বরিশাল নগরীতে নগর ভবনের সামনের রাস্তা আটকে পার্বত্য শান্তি চুক্তি দিবস উদযাপনের জন্য মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত এই সমাবেশ হবে শুক্রবার বিকেলে। এ জন্য রাস্তার উপর মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয় বুধবার রাত থেকে।
গুরুত্বপূর্ণ সড়ক আটকে এই আয়োজনের কারণে বিকল্প পথ ব্যবহারে ভোগান্তি হচ্ছে জানিয়ে ক্ষুব্ধ নগরবাসী।
ঘটনাস্থলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গিয়ে দেখা গেছে, পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সমাবেশের মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। প্রশস্ত সড়কটি আটকে মঞ্চ তৈরি করায় যান চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।
অটোরিকশাচালক মাইনুল হোসেন বলেন, ‘মানুষের তো কমন সেন্স থাকে ভাই। পুরো রাস্তা আটকে মঞ্চ করছে। যাত্রীরা তো অনেক ঝামেলায় পড়ে গেছে। পুলিশ অন্য পথ দিয়ে যেতে বলে। অনেক ঘোরা লাগে।
‘যেখানে মঞ্চ করেছে, সেখান থেকে লঞ্চ ঘাট ৩ মিনিটের পথ। কিন্তু ঘুরে অন্য পথ দিয়ে যেতে অনেক সময় লাগে। যাত্রীরা ঘুরতে চায় না।’
ওষুধ বিক্রেতা ইমদাদুল হক মাসুম বলেন, ‘মোটরসাইকেল নিয়ে বিআরটিএ অফিস যাচ্ছিলাম। সিটি করপোরেশনের সামনে এসে দেখি রাস্তা বন্ধ। স্টেজ করছে। তারপর ঘুরে বরিশাল ক্লাবের সামনে দিয়ে বিআরটিএ অফিসে গেছি।
‘এমনভাবে স্টেজ করেছে যে একটা মোটরসাইকেলও যেতে পারে না। আওয়ামী লীগের নেতাদের এ কেমন চিন্তা ভাবনা বুঝি না।’
কলেজ শিক্ষক মোশাররেফ হোসেন বলেন, ‘এই সড়কটাতে ফায়ার সার্ভিস আছে। কোনো ধরণের দুর্ঘটনা যদি ঘটে তাহলে তো এই সড়ক হয়েই বের হতে হবে। এখন কি তারা বাইপাস সড়ক দিয়ে ঘুরে বের হবে?
‘এই সড়ক হয়ে লঞ্চঘাট, পোস্ট অফিস, সিটি করপোরেশন, ডিসি অফিস, বিআরটিএ অফিস, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসসহ গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে সপ্তাহের শেষ দিনে যেতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। যেমন আমারই ডিসি অফিসে কাজ ছিল। রিকশা নিয়ে প্রথমে নগর ভবনের সামনের সড়কে গেলেও, পরে ঘুরে যেতে হয়েছে।’
ঘুরে যেতে রিকশাওয়ালাকে বাড়তি টাকা দিতে হয়েছে জানিয়ে বাধ রোড এলাকার হুমায়রা বেগম বলেন, ‘আমাদের মেয়র কেন তার নগরবাসীর জন্য ভোগান্তির সৃষ্টি করলেন বুঝতে পারলাম না। এই স্টেজ তো কোনো মাঠেও করা যেত।’
এ বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বরিশাল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘হাজী মোহাম্মদ মহসিন মার্কেটের নাম যে পাল্টেছে তা চোখে পড়ে না। আর রাস্তাটা যে একটু আটকেছে তা চোখে পড়েছে?’
সড়ক আটকে সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে জানতে বরিশাল মহানগর পুলিশের দক্ষিণ জোনের উপ কমিশনার আলী আশরাফ ভূঞা জানান, তিনি অনুমতির বিষয়ে অবগত নন।
তবে পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘অনুমতির জন্য চিঠি দেয়া হয়েছিল। অনুমতি দেয়া হয়েছে নগর ভবনের সামনের সড়কে সমাবেশ করার জন্য।’