৩ ডিসেম্বর বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ উপলক্ষে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে রাজশাহী আসতে শুরু করেছেন নেতা-কর্মীরা।
সমাবেশের তিন দিন আগে বুধবার সকাল থেকেই নগরীতে আসতে শুরু করেছেন এসব নেতা-কর্মী। তাদের বেশিরভাগই দলগতভাবে না এসে নিজ নিজ দায়িত্বে আসছেন। এমনকি চলাফেরাও করছেন অনেকটা বিচ্ছিন্নভাবে।
বিএনপির সমাবেশকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই পরিবহন মালিক শ্রমিকরা ১ ডিসেম্বর থেকে রাজশাহী বিভাগে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। এ কারণে বিভিন্ন জেলা থেকে নেতা-কর্মীরা বুধবারই আসতে শুরু করেছেন।
তবে এখনও কেউ সমাবেশস্থল বা আশপাশে অবস্থান নেননি। বরং সমাবেশস্থল এলাকায় এখন বিপুল সংখ্যক পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। মঙ্গলবার নেতা-কর্মীদের বিশ্রামের জন্য সমাবেশস্থলের পাশে প্যান্ডেল বানানোর চেষ্টা করেছিলেন বিএনপি নেতারা। কিন্তু পুলিশ তার অনুমতি দেয়নি।
বুধবার দুপুরে রাজশাহী মহানগর বিএনপি কার্যালয়ের সামনে দেখা মানুষের জটলা দেখা গেছে। কথা বলে জানা যায়, সমাবেশে যোগ দিতে তারা এসেছেন বগুড়া থেকে।
তাদেরই একজন বিএনপিকর্মী আব্দুল গফুর বলেন, ‘বাস তো বন্ধ হয়ে যাবে। তাই বুধবার সকাল ৭টায় গাড়িতে উঠেছিলাম। ১১টার দিকে রাজশাহীতে এসেছি। সমাবেশ শেষ করেই তিনি বাড়ি ফিরবো।’
কোথায় থাকবেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেখা যাক, কোথায় থাকার সুযোগ হয়। নিশ্চয়ই কোথাও না কোথাও রাত কাটাতে পারবো।’
বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলা থেকে আসা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিরোধী দল অবরোধ বা হরতাল দেয় শুনেছি। কিন্তু এখন তো সরকারই হরতাল দিচ্ছে। তাই আগেই চলে এসেছি। সাথে চিড়া, মুড়ি ও গুড় নিয়ে এসেছি। এসব খেয়েই কাটিয়ে দেব দুয়েকদিন।’
নেতা-কর্মীরা আসতে শুরু করেছেন- এমন তথ্য নিশ্চিত করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, ‘রাজশাহীতে মানুষ পদ্মা নদীর স্রোতের মতোই আসবে।’
১৫ লাখ মানুষের সমাগম হবে আশা প্রকাশ করে মিনু বলেন, ‘আমরা রাজশাহীর মানুষ অতিথি পরায়ণ। প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে আমাদের নেতা-কর্মীদের স্থান দেবে। নিজেরা না খেয়ে হলেও তাদের খেতে দেবে।’
বিএনপির সংবাদ সম্মেলন
৩ ডিসেম্বর রাজশাহীর বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে গায়েবি মামলা, হামলায় ত্রাস ছড়ানোর অভিযোগ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু।
বুধবার রাজশাহী নগরীর মালোপাড়া বিএনপি অফিসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন তিনি।
দুলু বলেন, ‘১ তারিখ থেকে পরিবহন ধর্মঘট। নেতা-কর্মীরা এখনই রাজশাহী চলে আসছেন। তাহলে তারা কোথায় থাকবেন? মাদ্রাসা মাঠ ১ তারিখের আগে ব্যাবহার করতে দেবে না। আমরা বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করেছিলাম। কিছু পুলিশ কর্মকর্তা তাদের হুমকি দিয়েছে গ্রেপ্তারের।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ যদি সরকারি দলের দায়িত্ব পালন করে তাহলে কোথায় যাবো? গুটি কয়েক পুলিশের জন্য পুরো পুলিশের দোষ হবে।’
হুমকি, গায়েবি মামলা, আতঙ্ক সৃষ্টিসহ সব বাধার পরও সমাবেশ সফল হবে বলে দাবি করেন দুলু। তিনি বলেন, ‘আজকের মধ্যেই লাখ লাখ মানুষ আসবে। তাদের আপনারা কোথায় রাখবেন? আমরা শান্তিপূর্ন ভাবেই সমাবেশ করতে চাই।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, রাজশাহী বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ।