কক্সবাজারের মহেশখালীর গোরকঘাটা বাজারে দুর্বৃত্তের গুলিতে তৎকালীন জেলা পরিষদ সদস্য ও তরুণ রাজনীতিক ২৮ বছর বয়সী খাইরুল আমিন সিকদার নিহত হওয়ার ৩১ বছর পর ওই হত্যা মামলায় ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এ ছাড়া প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আব্দুল্লাহ আল মামুন বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন মহেশখালীর সাবেক মেয়র সরওয়ার আজম, তার দুই ভাই মৌলভি জহির উদ্দিন ও নাসির উদ্দিন এবং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান শামসুল আলম, অ্যাডভোকেট হামিদুল হক ও সাধন নামের এক যুবক। রায় ঘোষণার সময় সাধন ছাড়া বাকি পাঁচজন উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) সুলতানুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত ১০ নভেম্বর যুক্তিতর্ক শেষে আদালত ২৪ নভেম্বর রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন। তবে সপ্তমবারের মতো রায় ঘোষণার তারিখ পেছানো হয়। পূর্ব নির্ধারিত দিন অনুযায়ী আজ আদালত রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে ২৬ আসামির মধ্যে ছয়জনকে যাবজ্জীবন ও বাকি ২০ জনকে খালাস দেন। এ মামলা চলার সময়ে সাতজন আসামি মারা গেছেন। মারা যাওয়া আসামিদের মধ্যে আছেন মহেশখালীর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুর বক্স, স্থানীয় বাসিন্দা রহিম সিকদার, আমির হোসেন ও আজিজুল হক।
এদিকে মামলার দুই আসামি জহির উদ্দিন ও মো. ইব্রাহিম হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আদালতের পর্যবেক্ষণের বরাতে এপিপি বলেন, ‘আদালত মনে করছেন, এটি একটি রাজনৈতিক বিরোধে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ড, যা আদালতে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।’
১৯৯০ সালের ৯ এপ্রিল বিকেল ৫টার দিকে মহেশখালীর গোরকঘাটা বাজারে দুর্বৃত্তের গুলিতে খুন হন তৎকালীন জেলা পরিষদ সদস্য ও তরুণ রাজনীতিক খাইরুল আমিন সিকদার। তিনি গোরকঘাটার হামজা মিয়া সিকদারের ছেলে।
ওই দিন নিহত খাইরুল আমিনের বড় ভাই মাহমুদুল করিম মহেশখালী থানায় মহেশখালীর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুর বক্স, পুটিবিলার শামশুল আলম, নাসির উদ্দিন, হামিদুল হকসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঘটনার তদন্ত করে এজাহারভুক্ত ২৫ জনসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন ওই বছরের ২২ নভেম্বর।
২০০৩ সালের ২৭ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত।