সীমানা জটিলতা কাটিয়ে ১১ বছর পর ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার আসলামপুর ও ওমরপুর ইউনিয়নে উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে ইউপি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ।
সোমবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোটকেন্দ্রগুলোতে সকাল থেকে উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ দেখা গেছে।
শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রতিটি কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকবেন পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও কোস্ট গার্ড সদস্যরা। এ ছাড়াও মাঠে রয়েছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স।
দুটি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ৮ জন, সদস্য পদে ৭৯ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ২৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চেয়ারম্যান পদে ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মূল লড়াই হবে আসলামপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতীকে নুরে আলম মাস্টার এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী আবুল কাশেম মিলিটারি (আনারস), ওমরপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম রিজন (নৌকা) ও আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতীক এ কে এম সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে।
দুই ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ২৬ হাজার ৭০৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৪ হাজার ২৯৮ জন। নারী ভোটার ১২ হাজার ৪০৮ জন। দুটি ইউপির ১৮টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১৮টিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে উপজেলা নির্বাচন অফিস।
ভোট দিতে আশা ষাটোর্ধ্ব আশরাফ আলী, হোসেন পাটোয়ারী ও ফারুক ভূইয়া জানান, ১১ বছর পর ভোট দিতে এসেছেন, কিন্তু ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণে বিলম্ব হচ্ছে। ধীরগতিতে ভোটগ্রহণের কারণে সকাল থেকে তারা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।
তবে নতুন ভোটার রুবেল হোসেন, রামিম ও হাজেরা জানান, তারা প্রথমবারের মতো ভোট দিতে এসেছেন এবং ডিজিটাল পদ্ধতি ইভিএমে ভোট দিতে পেরে আনন্দিত।
এদিকে আসলামপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরে আলম ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কাশেম মিলিটারি উভয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে ভোটারদের বাধা ও হুমকি দেয়ার অভিযোগ করেছেন।
জেলা নির্বাচন অফিসার শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ইভিএম ভোটারদের কাছে নতুন হওয়ায় ভোটদানে তাদের একটু বিলম্ব হচ্ছে। ভোটারদের নির্বাচন অফিস ও প্রার্থীরা ইভিএম বিষয়ে সচেতন করেছেন। দুপুর ১২টার দিকে দীর্ঘ লাইন কমে যাবে।’
আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘ভোটাররা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিচ্ছে, তবে ইভিএম ভোটারদের কাছে নতুন হওয়ায় ভোটদানে তাদের একটু সমস্যা হচ্ছে। ভোটারদের আমরা ইভিএম বিষয়ে সচেতন করছি। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নির্বাচনি মাঠে রয়েছেন পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও কোস্ট গার্ড সদস্যরা। এ ছাড়াও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স রয়েছেন।
২০১১ সালে ওমরপুরের তখনকার চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে নির্বাচন বন্ধ হয়ে যায়। ওই মামলা নিষ্পত্তির পর বৃহত্তর ওমরপুর ইউনিয়ন ভেঙে ওমরপুর ও আসলামপুর ইউনিয়ন করা হয়। এতে করে এক দশকের বেশি সময় পর এই দুই ইউনিয়নে আয়োজন করা হয় নির্বাচন।