বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পাতলা ডাক্তারের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার তদন্ত শেষ

  •    
  • ২৮ নভেম্বর, ২০২২ ২৩:৩৩

তদন্ত সংস্থা জানায়, আসামি সৈয়দ শওকাতুল ইসলাম ওরফে পাতলা ডাক্তারের বিরুদ্ধে ১০ হত্যাকাণ্ডসহ তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে চারজনকে ধর্ষণ, দেড় শতাধিক লোককে আটক-নির্যাতন এবং দুই শতাধিক বাড়িঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে।

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির সৈয়দ শওকাতুল ইসলাম ওরফে পাতলা ডাক্তারের বিরুদ্ধে একাত্তর সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তদন্ত শেষ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

শিগগিরই এ প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে জমা দেয়া হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

সোমবার ধানমণ্ডিতে তদন্ত সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক এম সানাউল হক। এটি তদন্ত সংস্থার ৮৬তম প্রতিবেদন বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, আসামি সৈয়দ শওকাতুল ইসলাম ওরফে পাতলা ডাক্তারের বিরুদ্ধে ১০ হত্যাকাণ্ডসহ তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে চারজনকে ধর্ষণ, দেড় শতাধিক লোককে আটক-নির্যাতন এবং দুই শতাধিক বাড়িঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে।

তার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ৬ মার্চ তদন্ত শুরু হয়। তিন বছর ৮ মাস ২০ দিন তদন্ত করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এই মামলার দুই আসামির মধ্যে একজন ইতোমধ্যে মারা গেছেন। আর গ্রেপ্তার শওকাতুল ইসলাম কারাগারে রয়েছেন।

অপরাধ সংঘটনের স্থান চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানার বিভিন্ন এলাকায় বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

আসামির বিরুদ্ধে আনীত প্রথম অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২ জুন রাজাকার শওকাতুল ইসলামসহ অনুমান ১০/১৫ জন সশস্ত্র রাজাকার এবং অনুমান ১০০/১৫০ জন পাকিস্তানি আর্মি চট্টগ্রাম জেলা সার্কিট হাউজের আর্মি ক্যাম্প থেকে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানাধীন নানুপুর সৈয়দপাড়া গ্রাম এবং মাইজভাণ্ডার আমতলী গ্রামের ওয়াইজ কাজী বাড়ি, সিকদার বাড়ি ও আমতলী বাজার এলাকায় সশস্ত্র হামলা চালায়। তারা নানুপুর সৈয়দপাড়ার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, শিল্পপতি ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মির্জা আবু আহম্মদের কোম্পানির ম্যানেজার হিরণ্য কুমার দত্ত বাবু ও নানুপর ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নূর আহমদ, মির্জা আবু আহম্মদের ছেলে মির্জা মোহাম্মদ আকবর ও বোন সৈয়দা গুল চম্পা বেগম এবং তাদের প্রতিবেশী মুক্তিযোদ্ধা ইপিআর সুবেদারের স্ত্রী তাহেরা বেগমসহ দুই শতাধিক লোককে আটক ও নির্যাতন করে।

এরপর হিরণ্য কুমার দত্ত বাবু ও চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নুর আহম্মেদকে নানুপুর বিনাজুড়ি খালের পাড়ে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে।

এছাড়াও রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানি আর্মি আটক অন্যদের ছেড়ে দিয়ে মির্জা মোহাম্মদ আকবর, সৈয়দা গুল চম্পা বেগম ও তাহেরা বেগমকে অপহরণ করে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নিয়ে যায়। পরদিন সকালে তাদেরকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে নিয়ে আটক রেখে অমানষিক নির্যাতন করে। মির্জা মোহাম্মদ আকবরকে তারা ১৫ দিন পরে ছেড়ে দেয় এবং আটককৃত ভিকটিম সৈয়দা গুল চম্পা বেগম ও তাহেরা বেগমকে ২৬ দিন পর্যন্ত চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আটক রেখে নির্যাতন ও ধর্ষণ করে।

দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা থেকে অনুমান ১টা পর্যন্ত রাজাকার শওকাতুল ইসলামসহ ১৫/২০ জন রাজাকার নিয়ে ৪০/৫০ জন পাকিস্তানি আর্মি ফটিকছড়ির নানুপর ইউনিয়নের মাইজভাণ্ডার আমতলী গ্রাম ও আমতলী বাজার এবং রোসাংগিরী ইউনিয়নের পূর্ব আজিমনগর গ্রামের শীল পাড়াসহ আশপাশ এলাকায় সশস্ত্র হামলা চালায়। তারা ছাত্রলীগ কর্মী সৈয়দ জসিম উদ্দিন, আব্দুস সালাম, মোহাম্মদ ইসহাক ও হাজী নূর আহম্মেদকে অস্ত্রের মুখে আটক ও অপহরণ করে আজিমনগর শীলপাড়ায় নিয়ে।

এরপর শীলপাড়ার দেবেন্দ্র কুমার শীল, হেমেন্দ্র কুমার শীল, মোহন্ত কুমার শীলকে অস্ত্রের মুখে আটক ও নির্যাতন এবং তাদের বাড়ির মালামাল লুট করে। রাজাকার ও পাকিস্তানি আর্মি ইতোপূর্বে আকটকৃত সৈয়দ জসিম উদ্দিন, আব্দুস সালাম, ইসহাক ও হাজী নূর আহম্মদকে জনৈক রায় মোহন শীল ওরফে বোঁচা ডাক্তারের বাড়ির উঠোনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে। এতে তিনজন ঘটনাস্থলেই শহীদ হন। গুলিবিদ্ধ হাজী নূর আহম্মদ ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান।

এছাড়াও আজিমনগর শীলপাড়ায় দেবেন্দ্র কুমার শীলকে এবং আবাদী জমিতে হেমেন্দ্র কুমার শীল ও মোহন্ত কুমার শীলকে গুলি করে হত্যা করে।

তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২ ডিসেম্বর ভোর ৪টা থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত রাজাকার শওকতুল ইসলামসহ ১০/১২ জন রাজাকারকে নিয়ে ৩০/৪০ জন পাকিস্তানি আর্মি ফটিকছড়ির নানুপর ইউনিয়নের মাইজভাণ্ডার সূত্রধর পাড়া ও আশপাশ এলাকায় অতর্কিতে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে অনুমান ৩০/৩৫টি বাড়ির মালামাল লুট এবং অগ্নিসংযোগ করে।

এ বিভাগের আরো খবর