বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সদরঘাটে নৌ চলাচল স্বাভাবিক, স্বস্তিতে যাত্রীরা

  •    
  • ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ১৬:২৯

ধর্মঘট প্রত্যাহারের পর মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা যায় পন্টুনে অপেক্ষা করছে দক্ষিণাঞ্চলগামী লঞ্চ। বেড়েছে যাত্রীদের আনাগোনা। পুরো সদরঘাট এলাকা সরব যাত্রী ও শ্রমিকদের হাঁকডাকে। বিভিন্ন জায়গা থেকে যাত্রীরা আসছে দক্ষিণাঞ্চলে যাওয়ার উদ্দেশে।

নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহারের পর সোমবার মধ্যরাতে রাজধানীর প্রধান নদীবন্দর সদরঘাট থেকে দক্ষিণাঞ্চলগামী লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক না হলেও মঙ্গলবার সকাল থেকে চিত্র পাল্টে গেছে। দিনের শুরু থেকেই এক ঘণ্টা পরপর ছাড়ছে চাঁদপুরসহ কাছের রুটগুলোতে চলাচলকারী লঞ্চ।

ভোরবেলা থেকেই বাড়তে শুরু করেছে যাত্রীর আনাগোনা। বরিশালসহ বেশি দূরত্বের রুটগুলোতে লঞ্চ চলবে মঙ্গলবার বিকেল থেকে। লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক হওয়ায় যাত্রীদের মাঝে ফিরেছে স্বস্তি।

মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পন্টুনে অপেক্ষা করছে দক্ষিণাঞ্চলগামী লঞ্চ। বেড়েছে যাত্রীদের আনাগোনা। পুরো সদরঘাট এলাকা সরব যাত্রী ও শ্রমিকদের হাঁকডাকে। বিভিন্ন জায়গা থেকে যাত্রীরা আসছে দক্ষিণাঞ্চলে যাওয়ার উদ্দেশে।

লঞ্চসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, সোমবার রাতে যাত্রী না থাকায় দক্ষিণাঞ্চলে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। তবে চাঁদপুরে গিয়েছে একটি লঞ্চ। মঙ্গলবার সকাল থেকেই ব্যস্ততা বেড়েছে সদরঘাটে। যাত্রীর উপস্থিতি বাড়ায় স্বাভাবিকভাবে লঞ্চ চলাচল অব্যাহত থাকবে বলে জানান তারা।

এদিন সকালেই চাঁদপুরের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে বেশ কয়েকটি লঞ্চ। এক ঘণ্টা পরপর চলছে এই রুটের লঞ্চগুলো। তবে শিডিউল অনুযায়ী বিকেল থেকে চলবে বরিশালসহ বেশি দূরত্বের রুটগুলোতে চলাচলকারী লঞ্চ।

ঢাকা থেকে চাঁদপুরগামী লঞ্চ এমভি জমজমের সুপারভাইজার আব্দুল হক বলেন, ‘ভোর থেকে চাঁদপুরের লঞ্চ চলাচল করছে। এক ঘণ্টা পরপর লঞ্চ ছাড়ছে। যাত্রী যদিও আগের মতো না, তবে বিকেলের দিকে আরও বাড়বে বলে আশা করছি।’

বরিশালগামী লঞ্চগুলোকেও ধুয়েমুছে পরিষ্কার করেছেন কর্মচারীরা। চলছে টিকিট বিক্রিও। ধর্মঘট প্রত্যাহারের পর আজই প্রথম ঢাকা থেকে চলবে এই রুটের লঞ্চগুলো।

পারাবত-১১-এর কর্মী সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল (সোমবার) রাতে বরিশালের দিকে কোনো লঞ্চ যায়নি। আজ (মঙ্গলবার) সন্ধ্যার পর থেকে বরিশালের লঞ্চ চলবে। আমরা টিকিট বিক্রি করছি। অনেক যাত্রীই এসে টিকিট নিয়ে যাচ্ছেন। আশা করি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক যাত্রী পাওয়া যাবে।’

নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করায় স্বস্তি ফিরেছে যাত্রীদের মাঝে। যাত্রী ও পণ্যবাহী উভয় ধরনের নৌযান আবার চালু হওয়ায় ব্যবসায়ীরাও পণ্য নিয়ে আসছেন সদরঘাটে। যাত্রীরাও রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে আসছে দক্ষিণাঞ্চলে যাওয়ার উদ্দেশে।

রামপুরা থেকে চাঁদপুর যাওয়ার উদ্দেশে আসা আব্দুল বাতেন বলেন, ‘জরুরি কাজে গতকাল চাঁদপুর যেতে চেয়েছিলাম। দুপুরে এসে শুনি ধর্মঘট। রাতে যখন আবার শুনলাম ধর্মঘট তুলে নেয়া হিয়েছে, সকালেই চলে এসেছি।’

বরিশালগামী যাত্রী রাজেশ রায় বলেন, ‘আমার পরীক্ষা শেষ হয়েছে পরশু দিন। সেদিনই বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শুনি ধর্মঘট। এদিকে আমি আবার বাসে ভ্রমণ করতে পারি না। আজ এসেছি টিকিট নিতে, সন্ধ্যায় লঞ্চে বাড়ি যাব।’

মিরপুর থেকে আসা ব্যবসায়ী হাসান মাহমুদ বলেন, ‘আমি গত পরশু দিন মাল এনে পন্টুনে নামিয়ে রেখেছি। এই কয়দিন মালগুলো এখানেই পড়ে ছিল। আজ সন্ধ্যায় লঞ্চে ভোলা নিয়ে যাব। মাল না নিয়ে যেতে পারায় এই কয়দিনে ব্যবসার অনেক ক্ষতি হয়েছে।’

নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের সদস্য আতিকুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘দাবি আদায়ে আমরা অনড় আছি, থাকব। আমাদের আশ্বাস দেয়া হয়েছে যে, আমাদের দাবিগুলো মেনে নেয়া হবে। আমরা পর্যবেক্ষণে থাকব। দীর্ঘসূত্রতা হলে আমরা আবার কঠোর আন্দোলনে নামব।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লঞ্চ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘এখন আমাদের লঞ্চ চলছে। সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে। আশা করছি আর কোনো সমস্যা হবে না। আমাদের সাথে শ্রমিকনেতাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। তাদের দাবির সাথে আমরাও একমত আছি।’

বিআইডব্লিউটিএ সদরঘাটের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মো. শহীদ উল্যাহ বলেন, ‘লঞ্চ মধ্যরাত থেকেই চলছে। নির্ধারিত সময়ে নিয়মিত চলাচল করা লঞ্চগুলো ঘাট থেকে ছেড়ে যাচ্ছে। আমাদের নৌ পুলিশ সার্বক্ষণিক টহলে রয়েছে।’

এর আগে ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা করাসহ ১০ দফা দাবিতে শনিবার মধ্যরাত থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের নৌযান ধর্মঘটে যায়। শুক্রবার নৌপরিবহনমন্ত্রী খালিদ মাহমুদের সঙ্গে মালিক-শ্রমিকদের আরও একটি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে মালিকরা এক মাসের সময় চাইলে শ্রমিকরা তা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ধর্মঘটে যায়।

পণ্যবাহী নৌযানের সঙ্গে সারা দেশে নৌপথে যাত্রী পরিবহন বন্ধ করে দেয় শ্রমিকরা। এতে ঢাকা থেকে যেমন কোনো রুটে নৌযান ছেড়ে যায়নি আবার ঢাকায়ও কোনো নৌযান আসেনি। অচল হয়ে পড়ে প্রধান দুই বন্দর চট্টগ্রাম এবং মোংলা।

এর আগে সোমবার বিকেলে শ্রম ভবনে প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সঙ্গে বৈঠকে বসেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, বিআইডব্লিউটি, শিপিং করপোরেশন, নৌ-যান মালিক ও শ্রমিকনেতারা। বৈঠক শেষে প্রতিমন্ত্রীর আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন নৌযান শ্রমিকনেতারা।

এ বিভাগের আরো খবর