মুন্সীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল থেকে ককটেল হামলার অভিযোগ উঠেছে।
সারা দেশে বিএনপি নেতা-কর্মীদের নামে মামলা ও ধরপাকড়ের প্রতিবাদে দুই জেলাতেই বুধবার রাতে মিছিল বের করে স্থানীয় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠন। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান জানান, বঙ্গবন্ধু সড়কের চাষাড়া এলাকায় পপুলারের গলি থেকে বিএনপির ও সহযোগী সংগঠনের একদল নেতা-কর্মী মশাল মিছিল থেকে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। তারা সড়কে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করে। পুলিশ গিয়ে ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। তবে ৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
ফতুল্লার কমর আলী স্কুলের সামনে ও শিবু মার্কেট এলাকাতেও মশাল মিছিল ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ফতুল্লা থানার ওসি রিজাউল হক।
রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক ও মাদানী নগর এলাকাতেও বিএনপির মিছিলের পর ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান জানান, স্থানীয় নেতা-কর্মীরা মশাল মিছিল শেষে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে আগুন দেয় ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। পুলিশ গিয়ে কাউকে পায়নি, তবে ককটেলের খোসা জব্দ করা হয়েছে।
ককটেল বিস্ফোরণে দায় নেননি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘আগামী ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমাদের ৭টি থানা এলাকাতেই নেতা-কর্মীদের নামে গায়েবী মামলা করা হয়েছে। সমাবেশকে ঘিরে এসব করা হচ্ছে, যাতে করে আমরা প্রস্তুতি নিতে না পারি। বাড়িঘর ছাড়া থাকি।’
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন বলেন, ‘পুলিশের করা মামলা মিথ্যা ও বানোয়াট। কাল্পনিক অভিযোগই এর প্রমাণ। বুধবার আমাদের কোনো মিছিল হয়নি।’
এদিকে, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ মিছিল থেকে ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ তুলেছে স্থানীয়রা। ছাত্রলীগ কর্মীদের অভিযোগ, মিছিল থেকে চালানো হামলায় তাদের ৩ জন আহত হয়েছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশের ভিটিকান্দি এলাকায় বুধবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটেছে।
গজারিয়া থানার এসআই সেকান্দার আলী ককটেল বিস্ফোরণের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি। এ সময় আমরা কয়েকটি বিস্ফোরিত ককটেলের আলামত দেখতে পাই। তবে কারা এ কাজ করেছে, এ বিষয়ে আমরা এখনও নিশ্চিত নই।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী দাবি করে অটোরিকশাচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সন্ধ্যায় ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড থেকে আনারপুরে যাওয়ার জন্য আমার অটোতে ওঠেন ৩ জন ছাত্রলীগ কর্মী। ভিটিকান্দি এলাকায় পৌঁছালে দেখি ৪০ থেকে ৪৫ জন বিএনপি নেতা-কর্মী মিছিল করছে। আমার অটোটা মিছিলের মাঝখানে পড়ে যায়।
‘এ সময় মিছিল থেকে অন্তত ১১টা ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। আমার অটোতে থাকা যাত্রীদের মারধর করে। অটোটাও ভাঙে তারা।’
হামলায় আহত ছাত্রলীগ কর্মী সুমন প্রধান বলেন, ‘কিছু বুঝে ওঠার আগেই বিএনপি নেতা-কর্মীরা মারধর করতে থাকে। আমার সাথে থাকা দুইজন দৌড়ে পালিয়ে বাঁচতে পারলেও আমাকে মারধর করা হয়।’
সুমন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানান ওসি।