মহাসড়কে নছিমন, করিমন, ভটভটির মতো অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে নওগাঁয় শুরু হওয়া অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘটের মধ্যে বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন নওগাঁ থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা।
বিএনপির নেতারা বলছেন, আগামী শনিবার রাজশাহীতে অনুষ্ঠেয় তাদের বিভাগীয় সমাবেশকে বাধা দিতেই এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে, তবে বাসমালিক সমিতির নেতারা বলছেন, সমাবেশের সঙ্গে তাদের ধর্মঘটের সম্পর্ক নেই।
কী বলছেন যাত্রীরা
শহরের বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে যাত্রী শারমিন বেগম বলেন, ‘জরুরি একটি কাজে সাড়ে ১০টার মধ্যে রাজশাহী যেতে হবে। প্রায় ৪০ মিনিট থেকে অপেক্ষা করেও কোনো যানবাহন পাচ্ছি না।
‘কয়েক দিন পর পর পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা ধর্মঘটের ডাক দেন। এতে অন্য কারও কিছু না হলেও যাত্রীদের হয়রানি এবং ভোগান্তির শিকার হতে হয়।’
বাসস্ট্যান্ডে আসা আরও দুই যাত্রী আলাউদ্দিন আহমেদ ও কবির হোসেন জানান, বাসস্ট্যান্ডে আসার আগে তারা ধর্মঘটের কথা শুনেছেন। ভেবেছিলেন বিকল্প কোনো বাহনে করে যাবেন, কিন্তু স্ট্যান্ডে এসে কোনো কিছুই পাচ্ছেন না। এমনকি সিএনজিচালিত অটোরিকশাও দেখা যাচ্ছে না। আবার যেগুলো আছে, বেশি ভাড়া চাচ্ছে।
বিএনপি ও মালিক সমিতির ভাষ্য
বাস চলাচল বন্ধের বিষয়ে নওগাঁ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব বায়েজিদ হোসেন পলাশ বলেন, ‘এটা সারা দেশেই হচ্ছে। বিএনপির গণসমাবেশের দু-এক দিন আগে থেকেই এই ধর্মঘটের ডাক দিচ্ছেন। আমাদের এখানেও হবে জেনেই আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
‘আমাদের কেউ কোনোভাবেই আটকে রাখতে পারবে না। ইতোমধ্যে আমাদের নেতা-কর্মীরা রাজশাহী যেতে শুরু করেছেন। সমাবেশ সফল করতে যেকোনোভাবে আমরা রাজশাহী যাব।’
নওগাঁ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংশোধন, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে নছিমন, করিমন, ভটভটিসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ ও জ্বালানি তেলসহ যন্ত্রাংশের মূল্য হ্রাস করাসহ বেশ কিছু আমাদের দাবি সরকারের কাছে ছিল। এই দাবির কারণেই রাজশাহী বিভাগের ৮টি জেলায় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট চলছে।
‘গত ২৬ তারিখে মোটর মালিক, শ্রমিক সবাই মিলে নাটোরে একটি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেন। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের দাবি মেনে না নেয়া পর্যন্ত বা আশ্বাস না দেয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট চলবে।’
বিএনপির সম্মেলনের সঙ্গে ধর্মঘটের সম্পর্ক নেই দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমরা গত দুই মাস আগে থেকে এসব বিষয় নিয়ে মিটিং করেছি। গত ২৬ তারিখে নাটোরে একটি মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
‘এখানে নওগাঁর একক কোনো বিষয় নেই। এটা পুরো রাজশাহী বিভাগের বিষয়।’