মাথায় রাখে না।’
হোসাইন আলী নামে আরেক যাত্রী জানান, কোম্পানীর কাজে কুষ্টিয়া থেকে রাজশাহী যাবার উদ্দেশ্যে বের হয়েছি। ভোগান্তিতো হচ্ছেই। সেই সঙ্গে দ্বিগুণ, তিনগুণ টাকা খরচ হচ্ছে।
গত ২৬ নভেম্বর রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংশোধন করাসহ হাইকোর্টের নির্দেশানুযায়ী মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে থ্রি হুইলার, সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ ও জ্বালানি তেলসহ যন্ত্রাংশের দাম কমানোসহ ১১ দফা বাস্তবায়নে পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা দেয় রাজশাহী বিভাগীয় সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক পরিষদ।
এদিকে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির মহাসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতেই সরকারের সহযোগী হিসাবে বাস ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। তারপরেও সরকার রাজশাহীর মহাসমাবেশের গণজোয়ার থামাতে পারবে না।
তবে নাটোর বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি লক্ষন পোদ্দার জানান, তাদের দীর্ঘদিনের দাবি আদায়ে আলটিমেটাম দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই ব্যাপারে কোনও ঘোষণা না আসায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশের সঙ্গে এই কর্মসূচির কোনও সম্পর্ক নেই।