বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

স্বপন হত্যা মামলায় ব্যবসায়ীর মৃত্যুদণ্ড, বান্ধবীর যাবজ্জীবন

  •    
  • ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ১৮:০৫

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মাকসুদা আহম্মেদ জানান, ২০১৮ সালের ১৮ জুন শহরের কালীর বাজারের ভোলানাথ জুয়েলার্সের স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর চন্দ্র ঘোষকে হত্যা করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশ প্রবীর হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে স্বপন হত্যার রহস্য উদঘাটন করে ফেলে।

নারায়ণগঞ্জ শহরের ব্যবসায়ী স্বপন কুমার সাহা হত্যার আলোচিত মামলায় স্বর্ণালঙ্কার ব্যবসায়ী পিন্টু দেবনাথকে মৃত্যুদণ্ড ও রত্না রানী চক্রবর্তী নামে এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

মঙ্গলবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ (প্রথম) আদালতের বিচারক উম্মে শারাবান তহুরা এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। আর এ মামলা থেকে খালাস দেয়া হয়েছে আব্দুল্লাহ আল মামুন মোল্লা নামে অপর আসামিকে।

আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ২০১৮ সালের ১৬ জুলাই পিন্টু দেবনাথ, তার বান্ধবী রত্না রানী চক্রবর্তী ও এলাকার বড়ভাই হিসেবে পরিচিত আবদুল্লাহ আল মামুন মোল্লাকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন নিহত স্বপনের বড়ভাই অজিত কুমার সাহা। মামলাটির রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত পিন্টু ও রত্না আরেকটি হত্যা মামলায় আগেই সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মাকসুদা আহম্মেদ জানান, ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর থেকে নিখোঁজ ছিলেন কাপড় ব্যবসায়ী স্বপন সাহা। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও না পেলে পরদিন নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করে স্বপনের পরিবার।

পরে তদন্তে বেরিয়ে আসে ফতুল্লা থানাধীন কাশিপুর উত্তর গোয়ালবন্দ এলাকায় এক মুসলিম মেয়েকে গোপনে বিয়ে করেন স্বপন কুমার সাহা এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নাম পরিবর্তন করে হন সাইদুল ইসলাম। ওই নারীও স্বপন নিখোঁজের ঘটনায় আরেকটি জিডি করে করেছিলেন ফতুল্লা থানায়। তবে শেষ পর্যন্ত স্বপনের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মাকসুদা আহম্মেদ আরও জানান, ২০১৮ সালের ১৮ জুন শহরের কালীর বাজারের ভোলানাথ জুয়েলার্সের স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর চন্দ্র ঘোষকে হত্যা করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশ প্রবীর হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে স্বপন হত্যার রহস্য উদঘাটন করে ফেলে।

তদন্তে বেরিয়ে আসে নিহত প্রবীর ও স্বপন ছিলেন আসামি পিন্টু দেবনাথের বন্ধু। প্রবীর হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হন পিন্টু ও রত্না রানীসহ তিনজন। সে সময় রত্নার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় তিনটি মোবাইল ফোন। সেই মোবাইলগুলো ছিল নিহত স্বপন সাহার।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রত্না জানান, মোবাইলগুলো তাকে পিন্টু দেবনাথ দিয়েছেন। আর স্বপনকে উৎসাহ দিয়ে ভারতে নিয়ে গিয়েছিলেন পিন্টু। ভারতে ফ্ল্যাট কিনে দেয়ার কথা বলে স্বপনের কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকাও নেন তিনি। কিন্তু স্বপনের নামে ফ্ল্যাট না কিনে নিজের ভাগ্নির নামে কেনেন পিন্টু। এ নিয়ে তাদের মনোমালিন্য হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আরও জানান, এক পর্যায়ে স্বপনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন পিন্টু। পরিকল্পনা অনুযায়ী, বান্ধবী রত্নাকে দিয়ে পিন্টুকে প্রেমের ফাঁদে ফেলা হয়।

ঘটনার দিন ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর রাতে স্বপনকে নিমন্ত্রণ করেন রত্না। সেখানে খাবারের সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করানো হয় স্বপনকে। এতে স্বপন অচেতন হয়ে গেলে রত্নার বাসায় থাকা শীল-পাটা দিয়ে মাথায় আঘাত ও শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করেন পিন্টু।

পরে স্বপনের মরদেহটি খণ্ড খণ্ড করে ব্যাগে ভরে শীতলক্ষ্যা নদীত ফেলে দেন আসামিরা। এ ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন তারা।

২০১৮ সালের ২০ নভেম্বর ওই মামলায় ৩ জনকেই অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দেয় গোয়েন্দা পুলিশ। ২০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৬ জনের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে আদালত পিন্টু দেবনাথকে মৃত্যুদণ্ড ও রত্না রানীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। আর আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে অন্য আসামিকে মামলা থেকে খালাস দেয়া হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর