ভবিষ্যতে বাংলাদেশ যেন অর্থনৈতিক সংকটের মুখে না পড়ে, সে জন্য সংশ্লিষ্টদের আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রোববার সকালে অনুষ্ঠিত সচিব সভায় দেয়া বক্তব্যে এই নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
করোনাভাইরাস মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে চলমান বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন সরকারপ্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা এখনই যে বিপদে পড়েছি তা কিন্তু না। কিন্তু আমার কথাটা হচ্ছে, আমার আগাম ব্যবস্থাটা নিতে হবে, যেন আমি সামনে, ভবিষ্যতে কোনো বিপদে দেশ না পড়ে বা দেশের মানুষ না পড়ে। আমাদের সেই সতর্কতাটা একান্তভাবে দরকার এবং সেই সতর্কবার্তাটাই কিন্তু আমরা দিচ্ছি।’
সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে, আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে এবং সেইভাবে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে হবে।’
উন্নত দেশের রিজার্ভ আর অর্থনৈতিক মন্দার প্রসঙ্গটিও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। বলেন, ‘যুদ্ধের কারণে দুয়েকটা দেশ হয়তো খুব লাভবান। কিন্তু বেশির ভাগ দেশ একেবারে…যারা উন্নত দেশ তারাও কিন্তু হিমশিম খাচ্ছে। সেদিকে লক্ষ রেখেই আমাদের এখন ব্যয় সীমিত করা দরকার, সাশ্রয়ী হওয়া দরকার।’
চার থেকে পাঁচ মাসের খাদ্য আমদানি করার মতো রিজার্ভ বাংলাদেশের আছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের রিজার্ভ যেটা হচ্ছে আমাদের তিন মাসের খাদ্য কেনার মতো রিজার্ভ থাকলেই যথেষ্ট। সেখানে আমাদের পাঁচ-ছয় মাসের হিসেব আছে। তারপরও আমাদের এখন যা অবস্থা, তাতে আমাদের একটু সাশ্রয়ী হতে হবে, আরেকটু সচেতন হতে হবে।’
সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের নিজেদেরও সাশ্রয়ী হওয়া এই কারণে দরকার, আবার আমি বলছি যে আমরা ভবিষ্যতে যাতে সমস্যায় না পড়ি। কাজেই এখন থেকে আমাদের সেই ব্যবস্থা নেয়া একান্তভাবে দরকার।’
এ সময় পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা।
গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তার নিরিখে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প গ্রহণে আবার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমাদের সমস্ত পরিকল্পনা বা প্রকল্প বাছতে হবে। বেছে নিয়ে এবং কোনগুলো দ্রুত শেষ করা যায়, আমরা সেগুলো আগে শেষ করে ফেলে নতুনটা যাতে ধরতে পারি সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।’
মাদক-জঙ্গিবাদের বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাদক, সন্ত্রাস এগুলোর হাত থেকে রক্ষা করা…আমাদের একটা ঘটনা ঘটেছিল, হলি আর্টিজানে। আমরা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেটা নিয়ন্ত্রণ করি। তারপর থেকে আর বাংলাদেশে এই রকম কোনো (ঘটনা) দেখা দেয়নি। কিন্তু তারপরও বাংলাদেশের ওপর অনেকেরই নানা রকম প্রভাব আছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদেরকেও এই ব্যাপারে সব সময় সজাগ থাকতে হবে। মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে, যেন এই মাদক আর জঙ্গিবাদ থেকে আমাদের যুব সমাজ দূরে থাকে। সেইদিকে আমাদের বিশেষভাবে দৃষ্টি দেয়া একান্তভাবে দরকার।’