রাজশাহীর সব জেলায় বাস বন্ধ সকাল থেকে। তাতেও থেমে নেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের ঢল। ট্রাকে-ট্রেনে চড়ে তারা শনিবারের বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিতে দলে দলে ভিড়ছেন নগরীতে। তবে সমাবেশস্থলে পুলিশ কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। নেতা-কর্মীরা পাশের মাঠে অবস্থান নিচ্ছেন।
রাজশাহীতে আসা সব ট্রেনে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ছিল নেতা-কর্মীদের উপচে পড়া ভিড়। রাজশাহী রেলস্টেশন ঘুরে দেখা গেছে ট্রেনের বগিগুলো নেতা-কর্মীতে ঠাসা। সবাই স্লোগান দিচ্ছেন। স্টেশন থেকে বের হয়ে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে তারা সমাবেশস্থলের দিকে যাচ্ছেন।
অনেকে আবার ট্রাক রিজার্ভ করে দল বেঁধে আসছেন।
ট্রাকে চেপে নওগাঁ থেকে এসেছেন শামিম ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বাস বন্ধ। তাই সমাবেশে আগেই চলে আসতে হলো। খাবার ও অনান্য সামগ্রী নিয়ে সবাই মিলে আজকে একটি ট্রাক ভাড়া করে আসছি।’
পাবনার বিএনপি কর্মী আব্দুল কাদের বাসে করেই এসেছেন বুধবার সন্ধ্যায়। তবে তার দলের আরও ৫০০ নেতা-কর্মী ট্রেনে করে আসছেন ঈশ্বরদী থেকে।
তিনি বলেন, ‘তিন দিন থাকা-খাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েই আসছি। সমাবেশ শেষ করেই ফিরব।’
এদিকে সমাবেশস্থল রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না পুলিশ। এ কারণে পাশের ঈদগাহ মাঠেই অবস্থান করছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। সেখানেই তাঁবু টাঙিয়ে রান্না করে খাচ্ছেন তারা।
মনোয়ার হোসেন এসেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, আমাদের সমাবেশের দিন আসতে দেবে না। তাই আগেই চলে এসেছি। আসার সময় আমরা চাল, সবজি, শুকনো খাবার নিয়ে এসেছি। এগুলো খেয়ে আমরা সমাবেশ পর্যন্ত এখানেই থাকব।’
গত বুধবার দুপুরে ৮ শর্তে সমাবেশের অনুমতি পায় বিএনপি। সেদিন সন্ধ্যার পর থেকে মাদ্রাসা মাঠের দিকে আসতে শুরু করেন নেতা-কর্মীরা। তারা মাদ্রাসা মাঠের পাশের সড়কে ও রাজশাহী কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে অবস্থান নিয়েছিলেন। সেখানে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে রান্না, খাওয়া-দাওয়া। তাঁবু টাঙিয়ে যে যার মতো ঘুমিয়েছেন।
বুধবারই বাস বন্ধের ঘোষণা চলে আসে পরিবহন নেতাদের পক্ষ থেকে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হয় ধর্মঘট। পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা বলেছেন, সড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধসহ ১০ দফা দাবিতে তারা এই ঘর্মঘট ডেকেছেন।
বাস বন্ধ থাকলেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঈদগাহ মাঠে নেতা-কর্মীর সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। আগের দিন বিচ্ছিন্নভাবে মাঠে এলেও বৃহস্পতিবার ৪০ থেকে ৫০ জন বা ১০০ থেকে ২০০ জনের দল মিছিল করতে করতে মাঠে আসে।