একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকির বক্তব্যে সরকারের পক্ষ থেকে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এখন বলেছেন, তারা উদ্বিগ্ন নন। তার দৃষ্টিতে জাপানি দূত একজন ভালো মানুষ। তাকে কিছু দুষ্টু লোক ভুল বুঝিয়েছে।
রোববার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ঘুম’ বিষয়ক চিকিৎসকদের এক ওয়ার্কশপ শেষে সাংবাদিকদের মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ওকে (ইতো নাওকি) কোনো দুষ্টু লোক ভুল তথ্য দিয়েছে। তিনি সাধাসিধে মানুষ, বাংলাদেশের ভালো বন্ধু। তাকে বলা হয়েছে পুলিশ এসে ভোট দিয়েছে। সেই কথা সে বলে ফেলেছে। তিনি ভালো মানুষ। এটা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন নই।’
একাদশ জাতীয় নির্বাচনে রাতে ভোট নিয়ে ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকির সাম্প্রতিক বক্তব্যে নিয়ে ঢাকা উদ্বিগ্ন নয় বলেও জানান মন্ত্রী।
১৪ নভেম্বর রাজধানীতে একটি ‘মিট দ্য অ্যাম্বাসেডর’ অনুষ্ঠানে জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে বৈশ্বিক মতামতের একটা গুরুত্ব আছে। জাপান ২০১৮ সালের নির্বাচনের পরপর উদ্বেগ জানিয়েছিল। আমরা নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভরে রাখার কথা শুনেছি, যা পৃথিবীর আর কোথাও শুনিনি। আমি আশা করব, এবার তেমন সুযোগ থাকবে না বা এমন ঘটনা ঘটবে না।’
দুই দিন পর মেহেরপুরে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। সেদিন সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘জাপান কেন, কোনো রাষ্ট্রদূতই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে নাক গলাবেন, এটা আমরা কখনোই মেনে নিতে পারি না।
‘তাদের আবারও সতর্ক করা হবে। বাংলাদেশ স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র। একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা এ দেশকে স্বাধীন করেছি। ফলে কারও কাছে পদানত হওয়া বা দেশের আত্মমর্যাদা রক্ষায় আমরা কাউকে ছাড় দেব না।’
- আরও পড়ুন: রাতের ভোট: জাপানি দূতের বক্তব্যে নাখোশ সরকার
- আরও পড়ুন: জাপানি রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব
মন্ত্রী এই বক্তব্য রাখার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইতোকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তলব করেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। সেখানেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ১৪ নভেম্বর এক অনুষ্ঠানে দেয়া রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।
‘রিজার্ভ নিয়ে গণমাধ্যমের বক্তব্যে তাজ্জব হই’
বাংলাদেশের রিজার্ভ নিয়ে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের গণমাধ্যমের ভূমিকার সমালোচনাও করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আপনারা (গণমাধ্যম) মাঝেমধ্যে উল্টাপাল্টা বলেন, আমাদের রিজার্ভ নাই, আমি তাজ্জব হই।
‘আপনারা মাঝেমধ্যে উল্টাপাল্টা বলেন, আমাদের রিজার্ভ নাই। আমি তাজ্জব হই। আগে আমাদের তিন থেকে চার বিলিয়ন রিজার্ভ হলে আপনারা খুশিতে থাকতেন। আর এখন আমার ৩৪ থেকে ৩৭ বিলিয়ন রিজার্ভ, তারপরও আপনারা বলেন। এগুলো পাগলের প্রলাপ না হয় তো কী!
মোমেন বলেন, ‘আপনি (গণমাধ্যম) বলেন, ব্যাংকে টাকা নাই। আমার ট্রিলিয়ন টাকা ব্যাংকে আছে। আপনারা বিভিন্ন রকমের প্রোপাগান্ডা করেন ব্যাংকে টাকা নাই। বাড়িতে নিয়ে রাখেন তখন চুরি করতে পারবে।’
বাংলাদেশ জাপানের কাছে বাজেট সহায়তা হিসেবে ঋণ চেয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এসব আমি জানি না। এগুলো আপনারাই জানেন। আমাদের কোনো প্রয়োজন নাই। ইউ আর ভেরি সলিড ইকোনমি।’