ঢাকার সাভারে দশম শ্রেণির ছাত্রী নীলা রায়কে ছুরিকাঘাতে হত্যার মামলায় প্রধান আসামি মিজানুর রহমান চৌধুরীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলার বাদী নারায়ণ রায়ের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
সোমবার ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফেরদৌস ওয়াহিদের আদালতে তার সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। এরপর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করে আদালত।
এ মামলার আসামিরা হলেন মিজানুর রহমান চৌধুরী ও তার বন্ধু সাকিব হোসেন এবং সেলিম পাহলান।
২০২১ সালের ২৮ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নির্মল কুমার দাস আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এরপর মামলাটি বদলি হয়ে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসে। পরে এই তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়।
তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার দিকে হাসপাতাল থেকে ফেরার পথে নীলা ও তার ভাই অলক রায়ের পথরোধ করেন মিজানুর। নীলাকে ছিনিয়ে পরিত্যক্ত একটি বাড়িতে নিয়ে তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন তিনি।
নীলা এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে মিজানুর তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেন। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, নীলা মাটিতে পড়ে গোঙাচ্ছেন। আর মিজানুর ছুরি হাতে দাঁড়িয়ে। তখন লোকজন মিজানুরকে আটকানোর চেষ্টা করলে তিনি ছুরির ভয় দেখিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান।
সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক নীলাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় মিজানুর ও তার বাবা-মাকে আসামি করে সাভার থানায় মামলা করেন নীলার বাবা নারায়ণ রায়।
ওই বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর মানিকগঞ্জের আরিচাঘাট এলাকা থেকে মিজানুরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মানিকগঞ্জের চারীগ্রাম এলাকা থেকে একই দিন তার বাবা ও মাকেও ধরে পুলিশ।
ওইদিন সাকিব ও জয়কে সাভারের রাজফুলবাড়িয়া এলাকার একটি ইটভাটার পাশ থেকে গ্রেপ্তার করে করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জয়কে ছেড়ে দেয়া হয়।
২০২০ সালের ১ অক্টোবর ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক রাজিব আহসানের কাছে জবানবন্দি দেন মিজানুর। এরপর তার বাবা আব্দুর রহমান, মা নাজমুন্নাহার সিদ্দীকা এবং অন্য দুই আসামি সাকিব ও সেলিম উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান।
মানিকগঞ্জ জেলার বালিরটেক এলাকার নারায়ণ রায়ের মেয়ে নীলা সাভার পৌর এলাকার ব্যাংক কলোনির অ্যাসেড স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়ত। পৌর এলাকার কাজী মুকাম পাড়ার এক বাড়িতে তার পরিবার ভাড়া থাকত।