মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে রাজশাহী বিভাগে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। এতে তিন জেলার যাত্রীরা পড়েছে ভোগান্তিতে।
বিএনপির নেতারা বলছেন, আগামী শনিবার রাজশাহীতে অনুষ্ঠেয় তাদের বিভাগীয় সমাবেশকে বাধা দিতেই এ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে, তবে বাস মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, সমাবেশের সঙ্গে তাদের ধর্মঘটের সম্পর্ক নেই।
রাজশাহী, নওগাঁ ও নাটোরের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য অনু্যায়ী যাত্রীদের ভোগান্তির বিষয়টি জানা গেছে।
রাজশাহী
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজশাহী থেকে কোনো রুটে বাস ছেড়ে যায়নি। অন্য জেলা থেকে কোনো বাস রাজশাহীতে প্রবেশ করেনি।
বাস চলাচল বন্ধ থাকায় সকাল থেকে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। অটোরিকশা বা ছোট বাহনে করে মানুষ গন্তব্যে যাচ্ছেন। এজন্য তাদের বাড়তি ভাড়াও গুনতে হচ্ছে।
বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে দূর-দূরান্ত থেকে সমাবেশস্থল মাদ্রাসা মাঠে আসতে শুরু করেন। তারা সমাবেশস্থলের লাগোয়া রাজশাহী কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে অবস্থান নিতে শুরু করেন। রাত ১২টার দিকে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী অবস্থান নেন সেখানে।
নওঁগা
বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘটের মধ্যে বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন নওগাঁ থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা।
শহরের বালুডাঙ্গা ব্যাসস্টান্ডে দাঁড়িয়ে যাত্রী শারমিন বেগম বলেন, ‘জরুরি একটি কাজে সাড়ে ১০টার মধ্যে রাজশাহী যেতে হবে। প্রায় ৪০ মিনিট থেকে অপেক্ষা করেও কোনো যানবাহন পাচ্ছি না।
‘কয়েক দিন পরপর পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা ধর্মঘটের ডাক দেন। এতে অন্য কারও কিছু না হলেও যাত্রীদের হয়রানি এবং ভোগান্তির শিকার হতে হয়।’
বাসস্ট্যান্ডে আসা আরও দুই যাত্রী আলাউদ্দিন আহমেদ ও কবির হোসেন জানান, বাসস্ট্যান্ডে আসার আগে তারা ধর্মঘটের কথা শুনেছেন। ভেবেছিলেন বিকল্প কোনো বাহনে করে যাবেন, কিন্তু স্ট্যান্ডে এসে কোনো কিছুই পাচ্ছেন না। এমনকি সিএনজিচালিত অটোরিকশাও দেখা যাচ্ছে না। আবার যেগুলো আছে, বেশি ভাড়া চাচ্ছে।
নাটোর
বৃহস্পতিবার ধর্মঘটের প্রথম দিনে সকাল থেকেই নাটোর থেকে কোনো ধরনের বাস ও গাড়ি চলাচল করতে দেখা যায়নি। গাড়ি চলাচল না করায় ভোগান্তিতে পড়েছে কর্মজীবী মানুষ।
জরুরি প্রয়োজনেও তাদের গন্তব্যে যেতে পারছেনা তারা। গাড়ি বন্ধ থাকায় বাস চালক ও সহকারীরাও পড়েছে বিপদে।
আমিনুল ইসলাম নামে এক যাত্রী জানান, কাজে যাওয়ার জন্য বের হয়ে কোনো গাড়ি পাচ্ছেন না। সময়মত অফিসে পৌঁছাতে না পারলে সমস্যা হবে। বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন বিকল্পভাবে যেতে হবে কিন্তু তাতে অনেক টাকা খরচ হবে। এভাবে সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা না করে যখন তখন ধর্মঘট দেয়া ঠিক না।
রিতু সুলতানা নামে এক শিক্ষার্থী জানান, মাকে নিয়ে ঢাকায় বেড়াতে যাবার উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন। বড়হরিশপুর এলাকায় এসে দেখেন বাস চলছে না। ধর্মঘট শুধু ভোগান্তি বাড়ায় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাস ড্রাইভার হানিফ আলী বলেন, ‘ধর্মঘটে বাস না চললে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। যেহেতু এটা পরিবহন কর্তৃপক্ষের ব্যাপার, তাই এ নিয়ে বেশি কথা বলা ঠিক হবেনা।’